মনির হোসেন, নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে : ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে।এক সময় এ শিল্প দিয়ে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করলেও আধুনিকতার ছোঁয়া ও পলিথিন-প্লাস্টিকের প্রসারে এ পেশা আজ হুমকির মুখে। উপজেলার শিবপুর গ্রামের আয়নাল হক বলেন- আগে বাঁশর তৈরী আনতা (মাছ ধরার যন্ত্র) , পাথি (ঝুড়ি) , ডোলা বিক্রি করে ০৬জন মানুষের সংসার চলত।
এখন বাঁশের দাম ও বেশি বাজারে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা ও তেমন নেই। তাই অনেক কষ্টে দিন কাটে পরিবার নিয়ে। শ্রীঘর গ্রামের আব্দুর রশিদ, শাহবাজপুর গ্রামের দুলাল মিয়া , বড়িকান্দির সোনা মিয়া, জুলাইপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ – এদের মতো বহু কারিগরই এখন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। এক সময় তাঁরা বাঁশ ও বেত দিয়ে নান্দনিক সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্ত কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া, মধ্যত্বভোগীদের দৌরাত্ম ও তৈরিকৃত মাল বিক্রির অভাবে আজ তারা পরিবার নিয়ে দারিদ্রের মুখে। আব্দুর রশিদ আক্ষেপ করে বলেন – “আগে বাপ-দাদার এই পেশায় কাজ করে ভালো ভাবে সংসার চলত ছেলে- মেয়েদের লেখাপাড় করাতাম কিন্ত এখন বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে দিতে হবে ভাবিনি।
এখন আর সংসার চলে না।” দুলাল মিয়া জানান -“কাজ জানি, মন চাই কাজ চালিয়ে যেতে, কিন্ত ক্রেতা নেই, দামও ওঠে না। “সরকারী – বেসরকারী সহায়তা না পেলে এই শিল্প হয়তো খুব শিগগিরই হারিয়ে যাবে,কারিগররা অন্য কাজ বেছে নিতে বাধ্য হবেন। ঐতিহ্য রক্ষায় প্রয়োজন সরকারী উদ্যোগ ও ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা, যাতে এই শিল্প আবারও নতুন করে প্রাণ ফিরে পেতে পারে। বাংলাদেশে এক সময় ছিল যখন গ্রামের আনাচে কানাচে – প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের অন্যতম আয় ও জীবিকার বাহন ছিল ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প , তা এখন সংকটের মুখে, প্রায় বিলুপ্তির পথে।