০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালিয়াকৈরে প্রায় ১১ গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতায় স্থায়ী পানিবন্দি

  • প্রকাশিত ০৯:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • ১২৪ বার দেখা হয়েছে

মোঃ আমির হোসেন,কালিয়াকৈর( গাজীপুর) থেকে : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রায় ১১ টি গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতায় স্থায়ী পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জলবদ্ধ এলাকাগুলোর মধ্যে, মাঝুখান গ্রাম, আমতলা গ্রাম,ফকির পাড়া গ্রাম, মাটিকাটা গ্রাম, ভোলা গ্রাম, কৌচা কুড়ি গ্রাম, সিনাবহ গ্রাম, মাযু খন পশ্চিম পাড়া গ্রাম,আমদাইল গ্রাম, শোলাটি গ্রাম, তালতলী গ্রাম, এবং মখশ বিল পর্যন্ত আরো অন্যান্য এলাকাবাসী সারা এলাকায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ সমস্ত এলাকায় কালিয়াকৈর উপজেলায় ১১টি এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। রূপ নিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতার, অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখলে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপরে বর্ণনা এ সমস্ত এলাকাগুলো কালিয়াকৈর উপজেলার ৮ নং ইউনিয়ন এবং আশপাশের এলাকায় এখন জলাবদ্ধতার রূপ ধারণ করেছে এতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কারো কারো বাড়ির উঠানেই পানি। কারো বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর সমান পরিমাণ পানি, অনেকের বসত ঘরে ৩-৪ ফুট পানি। রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাড়িতে পানি উঠায় কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে মাঝেমধ্যে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছেন। কয়েকটি শিল্প কারখানায়ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার নির্গত ক্যামিকেল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে দূষণ হয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। নারী ও শিশুরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।

এদিকে মাঝুখান থেকে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তারও বেহাল অবস্থা সড়কের সংস্কার কাজের বর্জ্য ফেলে পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে দেওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মাজু খান পূর্ব পাড়া মসজিদে নামাজ পড়া যাচ্ছে না, দুর্গন্ধের কারণে কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যাচ্ছে না। মাঝুখান পূর্ব পাড়া জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া অসম্ভব হয়েছে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ আদম আলী সহ মসজিদ কমিটির লোকজন বলেন,বহু আবেদন ও নিবেদন করেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

মাজু খান এলাকার মোঃ মহসিন, মৌচাক ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন , ‘একদিকে বিধিনিষেধ অপরদিকে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অতি কষ্টে চলছে নিম্নআয়ের মানুষেরা। শিল্প কারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্প কারখানার নির্গত গরম পানি জলাবদ্ধতায় মিশে গেছে। তাতে জলাবদ্ধতার পানি কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। এ পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পানির কীট-পতঙ্গসহ মাছ মরে যাচ্ছে। আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।মাঝুখান পূর্বপাড়া এলাকায় বসবাসরত মানুষের কথা। আমাদের বাড়ি ঘরে হাঁটু সমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।মাজু খান এলাকার বসবাসরত, মোরশেদা আক্তার মৌচাক ইউনিয়ন কৃষক দলের মহিলা সম্পাদিকা বলে
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা শিল্প কলকারখানা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত। সে কারণে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘর বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

মাজু খান পূর্বপারা এলাকায় বসবাসরত কৃষক দলের নেত্রী নাসিমা আক্তার, মমতাজ পারভিন, শিউলি আক্তার, জোসনা বেগম, বলেন ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে।মাঝুখান আমতলা এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ওখানকার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সময়মত মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।তাই আমরা মাজুখান ৮ নং ওয়ার্ড থেকে শুরু করে মৌচাক ইউনিয়ন রতনপুর সহ আমতলা মকস বিল সহ ময়লাপানী ও ময়লার কচুরিপানা সহ এসব ময়লা আবর্জনার কারণে সিজনে ঠিকমতো ফসল করাও যাচ্ছে না তাই আমরা এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত ও সুন্দর পরিবেশ গড়ার দাবি জানাচ্ছি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।

Tag :
জনপ্রিয়

‎গোবিন্দগঞ্জে সেনা অভিযানে অস্ত্র-ইয়াবাসহ চার শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক ‎

কালিয়াকৈরে প্রায় ১১ গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতায় স্থায়ী পানিবন্দি

প্রকাশিত ০৯:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

মোঃ আমির হোসেন,কালিয়াকৈর( গাজীপুর) থেকে : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রায় ১১ টি গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতায় স্থায়ী পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জলবদ্ধ এলাকাগুলোর মধ্যে, মাঝুখান গ্রাম, আমতলা গ্রাম,ফকির পাড়া গ্রাম, মাটিকাটা গ্রাম, ভোলা গ্রাম, কৌচা কুড়ি গ্রাম, সিনাবহ গ্রাম, মাযু খন পশ্চিম পাড়া গ্রাম,আমদাইল গ্রাম, শোলাটি গ্রাম, তালতলী গ্রাম, এবং মখশ বিল পর্যন্ত আরো অন্যান্য এলাকাবাসী সারা এলাকায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এ সমস্ত এলাকায় কালিয়াকৈর উপজেলায় ১১টি এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি। রূপ নিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতার, অপরিকল্পিতভাবে সেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো বেদখলে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপরে বর্ণনা এ সমস্ত এলাকাগুলো কালিয়াকৈর উপজেলার ৮ নং ইউনিয়ন এবং আশপাশের এলাকায় এখন জলাবদ্ধতার রূপ ধারণ করেছে এতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কারো কারো বাড়ির উঠানেই পানি। কারো বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর সমান পরিমাণ পানি, অনেকের বসত ঘরে ৩-৪ ফুট পানি। রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। বাড়িতে পানি উঠায় কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে মাঝেমধ্যে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাঁশের মাচার ওপর বসবাস করছেন। কয়েকটি শিল্প কারখানায়ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। এছাড়া শিল্প কারখানার নির্গত ক্যামিকেল ও দুর্গন্ধযুক্ত কালো পানিতে দূষণ হয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। নারী ও শিশুরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।

এদিকে মাঝুখান থেকে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তারও বেহাল অবস্থা সড়কের সংস্কার কাজের বর্জ্য ফেলে পানি নিষ্কাশনের খাল বন্ধ করে দেওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মাজু খান পূর্ব পাড়া মসজিদে নামাজ পড়া যাচ্ছে না, দুর্গন্ধের কারণে কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যাচ্ছে না। মাঝুখান পূর্ব পাড়া জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া অসম্ভব হয়েছে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ আদম আলী সহ মসজিদ কমিটির লোকজন বলেন,বহু আবেদন ও নিবেদন করেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

মাজু খান এলাকার মোঃ মহসিন, মৌচাক ইউনিয়ন জিয়া মঞ্চের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন , ‘একদিকে বিধিনিষেধ অপরদিকে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় অতি কষ্টে চলছে নিম্নআয়ের মানুষেরা। শিল্প কারখানার নির্গত বর্জ্যে পানি নিষ্কাশন খালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিল্প কারখানার নির্গত গরম পানি জলাবদ্ধতায় মিশে গেছে। তাতে জলাবদ্ধতার পানি কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করেছে। এ পানিতে হাঁটাচলা করতে গিয়ে মানুষ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পানির কীট-পতঙ্গসহ মাছ মরে যাচ্ছে। আশপাশের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।মাঝুখান পূর্বপাড়া এলাকায় বসবাসরত মানুষের কথা। আমাদের বাড়ি ঘরে হাঁটু সমান পানি উঠেছে। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। চুলায় আগুন জ্বালাতে পারি না। বিশুদ্ধ পানি নেই। সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ির অনেক ভাড়াটিয়া এ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।মাজু খান এলাকার বসবাসরত, মোরশেদা আক্তার মৌচাক ইউনিয়ন কৃষক দলের মহিলা সম্পাদিকা বলে
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা শিল্প কলকারখানা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত। সে কারণে জমির দাম বেশি। তুলনামূলকভাবে নিচু জমির দাম কম। তাই অনেকেই নিচু অঞ্চলে কম দামে জমি ক্রয় করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করছেন। আর সে কারণেই নির্মিত ঘর বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

মাজু খান পূর্বপারা এলাকায় বসবাসরত কৃষক দলের নেত্রী নাসিমা আক্তার, মমতাজ পারভিন, শিউলি আক্তার, জোসনা বেগম, বলেন ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হচ্ছে।মাঝুখান আমতলা এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ওখানকার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সময়মত মেশিন চালু না রাখায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।তাই আমরা মাজুখান ৮ নং ওয়ার্ড থেকে শুরু করে মৌচাক ইউনিয়ন রতনপুর সহ আমতলা মকস বিল সহ ময়লাপানী ও ময়লার কচুরিপানা সহ এসব ময়লা আবর্জনার কারণে সিজনে ঠিকমতো ফসল করাও যাচ্ছে না তাই আমরা এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত ও সুন্দর পরিবেশ গড়ার দাবি জানাচ্ছি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।