০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আসিফ সেতু,যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ

মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক পুলিশ সদস্যের, হাসপাতালে ছুটে এলো হাহাকার

  • প্রকাশিত ০৩:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • ৫৪ বার দেখা হয়েছে

যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ছাতিয়ানতলা এলাকায় এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) এক কর্মরত কনস্টেবল। ভোরের নিস্তব্ধতা ভেঙে ছড়িয়ে পড়ে কান্না আর শোকের ছায়া। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম ফজলুল হক। তিনি কেএমপির আটরা ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন এবং তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার ক্ষুদ্র রয়রা গ্রামে। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন, তারা হলেন ঝিনাইদহের কোটচাদপুর উপজেলার বাসিন্দা আল-মামুন (৩২) ও রিয়াল হোসেন (৩০), যারা যশোরের একটি এনজিওতে চাকরি করতেন।

শনিবার ভোর ছয়টার দিকে ফজলুল হক মোটরসাইকেল চালিয়ে ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই বিপরীত দিক থেকে আসছিল আরেকটি মোটরসাইকেল, যাতে ছিলেন আল-মামুন ও রিয়াল। ছাতিয়ানতলা এলাকায় পৌঁছানোর পর মুহূর্তেই ঘটে যায় ভয়ংকর এক মুখোমুখি সংঘর্ষ। রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান তিনজনই। শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা তিনজনকে উদ্ধার করে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পুলিশ সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকে এক নিথর দেহ—পুলিশের ইউনিফর্মে আবৃত। আর পাশে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সহকর্মীরা, পরিচিতজনেরা। হাসপাতালের পরিবেশ মুহূর্তেই ভারী হয়ে ওঠে বুকফাটা আর্তনাদে। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, কিছুক্ষণ আগেও যার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে, সেই ফজলুল হক আর নেই।

তার সহকর্মীরা জানান, ফজলুল ছিলেন দায়িত্বশীল, ভদ্র এবং অমায়িক একজন মানুষ। পরিবারে তিনি ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার এই অকাল মৃত্যু শুধুমাত্র একটি প্রাণের ক্ষতি নয়, একটি পরিবারকেও অনিশ্চয়তার আঁধারে ঠেলে দিল।

সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা আমাদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানায়। একটি ভুল মুহূর্ত কেড়ে নিতে পারে একটি মূল্যবান জীবন। ফজলুল হকের মৃত্যু যেন আরেকটি নাম হয়ে না ওঠে এই দেশের অসংখ্য রক্তাক্ত ঘটনার তালিকায়।

Tag :
জনপ্রিয়

প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্বমানের হসপিটাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত নিজস্ব প্রতিবেদক:

আসিফ সেতু,যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ

মোটরসাইকেল সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক পুলিশ সদস্যের, হাসপাতালে ছুটে এলো হাহাকার

প্রকাশিত ০৩:২৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ছাতিয়ানতলা এলাকায় এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) এক কর্মরত কনস্টেবল। ভোরের নিস্তব্ধতা ভেঙে ছড়িয়ে পড়ে কান্না আর শোকের ছায়া। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম ফজলুল হক। তিনি কেএমপির আটরা ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন এবং তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার ক্ষুদ্র রয়রা গ্রামে। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন, তারা হলেন ঝিনাইদহের কোটচাদপুর উপজেলার বাসিন্দা আল-মামুন (৩২) ও রিয়াল হোসেন (৩০), যারা যশোরের একটি এনজিওতে চাকরি করতেন।

শনিবার ভোর ছয়টার দিকে ফজলুল হক মোটরসাইকেল চালিয়ে ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই বিপরীত দিক থেকে আসছিল আরেকটি মোটরসাইকেল, যাতে ছিলেন আল-মামুন ও রিয়াল। ছাতিয়ানতলা এলাকায় পৌঁছানোর পর মুহূর্তেই ঘটে যায় ভয়ংকর এক মুখোমুখি সংঘর্ষ। রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান তিনজনই। শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা তিনজনকে উদ্ধার করে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পুলিশ সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকে এক নিথর দেহ—পুলিশের ইউনিফর্মে আবৃত। আর পাশে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সহকর্মীরা, পরিচিতজনেরা। হাসপাতালের পরিবেশ মুহূর্তেই ভারী হয়ে ওঠে বুকফাটা আর্তনাদে। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, কিছুক্ষণ আগেও যার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে, সেই ফজলুল হক আর নেই।

তার সহকর্মীরা জানান, ফজলুল ছিলেন দায়িত্বশীল, ভদ্র এবং অমায়িক একজন মানুষ। পরিবারে তিনি ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার এই অকাল মৃত্যু শুধুমাত্র একটি প্রাণের ক্ষতি নয়, একটি পরিবারকেও অনিশ্চয়তার আঁধারে ঠেলে দিল।

সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা আমাদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানায়। একটি ভুল মুহূর্ত কেড়ে নিতে পারে একটি মূল্যবান জীবন। ফজলুল হকের মৃত্যু যেন আরেকটি নাম হয়ে না ওঠে এই দেশের অসংখ্য রক্তাক্ত ঘটনার তালিকায়।