০৬:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আলি হোসেন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর প্রতিনিধি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পানিবন্দি নিম্নাঞ্চলের মানুষ, শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পাঠদান ব্যাহত

  • প্রকাশিত ০৭:৩১:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৭০ বার দেখা হয়েছে

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক পানি প্রবেশ শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার সকাল ৯টায় ২১.৬২ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও এটি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

পানিবন্দি এলাকার মধ্যে সদর উপজেলার নারায়ণপুরে ৫০০, আলাতুলিতে ৬০০, শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নে ২ হাজার, উজিরপুরে ৪৫০ ও দুর্লভপুরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় মানুষজনের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও বন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৩ হেক্টর এবং শিবগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, “আমাদের ধান ও অন্যান্য ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন অনেক বাড়ির চারপাশ পানি ঢুকে গেছে, বাড়ির জায়গা ছাড়া চারিদিকে পানি।”

সদরের নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন বলেন, “পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে, যার ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। পানির এমন ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চলের পুরো এলাকা প্লাবিত হতে পারে।”

শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহা. আজম আলী জানান, “ফিল্টেরহাট, নামোজগন্নাথপুর ও বাদশাপাড়াসহ নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো ডুবে গেছে। এখানে প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।”

শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে জানা গেছে, নিম্নাঞ্চলের ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকায় শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশপাশের উচ্চ জায়গাগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছেন।

ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো আমিনুল ইসলাম জানান, পানিবন্দি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিবগঞ্জ উপজেলার মানুষ। তাদের তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

তারেক রহমান : আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসুরী

আলি হোসেন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর প্রতিনিধি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পানিবন্দি নিম্নাঞ্চলের মানুষ, শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশিত ০৭:৩১:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক পানি প্রবেশ শুরু হয়েছে। এতে প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার সকাল ৯টায় ২১.৬২ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও এটি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

পানিবন্দি এলাকার মধ্যে সদর উপজেলার নারায়ণপুরে ৫০০, আলাতুলিতে ৬০০, শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নে ২ হাজার, উজিরপুরে ৪৫০ ও দুর্লভপুরে প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। এসব এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় মানুষজনের জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি ও বন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৩ হেক্টর এবং শিবগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, “আমাদের ধান ও অন্যান্য ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন অনেক বাড়ির চারপাশ পানি ঢুকে গেছে, বাড়ির জায়গা ছাড়া চারিদিকে পানি।”

সদরের নারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন বলেন, “পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে, যার ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। পানির এমন ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চলের পুরো এলাকা প্লাবিত হতে পারে।”

শিবগঞ্জের দুর্লভপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহা. আজম আলী জানান, “ফিল্টেরহাট, নামোজগন্নাথপুর ও বাদশাপাড়াসহ নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো ডুবে গেছে। এখানে প্রায় ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।”

শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে জানা গেছে, নিম্নাঞ্চলের ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকায় শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশপাশের উচ্চ জায়গাগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করছেন।

ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো আমিনুল ইসলাম জানান, পানিবন্দি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিবগঞ্জ উপজেলার মানুষ। তাদের তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।