১১:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহাভারতের শকুনি চরিত্রের মতোই বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের আচরণ!!

  • প্রকাশিত ০৯:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • ১৩১ বার দেখা হয়েছে

মহাভারতের শকুনি চরিত্রের মতোই বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের আচরণ!! – এই সহজ পঙতিটি বুঝতে কারো কাছে কঠিন মনে হলেও বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের অবস্থান ও রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত সম্পর্কিত ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে বিষয়টি আর কঠিন থাকে না।
এই বিষয়ে বিশ্লেষণের পূর্বে প্রথমেই মহাভারতের শকুনির চরিত্র তথা গান্ধার রাজপুত্র সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক।
তৎকালীন গান্ধারের রাজা সুবলের একমাত্র পুত্র শকুনি কূটনীতিশ্রেষ্ঠ, রাজনীতিজ্ঞ, কুটকৌশলীজ্ঞ’সহ বহুগুণ সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে গোটা সমাজ ব্যবস্থায় সুপরিচিত ছিলেন। তবুও মহাভারতের এই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অপরিমিত সৈন্যের আত্মবলিদান, অনাচার, বিভীষিকাময় ঘটনার নেপথ্যের নায়ক হিসেবে শকুনিকেই ধরা হয়।
বলা হয়ে থাকে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মতো এতো বিশাল যুদ্ধই হতো না যদি শকুনীর মতো চরিত্র না থাকতো!
তৎকালীন মহাক্ষমতাধর রাজ্য হিসেবে সুপরিচিত হস্তিনাপুর তথা কুরুরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অভিভাবক ও মহাবীর সেনাপতি ভীষ্ম কর্তৃক প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র ও গান্ধার রাজকন্যা গান্ধারী তথা শকুনির একমাত্র বোনের বিবাহ সম্পন্ন হয়। “জন্মান্ধ ভগ্নিপতি” এই বিষয়টি শকুনি কোনভাবেই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। শকুনি এই বিষয়ে ভীষ্মকেই একমাত্র দায়ী করেন। ফলে ভীষ্মের প্রতি শকুনির রাগ-দ্বেষ ও ক্রমান্বয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ মনোভাব শুরু হয়, পরবর্তীতে এই বিন্দু বিন্দু জল থেকেই মহাসাগরের ন্যায় মহাক্রোধের জন্ম নেয়, যা মহাক্ষমতাধর কুরুরাষ্ট্রকে গ্রাস করতে শকুনির সংকল্পে পরিণত হয়। শকুনির এই হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার পটভূমিকে কেন্দ্র করেই মূলত মহাভারতের বিশাল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের অবতারণা। যেখানে ইচ্ছামৃত্যু বরপ্রাপ্ত সমরাস্ত্র শ্রেষ্ঠ ভীষ্ম, গুরু দ্রোণাচার্য, অগণিত দ্বিগবিজয়ী যোদ্ধা মহাবীর কর্ণ’সহ অসংখ্য রাজা, রথী, মহারথী যোদ্ধাদের আত্মবলিদান হয়েছিল। অর্থাৎ শকুনির রাগ-দ্বেষ ও হীনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রয়াস গোটা সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিফলনই মূলত এই যুদ্ধের মৌলিক পটভূমি এবং সীমারেখা।
আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায়, শকুনি তাঁর হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতেই মহাভারত চরিত্রের সকলকে দিয়ে এক ধরনের কৌশলী খেলা বা পাশা খেলার গুটিচাল দিয়েছে মাত্র, যদিও শকুনি এই পাশা নামক কৌশলী খেলায় অত্যন্ত দক্ষ কিন্তু পরিশেষে সে পরাজিত বীর!
শকুনির হীনস্বার্থ ও শঠতার কারণে তৎকালীন গোটা আর্যাবর্ত তথা সমসাময়িক সকল রাজ্য, রাজা, যোদ্ধা’সহ অগণিত নাগরিকের জীবন ও পরিবারকে সংকটাপন্ন করে বিষিয়ে তুলেছিলো এবং সকলকেই তাঁর ব্যক্তিস্বার্থের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পাশার গুটিচালের ন্যায় গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে, যার পরিনাম কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ!!
ফলশ্রুতিতে গোটা সমাজ ব্যবস্থার সকলের জীবন-পরিবার অস্তমিত, ধ্বংস এবং আত্মবলিদানপ্রাপ্ত। বস্তুত শকুনির পক্ষ সমর্থিত নিজ পরিবার, নিজ আত্মীয়-পরিজন’সহ কোথাও কারোরই কোন লাভ বা উপকার হয়নি, বরঞ্চ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সকলকেই শকুনির কুকৌশলের কারণে শকুন পাখির মতো মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। এটাই মহাভারতের শকুনি চরিত্রের উপজীব্য এক নাট্যাংশ।
ঠিক তেমনি ভারত গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দুদের প্রতি শকুনির ন্যায় আচরণ করে যাচ্ছে!!
ভৌগলিকভাবে ভারত বাংলাদেশের তিনদিক বেষ্টিত সবচেয়ে নিকটবর্তী রাষ্ট্র, হিন্দু সম্প্রদায়ের দিক থেকে বলা যায়, পৃথিবীর হিন্দু আদর্শের সর্বোচ্চ নাগরিকের বসবাস এই ভারতে, এছাড়াও ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবোধের প্রায় শতভাগ তীর্থভূমি ও পবিত্র স্থানসমূহ অবস্থিত, যেখানে হিন্দু ধর্মীয় দেবালয়, উপাসনালয়, শক্তিপীঠ, ধর্মীয় স্থান, ধর্মীয় গ্রন্থ উদগারণ স্থান, ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ তথা সাধুসন্ত, মহাপুরুষ, মহামানবদের চারণভূমি বা অবতীর্ণভূমি রয়েছে।
তাই পৃথিবীর যেখানেই হিন্দু সম্প্রদায় বসবাস করুক তারা ভারতকে ধর্মীয় দিক থেকে পবিত্রতম স্থান বা তীর্থভূমি হিসেবেই হৃদয়ে লালন করে থাকেন। সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশী হিন্দু সম্প্রদায়ও তার ব্যতিক্রম নয়, কিন্তু গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দুদের সাথে ভারতের শকুনিসুলভ আচরণ হেতু বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় আজ ক্রমহ্রাসমান। বাংলাদেশের উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১৩.৫% কিন্তু বর্তমানে তা ৭.৯৫%। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জ্যামিতিক হারে জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসের বহুমাত্রিক কারণের মধ্য ভারতীয় রাজনৈতিক প্রহসন ও শকুনিসুলভ আচরণ অন্যতম কারণ যা অস্বীকার করার মতো নয়!!
মূলত ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক স্বার্থপরতা ও অতিমাত্রার ব্যবসায়িক মনোভাবই মূল কারণ!!
ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী কোন সময়েই বাংলাদেশে হিন্দুদের স্বার্থে স্বীকৃত কোন অবদান রাখেনি, তবে ভারতীয় ক্ষমতাসীন বা বিরোধী রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক ইস্যু তৈরিতে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আত্মবলিদান বা বলির পাঁঠা হতে হয় বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের। যেমনটি দিতে হয়েছিল ১৯৯১ সালে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’র রাজনৈতিক নীতিতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশী সাধারণ হিন্দুরা নিজেদের আত্মবলিদান দিয়েছিল, অসংখ্য ঘরবাড়ি, মঠ-মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর’সহ অগণিত নারী ধর্ষিত’সহ নানান অত্যাচার নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল, যা সত্যিকার অর্থেই অবর্ণনীয়। কিন্তু এতো ঘটনার পরেও বিজেপি কিংবা ভারত সরকার কেউই বাংলাদেশী অত্যাচারিত, নিপীড়িত হিন্দুদের স্বার্থে কোন কথা বলেনি কিংবা কোন উপকারে আসেনি। তবে পরবর্তীতে ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ বাংলাদেশী হিন্দুদের উপর অসহনীয় নানা অত্যাচার নিপীড়ন ঘটেছে কিন্তু তাতেও ভারত সরকার হিন্দুদের বিষয়ে কোনো শব্দ ব্যয় করেনি।
ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসলো, কেউ মন্ত্রী হলেন, কেউ উচ্চপদস্থ নেতা হলেন, অনেকেই অনেক কিছু অর্জন করলেন, আর বাংলাদেশী সাধারণ হিন্দুরা হলো গৃহহারা, ধর্ষিত, নিঃস্ব আবার কেউ হলো দেশছাড়া!! মজার বিষয় হচ্ছে জীবন বাঁচাতে যারা দেশছাড়া হলো তাদেরকে আশ্রয় দিতেও ভারতের কোন্ঠবোধ!! পালিয়ে যাওয়া হিন্দুরা জীবন রক্ষার্থে গোপনীয়ভাবে স্থানীয় ভারতীয় নেতাদের উচ্চহারে অর্থের বিনিময়ে ভারতে অবস্থান করতে হয়েছিলো, যারা পরবর্তীতে রিফিউজি হিসেবে খ্যাত হয়।।
বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে একটা কথা সুপ্রচলিত, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ”! এই আধিপত্যবাদ শব্দটির উপকারিতা কার জন্য?? আরো বলা হয়ে থাকে ভারত বাংলাদেশের “অকৃত্রিম বন্ধু”?? এই অকৃত্রিম বন্ধুত্বতা কিসের জন্য কিংবা কার সাথে কার??
তবে এই আধিপত্যবাদ ও অকৃত্রিম বন্ধু শব্দকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আরও বেশি অত্যাচারিত ও নিপীড়িত হয়ে আসছে।
কেননা বিগত সময়ের ভারতীয় রাজনীতি ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে বলা যায়, ভারত সরকার সবসময়ই তাঁর দেশের স্বার্থে তথা ভারতীয় রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল চুক্তিমূল্যে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক দলের নিকট হতে অধিক স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবে, সেই রাজনৈতিক দলকেই ভারত প্রাধান্য দিবে, এটাই ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির নীতি! এই প্রাধান্যের দিক থেকে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ অনেকটাই এগিয়ে, তাই ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ একে অপরের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে ব্যস্ত, কিন্তু এই দুই দেশের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের মধ্যবর্তী অবস্থানে পড়ে অত্যাচার আর নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়!!
যেমন আওয়ামী লীগ মনে করে যে ভারত আমার অকৃত্রিম বন্ধু এবং ভারত হিন্দু প্রতিনিধিত্বশীল দেশ, সেই হিসেবে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আমার ভোট ব্যাংক, আবার বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মনে করেন বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ঘরের মুরগি! যেমনে খুশি তেমনি লালন-পালন করা যাবে এবং প্রয়োজনে জবাইও করা যাবে!!
আবার অন্যদিকে বিরোধী ক্ষমতাশীল দলগুলো মনে করে এই হিন্দুরা আমাদেরকে ভোট দেয় না, তাই তাদের প্রতি কোন সহানুভূতি দেখানোর দরকার নেই, তাই যখন কোন ইস্যু তৈরির দরকার হয়, তখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হানা হয়!!
তারই বাস্তবিক রূপ গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসন আমলে রামু, নাসিরনগর, কুমিল্লা ট্রাজেডি’সহ সারাদেশে রক্তাক্ত শারদ, মঠ-মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, অপরিমিত ধর্ষণ, আওয়ামীলীগ নেতাদের হুংকারে হিন্দুদের দেশ থেকে বাধ্য হওয়া প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। অথচ এ সকল ঘটনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার সংঘটিত একটি ঘটনারও বিচার নিশ্চিত করেননি এবং অকৃত্রিম বন্ধু খ্যাত ভারত সরকারও এই সকল হিন্দু নির্যাতনে কোন শব্দ ব্যয় করেনি বরং প্রতিনিয়ত ভারত তাঁর স্বার্থে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ করে গিয়েছে!
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ০৫ই আগস্টের পর শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে ভারতে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আবারো নতুন করে অত্যাচারিত নিপীড়িত হয়ে আসছে। অর্থাৎ গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশী হিন্দুদের উপর অত্যাচারী নিপীড়নকারীরা আজ ভারতে জামাই আদরে আশ্রিত হচ্ছে, আর নিপীড়িত অত্যাচারিত বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত তারই মাশুল গুনছে গৃহহারা, পরিবারহারা, নিঃস্ব আর ধর্ষিতা হয়ে!!
ভারতীয়রা তাদের রাজনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থ সংরক্ষণ নীতি ব্যতীত অন্যকিছু নিয়ে ভাবেনা তথা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র কোন সহানুভূতি নেই, কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই বিষয়টি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিন্দুমাত্রও বুঝে না। গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায় বেকুবের মতো ভারত সরকারকে হিন্দুদের বিপদের বন্ধু, ভাই, আত্মীয় পরিজন মনে করে আসছে, কিন্তু এই সমস্ত ভাবনা সর্বেব কল্পনাপ্রসুত!! বরং ভারতীয় রাজনৈতিক কার্যপ্রণালী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতীয় রাজনৈতিক পাশা খেলার গুটিচালে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কখনোই হিন্দু জাতীয়তাবোধ বা আদর্শের প্রেক্ষিতে একে অপরের বন্ধু, ভাই বা আত্মীয় পরিজন হয়ে ওঠেনি আর আগামীতেও উঠবে না!! বরং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে যত বেশি অত্যাচারে নিপীড়ন ঘটবে, সেই অত্যাচার-নিপীড়ন গুলোকে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ করবে।
তাই বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের উচিত নিজেদের ধর্ম ও রাজনৈতিক দর্শনকে পৃথক করে ভারতের প্রতি সম্পূর্ণ অনির্ভরশীল থেকে অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের অস্তিত্বকে রক্ষা করা।

দেবাশিস সাহা
অধ্যক্ষ
আর্য সংস্কৃত কলেজ, ঢাকা

Tag :
জনপ্রিয়

নেতাকে বহিষ্কার করায় বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

মহাভারতের শকুনি চরিত্রের মতোই বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের আচরণ!!

প্রকাশিত ০৯:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

মহাভারতের শকুনি চরিত্রের মতোই বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের আচরণ!! – এই সহজ পঙতিটি বুঝতে কারো কাছে কঠিন মনে হলেও বাংলাদেশী হিন্দুদের প্রতি ভারতের অবস্থান ও রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত সম্পর্কিত ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে বিষয়টি আর কঠিন থাকে না।
এই বিষয়ে বিশ্লেষণের পূর্বে প্রথমেই মহাভারতের শকুনির চরিত্র তথা গান্ধার রাজপুত্র সম্পর্কে আলোকপাত করা যাক।
তৎকালীন গান্ধারের রাজা সুবলের একমাত্র পুত্র শকুনি কূটনীতিশ্রেষ্ঠ, রাজনীতিজ্ঞ, কুটকৌশলীজ্ঞ’সহ বহুগুণ সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে গোটা সমাজ ব্যবস্থায় সুপরিচিত ছিলেন। তবুও মহাভারতের এই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অপরিমিত সৈন্যের আত্মবলিদান, অনাচার, বিভীষিকাময় ঘটনার নেপথ্যের নায়ক হিসেবে শকুনিকেই ধরা হয়।
বলা হয়ে থাকে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মতো এতো বিশাল যুদ্ধই হতো না যদি শকুনীর মতো চরিত্র না থাকতো!
তৎকালীন মহাক্ষমতাধর রাজ্য হিসেবে সুপরিচিত হস্তিনাপুর তথা কুরুরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অভিভাবক ও মহাবীর সেনাপতি ভীষ্ম কর্তৃক প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে জন্মান্ধ ধৃতরাষ্ট্র ও গান্ধার রাজকন্যা গান্ধারী তথা শকুনির একমাত্র বোনের বিবাহ সম্পন্ন হয়। “জন্মান্ধ ভগ্নিপতি” এই বিষয়টি শকুনি কোনভাবেই মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। শকুনি এই বিষয়ে ভীষ্মকেই একমাত্র দায়ী করেন। ফলে ভীষ্মের প্রতি শকুনির রাগ-দ্বেষ ও ক্রমান্বয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ মনোভাব শুরু হয়, পরবর্তীতে এই বিন্দু বিন্দু জল থেকেই মহাসাগরের ন্যায় মহাক্রোধের জন্ম নেয়, যা মহাক্ষমতাধর কুরুরাষ্ট্রকে গ্রাস করতে শকুনির সংকল্পে পরিণত হয়। শকুনির এই হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার পটভূমিকে কেন্দ্র করেই মূলত মহাভারতের বিশাল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের অবতারণা। যেখানে ইচ্ছামৃত্যু বরপ্রাপ্ত সমরাস্ত্র শ্রেষ্ঠ ভীষ্ম, গুরু দ্রোণাচার্য, অগণিত দ্বিগবিজয়ী যোদ্ধা মহাবীর কর্ণ’সহ অসংখ্য রাজা, রথী, মহারথী যোদ্ধাদের আত্মবলিদান হয়েছিল। অর্থাৎ শকুনির রাগ-দ্বেষ ও হীনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রয়াস গোটা সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিফলনই মূলত এই যুদ্ধের মৌলিক পটভূমি এবং সীমারেখা।
আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায়, শকুনি তাঁর হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতেই মহাভারত চরিত্রের সকলকে দিয়ে এক ধরনের কৌশলী খেলা বা পাশা খেলার গুটিচাল দিয়েছে মাত্র, যদিও শকুনি এই পাশা নামক কৌশলী খেলায় অত্যন্ত দক্ষ কিন্তু পরিশেষে সে পরাজিত বীর!
শকুনির হীনস্বার্থ ও শঠতার কারণে তৎকালীন গোটা আর্যাবর্ত তথা সমসাময়িক সকল রাজ্য, রাজা, যোদ্ধা’সহ অগণিত নাগরিকের জীবন ও পরিবারকে সংকটাপন্ন করে বিষিয়ে তুলেছিলো এবং সকলকেই তাঁর ব্যক্তিস্বার্থের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পাশার গুটিচালের ন্যায় গুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে, যার পরিনাম কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ!!
ফলশ্রুতিতে গোটা সমাজ ব্যবস্থার সকলের জীবন-পরিবার অস্তমিত, ধ্বংস এবং আত্মবলিদানপ্রাপ্ত। বস্তুত শকুনির পক্ষ সমর্থিত নিজ পরিবার, নিজ আত্মীয়-পরিজন’সহ কোথাও কারোরই কোন লাভ বা উপকার হয়নি, বরঞ্চ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সকলকেই শকুনির কুকৌশলের কারণে শকুন পাখির মতো মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। এটাই মহাভারতের শকুনি চরিত্রের উপজীব্য এক নাট্যাংশ।
ঠিক তেমনি ভারত গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দুদের প্রতি শকুনির ন্যায় আচরণ করে যাচ্ছে!!
ভৌগলিকভাবে ভারত বাংলাদেশের তিনদিক বেষ্টিত সবচেয়ে নিকটবর্তী রাষ্ট্র, হিন্দু সম্প্রদায়ের দিক থেকে বলা যায়, পৃথিবীর হিন্দু আদর্শের সর্বোচ্চ নাগরিকের বসবাস এই ভারতে, এছাড়াও ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবোধের প্রায় শতভাগ তীর্থভূমি ও পবিত্র স্থানসমূহ অবস্থিত, যেখানে হিন্দু ধর্মীয় দেবালয়, উপাসনালয়, শক্তিপীঠ, ধর্মীয় স্থান, ধর্মীয় গ্রন্থ উদগারণ স্থান, ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ তথা সাধুসন্ত, মহাপুরুষ, মহামানবদের চারণভূমি বা অবতীর্ণভূমি রয়েছে।
তাই পৃথিবীর যেখানেই হিন্দু সম্প্রদায় বসবাস করুক তারা ভারতকে ধর্মীয় দিক থেকে পবিত্রতম স্থান বা তীর্থভূমি হিসেবেই হৃদয়ে লালন করে থাকেন। সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশী হিন্দু সম্প্রদায়ও তার ব্যতিক্রম নয়, কিন্তু গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দুদের সাথে ভারতের শকুনিসুলভ আচরণ হেতু বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় আজ ক্রমহ্রাসমান। বাংলাদেশের উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১৩.৫% কিন্তু বর্তমানে তা ৭.৯৫%। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জ্যামিতিক হারে জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসের বহুমাত্রিক কারণের মধ্য ভারতীয় রাজনৈতিক প্রহসন ও শকুনিসুলভ আচরণ অন্যতম কারণ যা অস্বীকার করার মতো নয়!!
মূলত ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক স্বার্থপরতা ও অতিমাত্রার ব্যবসায়িক মনোভাবই মূল কারণ!!
ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী কোন সময়েই বাংলাদেশে হিন্দুদের স্বার্থে স্বীকৃত কোন অবদান রাখেনি, তবে ভারতীয় ক্ষমতাসীন বা বিরোধী রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক ইস্যু তৈরিতে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আত্মবলিদান বা বলির পাঁঠা হতে হয় বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের। যেমনটি দিতে হয়েছিল ১৯৯১ সালে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’র রাজনৈতিক নীতিতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশী সাধারণ হিন্দুরা নিজেদের আত্মবলিদান দিয়েছিল, অসংখ্য ঘরবাড়ি, মঠ-মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর’সহ অগণিত নারী ধর্ষিত’সহ নানান অত্যাচার নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল, যা সত্যিকার অর্থেই অবর্ণনীয়। কিন্তু এতো ঘটনার পরেও বিজেপি কিংবা ভারত সরকার কেউই বাংলাদেশী অত্যাচারিত, নিপীড়িত হিন্দুদের স্বার্থে কোন কথা বলেনি কিংবা কোন উপকারে আসেনি। তবে পরবর্তীতে ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ বাংলাদেশী হিন্দুদের উপর অসহনীয় নানা অত্যাচার নিপীড়ন ঘটেছে কিন্তু তাতেও ভারত সরকার হিন্দুদের বিষয়ে কোনো শব্দ ব্যয় করেনি।
ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসলো, কেউ মন্ত্রী হলেন, কেউ উচ্চপদস্থ নেতা হলেন, অনেকেই অনেক কিছু অর্জন করলেন, আর বাংলাদেশী সাধারণ হিন্দুরা হলো গৃহহারা, ধর্ষিত, নিঃস্ব আবার কেউ হলো দেশছাড়া!! মজার বিষয় হচ্ছে জীবন বাঁচাতে যারা দেশছাড়া হলো তাদেরকে আশ্রয় দিতেও ভারতের কোন্ঠবোধ!! পালিয়ে যাওয়া হিন্দুরা জীবন রক্ষার্থে গোপনীয়ভাবে স্থানীয় ভারতীয় নেতাদের উচ্চহারে অর্থের বিনিময়ে ভারতে অবস্থান করতে হয়েছিলো, যারা পরবর্তীতে রিফিউজি হিসেবে খ্যাত হয়।।
বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে একটা কথা সুপ্রচলিত, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ”! এই আধিপত্যবাদ শব্দটির উপকারিতা কার জন্য?? আরো বলা হয়ে থাকে ভারত বাংলাদেশের “অকৃত্রিম বন্ধু”?? এই অকৃত্রিম বন্ধুত্বতা কিসের জন্য কিংবা কার সাথে কার??
তবে এই আধিপত্যবাদ ও অকৃত্রিম বন্ধু শব্দকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আরও বেশি অত্যাচারিত ও নিপীড়িত হয়ে আসছে।
কেননা বিগত সময়ের ভারতীয় রাজনীতি ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে বলা যায়, ভারত সরকার সবসময়ই তাঁর দেশের স্বার্থে তথা ভারতীয় রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল চুক্তিমূল্যে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক দলের নিকট হতে অধিক স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবে, সেই রাজনৈতিক দলকেই ভারত প্রাধান্য দিবে, এটাই ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির নীতি! এই প্রাধান্যের দিক থেকে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ অনেকটাই এগিয়ে, তাই ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ একে অপরের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে ব্যস্ত, কিন্তু এই দুই দেশের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের মধ্যবর্তী অবস্থানে পড়ে অত্যাচার আর নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়!!
যেমন আওয়ামী লীগ মনে করে যে ভারত আমার অকৃত্রিম বন্ধু এবং ভারত হিন্দু প্রতিনিধিত্বশীল দেশ, সেই হিসেবে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আমার ভোট ব্যাংক, আবার বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মনে করেন বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ঘরের মুরগি! যেমনে খুশি তেমনি লালন-পালন করা যাবে এবং প্রয়োজনে জবাইও করা যাবে!!
আবার অন্যদিকে বিরোধী ক্ষমতাশীল দলগুলো মনে করে এই হিন্দুরা আমাদেরকে ভোট দেয় না, তাই তাদের প্রতি কোন সহানুভূতি দেখানোর দরকার নেই, তাই যখন কোন ইস্যু তৈরির দরকার হয়, তখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হানা হয়!!
তারই বাস্তবিক রূপ গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের শাসন আমলে রামু, নাসিরনগর, কুমিল্লা ট্রাজেডি’সহ সারাদেশে রক্তাক্ত শারদ, মঠ-মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, অপরিমিত ধর্ষণ, আওয়ামীলীগ নেতাদের হুংকারে হিন্দুদের দেশ থেকে বাধ্য হওয়া প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। অথচ এ সকল ঘটনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার সংঘটিত একটি ঘটনারও বিচার নিশ্চিত করেননি এবং অকৃত্রিম বন্ধু খ্যাত ভারত সরকারও এই সকল হিন্দু নির্যাতনে কোন শব্দ ব্যয় করেনি বরং প্রতিনিয়ত ভারত তাঁর স্বার্থে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ করে গিয়েছে!
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ০৫ই আগস্টের পর শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে ভারতে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আবারো নতুন করে অত্যাচারিত নিপীড়িত হয়ে আসছে। অর্থাৎ গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশী হিন্দুদের উপর অত্যাচারী নিপীড়নকারীরা আজ ভারতে জামাই আদরে আশ্রিত হচ্ছে, আর নিপীড়িত অত্যাচারিত বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত তারই মাশুল গুনছে গৃহহারা, পরিবারহারা, নিঃস্ব আর ধর্ষিতা হয়ে!!
ভারতীয়রা তাদের রাজনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থ সংরক্ষণ নীতি ব্যতীত অন্যকিছু নিয়ে ভাবেনা তথা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র কোন সহানুভূতি নেই, কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই বিষয়টি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিন্দুমাত্রও বুঝে না। গত ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায় বেকুবের মতো ভারত সরকারকে হিন্দুদের বিপদের বন্ধু, ভাই, আত্মীয় পরিজন মনে করে আসছে, কিন্তু এই সমস্ত ভাবনা সর্বেব কল্পনাপ্রসুত!! বরং ভারতীয় রাজনৈতিক কার্যপ্রণালী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতীয় রাজনৈতিক পাশা খেলার গুটিচালে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কখনোই হিন্দু জাতীয়তাবোধ বা আদর্শের প্রেক্ষিতে একে অপরের বন্ধু, ভাই বা আত্মীয় পরিজন হয়ে ওঠেনি আর আগামীতেও উঠবে না!! বরং বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে যত বেশি অত্যাচারে নিপীড়ন ঘটবে, সেই অত্যাচার-নিপীড়ন গুলোকে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণ করবে।
তাই বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের উচিত নিজেদের ধর্ম ও রাজনৈতিক দর্শনকে পৃথক করে ভারতের প্রতি সম্পূর্ণ অনির্ভরশীল থেকে অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের অস্তিত্বকে রক্ষা করা।

দেবাশিস সাহা
অধ্যক্ষ
আর্য সংস্কৃত কলেজ, ঢাকা