০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ 

নাগেশ্বরীতে রাতের আঁধারে ঘর তুলে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ

  • প্রকাশিত ১০:০৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১২৩ বার দেখা হয়েছে

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ  কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা শহরে রাতের আঁধারে ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংখ্যালঘু এক হিন্দু পরিবার ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে দুটি মামলাসহ থানায় অভিযোগ করেন। আদালতে মামলা করার পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভবেন চন্দ্র বর্মন তার পরিবারকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়‚ উপজেলা শহরের চামটারপার (বুদ্ধিরমোড়)গ্রামের ভবেনে চন্দ্র বর্মনের নামে ৬৮ শতক জমি ১৯৮৬ সালে তার নামে রেকর্ড হয়। অভিযোগ রয়েছে মানিক উদ্দিন সিএস রেকর্ডের মালিক থাকাকালীন মজু ব্যবসায়ীর শশুর শমসের আলী, মানিক উদ্দিন গংদের সমস্ত সম্পত্তি বর্গা করতেন।

পরবর্তীতে রেকর্ড কালে শমসের আলী কৌশলে তার নিজ নামে সম্পত্তি গুলো রেকর্ড করেন। অতঃপর ১৯৭৭ মানিক উদ্দিন ভূমিদস্যু শমসের আলীর বিরুদ্ধে আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করে ১৯৮০ সালে রায় পান এবং মানিক উদ্দিন গংদের নামে এসএ রেকর্ড পূনঃসৃজন হয়।

আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাচ্চা বলেন‚ ‘দুই পক্ষের জমির কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এই জমি প্রকৃত মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন। আদালতে মামলা চলছে এবং আদালতের সিন্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। ’’

উক্ত জমি ভবেন চন্দ্র বর্মন ক্রয়ের পর থেকে বিনা-কাগজে জমি দাবি করাসহ দখলের পায়তারা করে আসছে সনাতনীপাড়ার মজনু ব্যাপারি,শমসের আলীসহ অনেকেই বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার। এক পর্যায়ে গত ৪ মাস থেকে জমি দখল করতে ভবেন চন্দ্র বর্মনের পরিবারকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে এবং গত ২০ নভেম্বর ২৪।সালের দিবাগত রাতে আনুমানিক ২টায় ভূমিদস্যুরা জমি জোরপূর্বক দখল করে টিন দিয়ে একচালা একটি ঘর এবং সুপারীর গাছ রোপণ করে।

স্থানীয় হযরত আলী‚সফি মিয়া‚শাহাজাহান‚খতিব রহমান‚জব্বার আলী ও নজরুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন‚ ‘ভবেন চন্দ্র বর্মন অনেক কষ্টের পর মানিক উদ্দিনের কাছে জমিটি ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু সঠিক মতো জমিটি দখল করতে পারেন না। মজনু ব্যাপারিরা অনেক দিন থেকে তাদের উপর নির্যাতন করে আসছে। বিভিন্ন মাধ্যমেও সমাধান করেও কোন সমাধান মিলছে না। আমরা চাই প্রশাসন সঠিক ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’’

ভবেন চন্দ্র বর্মন জানান‚ ‘১৯৮৬ সালে মানিক উদ্দিন‚রিয়াজ উদ্দিন‚ইয়াকুব আলীর কাছে জমি ক্রয় করে নেওয়ার পর থেকে দখল ভোগ করে আসছে। জোরপূর্বক মজনু ব্যাপারী বুধবার রাতে জমি দখল করে নেয় এবং শালিসও অমান্য করে। বিচারের পরদিন মজু ব্যাপারী ৪ শতক জমি অথবা ৪লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।’’

অভিযুক্ত মজনু ব্যাপারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন‚ ‘‘জমির মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন ঠিক আছে। জোর-যার মুল্লুক তার বলে ফোন কেটে দেন।’’

এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান‚ ‘‘জমা-জমির বিষয়ে আদালত থেকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেওয়ার কাগজ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’’

Tag :
জনপ্রিয়

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ 

নাগেশ্বরীতে রাতের আঁধারে ঘর তুলে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত ১০:০৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ  কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা শহরে রাতের আঁধারে ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংখ্যালঘু এক হিন্দু পরিবার ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে দুটি মামলাসহ থানায় অভিযোগ করেন। আদালতে মামলা করার পর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভবেন চন্দ্র বর্মন তার পরিবারকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়‚ উপজেলা শহরের চামটারপার (বুদ্ধিরমোড়)গ্রামের ভবেনে চন্দ্র বর্মনের নামে ৬৮ শতক জমি ১৯৮৬ সালে তার নামে রেকর্ড হয়। অভিযোগ রয়েছে মানিক উদ্দিন সিএস রেকর্ডের মালিক থাকাকালীন মজু ব্যবসায়ীর শশুর শমসের আলী, মানিক উদ্দিন গংদের সমস্ত সম্পত্তি বর্গা করতেন।

পরবর্তীতে রেকর্ড কালে শমসের আলী কৌশলে তার নিজ নামে সম্পত্তি গুলো রেকর্ড করেন। অতঃপর ১৯৭৭ মানিক উদ্দিন ভূমিদস্যু শমসের আলীর বিরুদ্ধে আদালতে রেকর্ড সংশোধনের মামলা করে ১৯৮০ সালে রায় পান এবং মানিক উদ্দিন গংদের নামে এসএ রেকর্ড পূনঃসৃজন হয়।

আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বাচ্চা বলেন‚ ‘দুই পক্ষের জমির কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এই জমি প্রকৃত মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন। আদালতে মামলা চলছে এবং আদালতের সিন্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। ’’

উক্ত জমি ভবেন চন্দ্র বর্মন ক্রয়ের পর থেকে বিনা-কাগজে জমি দাবি করাসহ দখলের পায়তারা করে আসছে সনাতনীপাড়ার মজনু ব্যাপারি,শমসের আলীসহ অনেকেই বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার। এক পর্যায়ে গত ৪ মাস থেকে জমি দখল করতে ভবেন চন্দ্র বর্মনের পরিবারকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে এবং গত ২০ নভেম্বর ২৪।সালের দিবাগত রাতে আনুমানিক ২টায় ভূমিদস্যুরা জমি জোরপূর্বক দখল করে টিন দিয়ে একচালা একটি ঘর এবং সুপারীর গাছ রোপণ করে।

স্থানীয় হযরত আলী‚সফি মিয়া‚শাহাজাহান‚খতিব রহমান‚জব্বার আলী ও নজরুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন‚ ‘ভবেন চন্দ্র বর্মন অনেক কষ্টের পর মানিক উদ্দিনের কাছে জমিটি ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু সঠিক মতো জমিটি দখল করতে পারেন না। মজনু ব্যাপারিরা অনেক দিন থেকে তাদের উপর নির্যাতন করে আসছে। বিভিন্ন মাধ্যমেও সমাধান করেও কোন সমাধান মিলছে না। আমরা চাই প্রশাসন সঠিক ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।’’

ভবেন চন্দ্র বর্মন জানান‚ ‘১৯৮৬ সালে মানিক উদ্দিন‚রিয়াজ উদ্দিন‚ইয়াকুব আলীর কাছে জমি ক্রয় করে নেওয়ার পর থেকে দখল ভোগ করে আসছে। জোরপূর্বক মজনু ব্যাপারী বুধবার রাতে জমি দখল করে নেয় এবং শালিসও অমান্য করে। বিচারের পরদিন মজু ব্যাপারী ৪ শতক জমি অথবা ৪লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।’’

অভিযুক্ত মজনু ব্যাপারীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন‚ ‘‘জমির মালিক ভবেন চন্দ্র বর্মন ঠিক আছে। জোর-যার মুল্লুক তার বলে ফোন কেটে দেন।’’

এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান‚ ‘‘জমা-জমির বিষয়ে আদালত থেকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দেওয়ার কাগজ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’’