১২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোঃ আমির হোসেন :

মাধক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে

  • প্রকাশিত ০৪:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ৫৬ বার দেখা হয়েছে

আমাদের দেশে যে সকল সমস্যা সমাজকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে মাদকের বহাল থাবা। দিন দিন মাদকের ব্যবহার উদ্বেগ জনক হারে বাড়ছে। মাদকাসক্তি এক ভয়াবহ মরণব্যাধি। দেশে মাদক আসক্তদের সংখ্যা ঠিক কত তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন হিসেবে কমবেশি এক কোটি বলা হয়ে থাকে। আবার বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরুদের হিসাব মতে, দেশে বর্তমানে মাদক সেবির সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি ও তরুণ তরুণী। বর্তমানে দেশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মাদকের কেনাবেচা হয় না। শহর থেকে শুরু করে গ্রামেও এটি সহজলভ্য। নিষিদ্ধ জগতে অস্ত্রের পর মাদক কি সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। মাধক উৎপাদনকারী দেশ না হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশকে মাদকের অপব্যবহারের স্বীকার করে তুলছে মাধক ব্যবসায়ীরা। মাধক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ মাদকের বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এশিয়ার গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল গোল্ডেন ক্রিকেট ও গোল্ডেন ও গোল্ডেন ওয়েজ নামে পরিচিত মাধক চোরাচালানের তিনটি প্রধান অঞ্চলের কেন্দ্রে বাংলাদেশের অবস্থান। মাধব উৎপাদন ও চোরাচালানের পথ হিসেবে ইরান, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানকে একএে বলা হয় গোল্ডেন ক্রিকেট। এই অঞ্চল বাংলাদেশের পশ্চিমে। আর গোল্ডেন ওয়েজ হচ্ছে ভারতের হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, নেপাল ও ভোটানের কিছু অংশ। এই অংশ বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত। বাংলাদেশ গোল্ডেন ট্রায়াঞেল (মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাউস) এবং গোল্ডেন ক্রিকেট অর্থাৎ পাকিস্তান। আফগানিস্তান এবং ইরানের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, তাই আন্তর্জাতিক মাদক কারবারীরাও বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে সহজে ব্যবহার করতে পারছে।বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে শত শত নদ-নদী দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মাধক চুরাকারবারিরা সমুদ্র উপকূল ও জল পথকে তাদের পণ্য প্রচারের খুবই উপযুক্ত পথ হিসেবে বিবেচনা করে। আশির দশক পর্যন্ত বাংলাদেশে মাদক বলতে গাজাকেই বুঝানো হতো। মাদক সেবিরা সে সময় গাজায় সেবন করতো। এরপরে এলো ফেনসিডিল। এখন ইয়াবা,ফেনসিডিল, হিরোইন আর গাজার বাইরেও অন্তত ২০ ধরনের মাদক সেবন করে মাধক সেবিকা।গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য জানা যায়, গত ১০ বছরে নেশাখোর সন্তানের হাতে প্রায় দুইশত মা-বাবা খুন হয়েছে, স্বামী হত্যা করেছে স্ত্রীকে, স্ত্রী হত্যা করেছে স্বামীকে। খুন রাহাজানি, দর্শন, পরকীয়া প্রেম, দাম্পত্য কলহ, অর্থ লেনদেন, হত্যা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সবকিছুর মূলেই রয়েছে মাদকের নেশা। দেশে শতকরা, ৬১ শতাংশেরও বেশি কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতী, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তাদের মাদক সেবনের হার বেশি। তারা সমাজের বিভিন্ন অর্থনৈতিক স্তর থেকে আসে। বাংলাদেশে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রিত এবং সীমাবদ্ধ। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম অ্যালকোহল সে বনের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বুপ্রেনরফিন এবং ট্রানকুইলাইজার ওযুধের আসক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বপ্রেনরফিনের প্রকোপ গাজা, ফেনসিডিল হিরোইন এবং অ্যালকোহলের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকা বুপ্রেনরফিনের সর্বাধিক প্রকোপযুক্ত এলাকা। ট্রানকুইলাইজার, মানসিক চাপ ও উত্তেজনা কমানোর একটি ঔষধ যা প্রশান্তি দেয়। উদ্যোগ এবং অনিদ্রার চিকিৎসার জন্য টানকুইলাইজার ব্যবহার করা হয়। মাদকাসক্তি চিকিৎসা পরিষেবা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায় যে খুব কম লোকই ঘুমের ওষুধ, সম্মোহিতকারী এবং টান কুই লাইজার ওষুধের আসক্তির জন্য চিকিৎসা নেয়। এই ওষুধের অপব্যবহারে প্রবনতা নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এছাড়াও মানসিক চাপ , উদ্বেগ বা মেজাজের ব্যাধিগ্রসত জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্য বেশি দেখা যায়,

Tag :
জনপ্রিয়

মেঘনা নদীতে জেলের জালে আবারো ধরা পরলো ২৯ কেজি ওজনের বিগহেড মাছ

মোঃ আমির হোসেন :

মাধক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে

প্রকাশিত ০৪:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

আমাদের দেশে যে সকল সমস্যা সমাজকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে মাদকের বহাল থাবা। দিন দিন মাদকের ব্যবহার উদ্বেগ জনক হারে বাড়ছে। মাদকাসক্তি এক ভয়াবহ মরণব্যাধি। দেশে মাদক আসক্তদের সংখ্যা ঠিক কত তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন হিসেবে কমবেশি এক কোটি বলা হয়ে থাকে। আবার বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরুদের হিসাব মতে, দেশে বর্তমানে মাদক সেবির সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি ও তরুণ তরুণী। বর্তমানে দেশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মাদকের কেনাবেচা হয় না। শহর থেকে শুরু করে গ্রামেও এটি সহজলভ্য। নিষিদ্ধ জগতে অস্ত্রের পর মাদক কি সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। মাধক উৎপাদনকারী দেশ না হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশকে মাদকের অপব্যবহারের স্বীকার করে তুলছে মাধক ব্যবসায়ীরা। মাধক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ মাদকের বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এশিয়ার গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল গোল্ডেন ক্রিকেট ও গোল্ডেন ও গোল্ডেন ওয়েজ নামে পরিচিত মাধক চোরাচালানের তিনটি প্রধান অঞ্চলের কেন্দ্রে বাংলাদেশের অবস্থান। মাধব উৎপাদন ও চোরাচালানের পথ হিসেবে ইরান, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানকে একএে বলা হয় গোল্ডেন ক্রিকেট। এই অঞ্চল বাংলাদেশের পশ্চিমে। আর গোল্ডেন ওয়েজ হচ্ছে ভারতের হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, নেপাল ও ভোটানের কিছু অংশ। এই অংশ বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত। বাংলাদেশ গোল্ডেন ট্রায়াঞেল (মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাউস) এবং গোল্ডেন ক্রিকেট অর্থাৎ পাকিস্তান। আফগানিস্তান এবং ইরানের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত, তাই আন্তর্জাতিক মাদক কারবারীরাও বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে সহজে ব্যবহার করতে পারছে।বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে শত শত নদ-নদী দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মাধক চুরাকারবারিরা সমুদ্র উপকূল ও জল পথকে তাদের পণ্য প্রচারের খুবই উপযুক্ত পথ হিসেবে বিবেচনা করে। আশির দশক পর্যন্ত বাংলাদেশে মাদক বলতে গাজাকেই বুঝানো হতো। মাদক সেবিরা সে সময় গাজায় সেবন করতো। এরপরে এলো ফেনসিডিল। এখন ইয়াবা,ফেনসিডিল, হিরোইন আর গাজার বাইরেও অন্তত ২০ ধরনের মাদক সেবন করে মাধক সেবিকা।গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য জানা যায়, গত ১০ বছরে নেশাখোর সন্তানের হাতে প্রায় দুইশত মা-বাবা খুন হয়েছে, স্বামী হত্যা করেছে স্ত্রীকে, স্ত্রী হত্যা করেছে স্বামীকে। খুন রাহাজানি, দর্শন, পরকীয়া প্রেম, দাম্পত্য কলহ, অর্থ লেনদেন, হত্যা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সবকিছুর মূলেই রয়েছে মাদকের নেশা। দেশে শতকরা, ৬১ শতাংশেরও বেশি কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতী, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তাদের মাদক সেবনের হার বেশি। তারা সমাজের বিভিন্ন অর্থনৈতিক স্তর থেকে আসে। বাংলাদেশে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রিত এবং সীমাবদ্ধ। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম অ্যালকোহল সে বনের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বুপ্রেনরফিন এবং ট্রানকুইলাইজার ওযুধের আসক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বপ্রেনরফিনের প্রকোপ গাজা, ফেনসিডিল হিরোইন এবং অ্যালকোহলের তুলনায় তুলনামূলকভাবে কম। ঢাকা বুপ্রেনরফিনের সর্বাধিক প্রকোপযুক্ত এলাকা। ট্রানকুইলাইজার, মানসিক চাপ ও উত্তেজনা কমানোর একটি ঔষধ যা প্রশান্তি দেয়। উদ্যোগ এবং অনিদ্রার চিকিৎসার জন্য টানকুইলাইজার ব্যবহার করা হয়। মাদকাসক্তি চিকিৎসা পরিষেবা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায় যে খুব কম লোকই ঘুমের ওষুধ, সম্মোহিতকারী এবং টান কুই লাইজার ওষুধের আসক্তির জন্য চিকিৎসা নেয়। এই ওষুধের অপব্যবহারে প্রবনতা নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এছাড়াও মানসিক চাপ , উদ্বেগ বা মেজাজের ব্যাধিগ্রসত জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্য বেশি দেখা যায়,