কে এই ক্ষমতাধর মশিউর? তার বিশাল ক্ষমতার উৎস কি? কে প্রধান প্রকৌশলীর ব্যাক্তিগত ক্যাশিয়ার? কে ইফতারের নামে দু’কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছে? বছরের পর বছর পেষনে আছে কে? কে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে হাইজ
গাড়ি নিয়ে সিরাজগঞ্জে গিয়ে ঈদ উদযাপন করেছে? সিনিয়রদের টপকিয়ে কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে জোর করে প্রমোশন ফাইলে স্বাক্ষর করিয়েছে কে? এত গুলো ‘কে’ এর উত্তর’মশিউর’। কে এই মশিউর ? মশিউরের পুরো নাম মোঃ মশিউর রহমান পদবি উপ সহকারী প্রকৌশলী।তার পোস্টিং এলজিইডি সিরাজগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর। অলিখিত পেষনে কাজ করছে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রধান প্রকৌশলীর বিশেষ সহকারী হিসেবে।তার বাড়িও সিরাজগঞ্জ।সে প্রধান প্রকৌশলীর অলিখিত ক্যশিয়ার। প্রধান প্রকৌশলীর অনৈতিক কালেকশনের দায়িত্ব পালন করে এই মশিউর।
# প্রধান প্রকৌশলীর ব্যাক্তিগত ক্যাশিয়ার
# ইফতারের নামে দু’ কোটি টাকা চাঁদাবাজি
# পেষনে আছে তিন বছর
# হাইজ গাড়ি নিয়ে সিরাজগঞ্জে ঈদ উদযাপন
# কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে সিনিয়রদের টপকিয়ে প্রমোশন ফাইলে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্ররণ
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়ার অনিয়ম ও দুর্নীতির পাঁচ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে তার অতি গুনধর বিশেষ সহকারীর বিশেষ বিশেষ গুনের বয়ান পাঠক সম্মুখে প্রকাশ করা হল।
সূত্র জানায় এই মশিউর এক সময় এলজিইডির প্রকল্পে উপ সহকারী প্রকৌশলীর পদে আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করত। তার কপাল খোলে ২০১০ সালে। সে সময় ফেসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান কোর্টে রায় পাওয়া বিভিন্ন পদের প্রায় ছয় হাজার কর্মচারীকে জিওবি খাতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওই সময় তিনি বিভিন্ন পদের প্রায় তিন হাজার কর্মচারীকে বাছাই করে জিওবি খাতে নিয়োগ দেন।ওই ছয় হাজার কর্মচারির মধ্য থেকে তিন হাজার জনকে বাছাই করতে দুই জনকে দায়িত্ব দেন।একজন সেই সময়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রশাসন )আব্দুস সাত্তার তিনি বর্তমানে দক্ষিন চট্টগ্রাম অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি,অন্য জন সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী (প্রশাসন )জহুরুল ইসলাম মন্ডল। ওই তিন হাজার জনকে বাছাই করতে দুটি ক্রাইটেরিয়া অবলম্বন করেন। প্রথমত আওয়ামী লীগ ঘরানা দ্বিতীয়ত মাথা পিছু পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ। মশিউর আওয়ামী লীগ করে এবং ঘুষের পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করে।ফেসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর মশিউর এখন বিএনপির তকমা লাগিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর বিশেষ সহকারী কাম ব্যাক্তিগত ক্যশিয়ারের দায়িত্ব পালন করছে।
সূত্র জানায় সদ্য শেষ হওয়া রমজানে এলজিইডি ভবনে প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন ছিল। জানা যায় এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন এই ইফতার কর্মকান্ডে। সূত্র জানায় ওই ব্যক্তিগত ক্যশিয়ার মশিউর প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙিয়ে ৬৪ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট থেকে সর্ব নিম্ন ৩০ হাজার থেকে এক লাখ হারে টাকা আদায় করে। আবার এলজিইডির প্রায়১৩০ প্রকল্পের শত খানেক পিডির নিকট থেকে সর্ব নিম্ন ৩০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে। সূত্র জানায় ইফতার খাতে মশিউর প্রায় দুই কোটি টাকা আদায় করে।বিষয়টি নিশ্চিত হতে এই প্রতিবেদক কয়েক জন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও পিডির সাথে কথা বলেন ।নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা ইফতার বাবদ মশিউরের সাথে অর্থ লেনদেনের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
সিরাজগঞ্জে বাড়ি উপ সহকারী প্রকৌশলী ব্যবহার করেন অফিসের দামি গাড়ি। সম্প্রতি শেষ হওয়া ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে মশিউর রহমান স্বপরিবারে সিরাজগঞ্জে যান। সূত্র জানায় দুর্দান্ত প্রভাবশালী মশিউর রহমান টপ সিনিয়রদের ব্যবহারের জন্য রাখা নতুন দামি টয়োটা হাইজগাড়ি নিয়ে স্বপরিবারে সিরাজগঞ্জে যায় এবং ওই গাড়ি দাবড়িয়ে ঈদের লম্বা ছুটি কাটিয়ে ওই গাড়িতেই ঢাকায় ফেরে।নিয়ম আছে এলজিইডির কোন কর্মকর্তা অফিসের গাড়ি তাদের জুরিডিকশনের বাইরে নিতে
পারেনা।আবার একজন উপ সহকারী প্রকৌশলী কোন ভাবে গাড়ি পায় না অথচ প্রতাপশালী মশিউর টপ সিনিয়রদের ব্যবহারের গাড়িই শুধু নয় চালক,তেল সব এলজিইডির। সূত্র জানায় ওই মশিউর রহমান গত কয়েক বছর পেষনেই আছে প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়ার সাথে।প্রথমে তাকে সিরাজগঞ্জ থেকে আরডিইসি ভবনে সিরাজগঞ্জ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পিডির দপ্তরে বদলি করে এনে পেষনে রশীদ মিয়া তার পিইডিপি প্রকল্পে নিয়ে আসেন এবং তার মাধ্যমে ওই প্রকল্পের মাঠপর্যায় থেকে পিসির কোটি কোটি টাকা উঠাতেন। সূত্র আরো জানায় গোপাল বাবু প্রধান প্রকৌশলীর রুটিন দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ের শেষ দিকে রশীদ মিয়া প্রধান প্রকৌশলী হতে পারবে কি পারবেনা এমন দোলাচলের ভিতর থাকায় মশিউর তড়িঘড়ি সিরাজগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে বদলির আদেশ করায় এবং সেখানে জয়েন্ট করে। রশীদ মিয়া প্রধান প্রকৌশলী( চ দা) আদেশ পেলেই মশিউরের কপাল খুলে। সে বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করে। সম্প্রতি মশিউর রহমান প্রধান প্রকৌশলীর সহায়তার সে সহ বিশ জনের প্রমোশনের ফাইল মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। জানা গেছে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রশাসন ওই প্রমোশনের ফাইল স্বাক্ষর করতে অশিকৃতি জানান। কারন ওই বিশজন থেকে আরো সিনিয়র আছেন শ’ দুয়েক। মশিউর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন) কে প্রেশার দিয়ে প্রকারন্তরে হুমকি দিয়ে ওই ফাইলে স্বাক্ষর করিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এই প্রতিবেদককে জানান, অপেক্ষাকৃত সিনিয়রদের টপকিয়ে জুনিয়রদের প্রমোশনের ফাইল এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী কিভাবে মন্ত্রণালয়ে পাঠাল তা বোধগম্য নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিশ জনের মধ্যে একাধিক প্রার্থী এই প্রতিবেদককে জানায় প্রমোশ করিয়ে দেবে বলে মশিউর তাদের নিকট থেকে এক কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছে। মশিউর রহমানের বক্তব্য নিতে তার সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।সম্প্রতি মশিউরের ব্যবহার খুব রুড় হয়েছে। সে পিডিসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে অহরহ খারাপ আচরন করে কারো কেয়ার করেনা। আউট সোর্সিং নিয়োগ,বদলি,রিভাইজ অনুমোদনের ঘুষ, আউটসোর্সিং ফার্ম, কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগ সবাই নিয়ন্ত্রণ করে মশিউর।