১২:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নবীনগর প্রতিনিধি :

নবীনগরে ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পীরা টুং ট্যাং শব্দে ব্যস্ত

  • প্রকাশিত ০৭:০০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ২২ বার দেখা হয়েছে

ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে টুং ট্যাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কামার শিল্পীরা। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা আর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করলেও তাদের মুখে নেই কোন উচ্ছাস, নেই প্রাণ ভরা হাসি। তারপরও কোরবানির ঈদের কথা মাথায় রেখে নতুন আশায় বুক বেঁধে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। হাতুড়ি আর লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে কামার পল্লীতে। ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে তাদের এব্যস্ততা। কয়লা, লোহাসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো তেমন লাভ নেই তাদের। কিন্তু পূর্ব পুরুষের ব্যবসা ধরে রাখতে একাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন কামার শিল্পীরা।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দিনরাত পরিশ্রম করছেন কোরবানির ঈদে জিনিসপত্রের কেনা-বেচা বেশী হওয়ার আশঙ্কায়। তাদের এই কেনাবেচার আয় থেকে অর্জিত টাকায় সারা বছরের খোরাক যোগায়। অথচ বছরের বেশিরভাগ সময়ই তারা একপ্রকার বেকার সময়ই কাটান।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাংস কাটার জন্য চাপাতি, দা, বটি, চাকু, ছুরি তৈরি এবং পুরোনো জিনিস শান দয়ে থাকেন।
অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই কোরবানীর ঈদে দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ মৌসুম ঘিরে ভালো আয়-উপার্জন করে থাকেন তারা।

বর্তমানে বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে উপজেলার জিনদপুর বাজারের কামার শিল্পী স্বপন কর্মকার আক্ষেপ করে বলেন, ক্রেতাই নেই, তার আবার বেচাকেনা! আর কিছু দিন পর ঈদ। অন্যবার এই সময়ে জমে ওঠে দা-বটির বাজার, অথচ এবার বিক্রিই নেই। সারাদিনে দুই তিনটা দা-বটিও বিক্রি হয় না। ঈদুল আযাহার আর মাত্র বাকি প্রায় ১০ দিন। এর ভিতরে হয়তো বিক্রিটা আরও বাড়বে সে আশায় দিন গুনছে তারা। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের বাপ দাদার প্রাচীন একর্মটি ধরে রাখাটা একটু সহজ হবে বলে মনে করেন অনেকেই।
সোহাতা গ্রামের রুবেল কর্মকার, নির্মল কর্মকার ও সুনীল কর্মকার জানান, লোহা ও কয়লা দাম বেড়ে গেছে, বাড়েনি পারিশ্রমিক তবুও বাপ দাদার সুনাম রক্ষা করার জন্যই এব্যবসায় ধরে রেখেছি।
গত ঈদে কয়েক হাজার টাকা উপার্জন হলেও কারিগরদের বেতন দিয়ে খুব একটা থাকেনি। ভেবেছিলাম কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বেশি অর্ডার আসবে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন একেবারেই ভিন্ন।
এখন তাদের আশা ঈদ এগিয়ে আসতে আসতে যদি বিক্রি কিছুটা বাড়ে।

ক্রেতা রুহেল খান জানান, কয়েক দিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে ও মাংস কাটতে প্রয়োজন দা,চাকু ও ছুরির। সে কারণে বাজারে এসেছি দা, বটি ও ছুরি কিনতে। তবে গতবছরের চেয়ে এবারে দাম খানিকটা বেশি। বর্তমানে প্রতিটি দা তৈরিতে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ২৫০-৫৫০ টাকা পর্যন্ত। চাকু তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকা। বড় ছুড়ি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা। বটি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।

Tag :
জনপ্রিয়

শোটাইম মিউজিক এন্ড প্লের সফল নৌ-বহর অনুষ্ঠিত

নবীনগর প্রতিনিধি :

নবীনগরে ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পীরা টুং ট্যাং শব্দে ব্যস্ত

প্রকাশিত ০৭:০০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে টুং ট্যাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কামার শিল্পীরা। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা আর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। তাই সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করলেও তাদের মুখে নেই কোন উচ্ছাস, নেই প্রাণ ভরা হাসি। তারপরও কোরবানির ঈদের কথা মাথায় রেখে নতুন আশায় বুক বেঁধে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। হাতুড়ি আর লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে কামার পল্লীতে। ঈদের দিন পর্যন্ত চলবে তাদের এব্যস্ততা। কয়লা, লোহাসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো তেমন লাভ নেই তাদের। কিন্তু পূর্ব পুরুষের ব্যবসা ধরে রাখতে একাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন কামার শিল্পীরা।
প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দিনরাত পরিশ্রম করছেন কোরবানির ঈদে জিনিসপত্রের কেনা-বেচা বেশী হওয়ার আশঙ্কায়। তাদের এই কেনাবেচার আয় থেকে অর্জিত টাকায় সারা বছরের খোরাক যোগায়। অথচ বছরের বেশিরভাগ সময়ই তারা একপ্রকার বেকার সময়ই কাটান।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাংস কাটার জন্য চাপাতি, দা, বটি, চাকু, ছুরি তৈরি এবং পুরোনো জিনিস শান দয়ে থাকেন।
অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই কোরবানীর ঈদে দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ মৌসুম ঘিরে ভালো আয়-উপার্জন করে থাকেন তারা।

বর্তমানে বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে উপজেলার জিনদপুর বাজারের কামার শিল্পী স্বপন কর্মকার আক্ষেপ করে বলেন, ক্রেতাই নেই, তার আবার বেচাকেনা! আর কিছু দিন পর ঈদ। অন্যবার এই সময়ে জমে ওঠে দা-বটির বাজার, অথচ এবার বিক্রিই নেই। সারাদিনে দুই তিনটা দা-বটিও বিক্রি হয় না। ঈদুল আযাহার আর মাত্র বাকি প্রায় ১০ দিন। এর ভিতরে হয়তো বিক্রিটা আরও বাড়বে সে আশায় দিন গুনছে তারা। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের বাপ দাদার প্রাচীন একর্মটি ধরে রাখাটা একটু সহজ হবে বলে মনে করেন অনেকেই।
সোহাতা গ্রামের রুবেল কর্মকার, নির্মল কর্মকার ও সুনীল কর্মকার জানান, লোহা ও কয়লা দাম বেড়ে গেছে, বাড়েনি পারিশ্রমিক তবুও বাপ দাদার সুনাম রক্ষা করার জন্যই এব্যবসায় ধরে রেখেছি।
গত ঈদে কয়েক হাজার টাকা উপার্জন হলেও কারিগরদের বেতন দিয়ে খুব একটা থাকেনি। ভেবেছিলাম কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বেশি অর্ডার আসবে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন একেবারেই ভিন্ন।
এখন তাদের আশা ঈদ এগিয়ে আসতে আসতে যদি বিক্রি কিছুটা বাড়ে।

ক্রেতা রুহেল খান জানান, কয়েক দিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে ও মাংস কাটতে প্রয়োজন দা,চাকু ও ছুরির। সে কারণে বাজারে এসেছি দা, বটি ও ছুরি কিনতে। তবে গতবছরের চেয়ে এবারে দাম খানিকটা বেশি। বর্তমানে প্রতিটি দা তৈরিতে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ২৫০-৫৫০ টাকা পর্যন্ত। চাকু তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকা। বড় ছুড়ি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা। বটি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।