সোমা ঘোষ মণিকা
মাথার ভেতর গুটিয়ে যায় পা,
দোর গড়ায় পৌঁছুতে পারি না।
সমুদ্র এসে শিস দিয়ে যায়, পা ভিজে না, মাথার ভেতর গুটিয়ে আছে পা।
ক্রিং ক্রিং শব্দ তুলে, ফোন বাজে রাত- দুপুরে,
হাঁটতে গেলেই মনে পড়ে,
পা কামড়েছে ডাল- কুকুরে।
মাথার ভেতর গুটিয়ে গেছে পা,
ফুল ফুটেছে কলতলাতে, তবুও তারে ছুঁতে পারি না।
বালিহাঁসের দুটি ডিম, পড়ে আছে উঠোন কোণে,
জালালী কইতর পোষ মানে না।
নিজের ঘরে নিজেই বন্দি,
মাথার ভেতর গুটিয়ে আছে পা।
ডাইনোসরের ডিম
সোমা ঘোষ মনিকা
একটি চড়ুই বটের ডালে নাচছে— তা-ধিন, তা-ধিন।
তার ঘরেতে আছে মস্ত— ডাইনোসরের ডিম,
ডিম তো নয়; সাদা পাহাড়, শক্ত ভীষণ খোসা—
ডিমের পিছু ছুটতে গিয়ে হচ্ছে রক্তচোষা।
গড়গড়িয়ে চড়ুই ছানা, চিলেকোঠায় মেলছে পা।
চড়ুই পাখির পায়াভারী,
দিবে এবার তা— তাই তো বকছে ভীষণ যা-তা।
দিন ফুরোলো, ঘুম ফুরলো, ডিম তো ফুটে না—
চিন্তায় ভীষণ চড়ুই মশাই, মান তো থাকে না।
হঠাৎ করেই রাত বিরাতে ফুটে গেলো ডিম,
ডাইনোসরের ছানা দেখে চড়ুই হিমসিম
ডাইনোসর ছানা উঠল জেগে আগুন–চোখে, ভয়া ছড়ায় হুংকারে
চড়ুই কাঁপে থরথরিয়ে, ডানা দু’টি ঝিমঝিম
ভেবে চলে- চড়ুই হয়ে কেন আনল ডাইনোসরের ডিম!
প্রাণবায়ু তার করছে এবার টিমটিম।
চড়ুই এবার ভাবছে বসে, গো হারা হেরেছে অবশেষে।
শ্বেত পাথরের এপিটাফ
সোমা ঘোষ মণিকা
ভোরের গা চুমে ঝরে পড়ে
শিউলি আজও কি চুপিচুপি,
বাগানবিলাসের ঝোপ ডিঙিয়ে
ছড়িয়ে আছে ব্যালকনির বুকে—
একটি, দু’টি; আমাদের শিউলি।
প্রতি রোজ অমানিশা ঘোরে,
ঘুম ভেঙে চোখ তোলে, ভালোবাসে কারে?
শুভ্র বসনা,
জাফরানি বোটা আলতো করে
বিকিয়েছে প্রেমের হাটে,
সূর্যকে ভালোবেসে- ঝরে অকালে,
পৃথিবীর গায়ে অলীক আক্ষরে
গাঁথা হয় শ্বেত পাথরের এপিটাফ।