কাঁঠালের রাজধানী হিসেবে পরিচিত গাজীপুরে এবার ফলন হয়েছে বাম্পার। জেলার প্রধান এই অর্থকরী ফসলকে ঘিরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের শ্রীপুর জৈনা বাজারে জমে উঠেছে দেশের অন্যতম বড় কাঁঠালের হাট। স্বাদ, ঘ্রাণ আর আকারের জন্য দেশজুড়ে খ্যাতি থাকলেও এ বছর পানির দরে কাঁঠাল বিক্রি হওয়ায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই। সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল পরিমাণ কাঁঠাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
গাজীপুরের শ্রীপুর, কাপাসিয়া, কালিয়াকৈর ও কালীগঞ্জের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এ বছর জেলায় প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। কিন্তু সরেজমিনে জৈনা বাজারে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বাজারের পশ্চিম পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে বসেছে কাঁঠালের পাইকারি হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা আড়ত থেকে ট্রাকে করে কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, সড়কের পাশে শত শত ভ্যানচালক কাঁঠাল নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায়।
এ মৌসুমে ১৫ কেজির বেশি ওজনের একটি বড় কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, আর মাঝারি আকারের কাঁঠালের দাম নেমে এসেছে ১৫-২৫ টাকায়। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বহু চাষি কাঁঠাল বিক্রি না করে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।
আবদার গ্রামের বাগান মালিক জহিরুল ইসলাম বলেন, “তেমন যত্ন না করলেও আমার বাগানের প্রায় ৫০টি গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। গত ১৫ দিনে প্রায় ৫০০-৬০০ কাঁঠাল বিক্রি করেছি। বড়গুলো ৪০-৫০ টাকা আর মাঝারিগুলো ২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। দ্রুত পেকে যাওয়ার ভয়ে কম দামে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।”
জৈনা বাজারের আড়তদার সোহেল রানা জানান, সিলেটে বন্যার কারণে এ বছর কাঁঠালের বেচাকেনা কিছুটা কম। তিনি বলেন, “উপজেলায় সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার ব্যবস্থা থাকলে বাগান মালিকরা ন্যায্য দাম পেতেন এবং আমরাও লাভবান হতাম।”
তবে বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। স্থানীয় আড়তদার মোফাজ্জল সরকার বলেন, “গত দুই বছরের তুলনায় এবার কাঁঠালের বেচাকেনা বেশ ভালো। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকাররাও খুশি।”জৈনা বাজারের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, “আমি ১৯৮৫ সাল থেকে এখানে ব্যবসা করি। নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনী, চাঁদপুর, সিলেট, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এখানে আসেন, কারণ এখানে কম দামে ভালো মানের কাঁঠাল পাওয়া যায়।”নোয়াখালী থেকে আসা পাইকার ইদ্রিস আলী বলেন, “জৈনা বাজারের কাঁঠাল খুবই সুস্বাদু ও উন্নত মানের। এর চাহিদা দেশজুড়ে, তাই আমরা এখান থেকেই কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাই।”
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, “এ বছর কাঁঠালের ফলন গত বছরের চেয়ে ভালো হয়েছে এবং প্রচুর কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে গাজীপুরের কাঁঠাল বিদেশেও রপ্তানি করা হচেছ।
০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
আসাদুজ্জামান গাজীপুর থেকেঃ
গাজীপুরে জমজমাট পাইকারি কাঁঠালের বাজার,, যাচ্ছে দেশে-বিদেশে,
Tag :
জনপ্রিয়