০৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এম.এইচ মেনান,নীলফামারী :

নীলফামারীর কচুকাটায় টিআর-কাবিটা প্রকল্পে উন্নয়নের ছোঁয়া

  • প্রকাশিত ০২:০৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ৩২ বার দেখা হয়েছে

নীলফামারী সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা), রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এসব প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের বিভিন্ন ধর্মীয়,শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান,রাস্তাঘাট সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। এতে করে এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের কামারপাড়া হতে পাতুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। সেখানে প্রায় বিশ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানও হয়েছে। তারা ভাঙ্গা রাস্তার মাটি কেটে সমান করছে। এরপর ট্রাক্টরের মাধ্যমে অন্য স্থান থেকে মাটি এনে রাস্তায় ভড়াট করছে। এছাড়াও ইউনিয়নের টিআর মোট সাতটি প্রকল্পের পনের লক্ষ দশ হাজার সাতত্রিশ টাকা, কাবিখার একটি প্রকল্পে সাত দশমিক নয়শত মেঃটন গম এবং কাবিটার দুইটি প্রকল্পে তেইশ লক্ষ দশ হাজার টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে কিছু প্রকল্পের কাজ শেষও হয়েছে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জান গেছে, এই অর্থবছরে সদর উপজেলার পনেরটি ইউনিয়নে কাবিখার মোট ১৮ টি  প্রকল্পে ১৩৬.৩২৬১ মেট্রিকটন গম, ৩৭ টি কাবিটা প্রকল্পের বিপরীতে ১কোটি ৯০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৯ টাকা,৯২ টি টিআর প্রকল্পের বিপরীতে ১কোটি ৭০ লাখ ২৯ হাজার ৬৩৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। জুন মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে।

এলাকাবাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে টিআর-কাবিটা প্রকল্পের ছোঁয়া লেগেছে। যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

রাস্তার সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মেছের আলীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, কচুকাটা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া হতে পাতুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির কোথাও উচু কোথাও নিচু। উচু রাস্তা কেটে আমরা সমান করছি। কাজ শেষ হলে রাস্তাটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগবে। পাশাপাশি চলাচলেরও সুবিধা হবে।

ইউপি সদস্য মোশফিকুর রহমান মুশু বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশা ছিল এবং উচু-নিচু থাকায় বর্ষার পানিতে তলিয়ে যেত । এখন রাস্তাটি উচু করায় বর্ষা মৌসুমে চলাচলে আর কোন সমস্যা হবে না।

দেখা যায়, কচুকাটা উত্তরপাড়া আশরাফ আলীমের বাড়ি থেকে কবিরাজ পাড়া পর্যন্ত রাস্তাটির সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় ভ্যান চালক জলিল ও ভুট্টা ব্যাবসায়ী হাফিজার রহমান বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। আগে রাস্তাটি অনেক ভাঙ্গা ছিল। রাস্তায় মাটি ভড়াট করার পর আমরা অনেকটাই স্বস্তিতে আছি।

এছাড়াও ইউনিয়নটির বিভিন ওয়ার্ডে ব্রীজ সংস্কার, পানি নিষ্কাশনের জন্য ইউড্রেন ও রাস্তা এইচবিবিকরণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।

কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুর রউফ চৌধূরী বলেন, টিআর-কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় কচুকাটা ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে ব্রীজ-কালভার্ড, ইউড্রেনসহ বিভিন্ন কাজ চলমান। আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে গুরুত্বের সাথে এসব কাজ করছি। এতেকরে ইউনিয়নের গ্রামীণ কাচা রাস্তাগুলোর দৃশ্য পাল্টে গেছে, গ্রাম এখন শহরের রূপ নিচ্ছে।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে। কোনো প্রকল্পের সম্পূর্ণ বিল ছাড় করা হয়নি। নির্ধারিত কাজ শেষ হলেই কেবল চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হবে।

নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। এখানে কোনো ধরণের অনিয়মের সুযোগ নেই। শতভাগ কাজ ‍বুঝে না পেলে সম্পূর্ণ বিল প্রদান করা হবে না।

Tag :
জনপ্রিয়

রাজউকের মোবাইল কোর্টের সংবাদ সংগ্রহ করায় গনমাধ্যম কর্মীকে আঘাত

এম.এইচ মেনান,নীলফামারী :

নীলফামারীর কচুকাটায় টিআর-কাবিটা প্রকল্পে উন্নয়নের ছোঁয়া

প্রকাশিত ০২:০৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

নীলফামারী সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা), রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এসব প্রকল্পের আওতায় ইউনিয়নের বিভিন্ন ধর্মীয়,শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান,রাস্তাঘাট সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। এতে করে এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের কামারপাড়া হতে পাতুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। সেখানে প্রায় বিশ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানও হয়েছে। তারা ভাঙ্গা রাস্তার মাটি কেটে সমান করছে। এরপর ট্রাক্টরের মাধ্যমে অন্য স্থান থেকে মাটি এনে রাস্তায় ভড়াট করছে। এছাড়াও ইউনিয়নের টিআর মোট সাতটি প্রকল্পের পনের লক্ষ দশ হাজার সাতত্রিশ টাকা, কাবিখার একটি প্রকল্পে সাত দশমিক নয়শত মেঃটন গম এবং কাবিটার দুইটি প্রকল্পে তেইশ লক্ষ দশ হাজার টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে কিছু প্রকল্পের কাজ শেষও হয়েছে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জান গেছে, এই অর্থবছরে সদর উপজেলার পনেরটি ইউনিয়নে কাবিখার মোট ১৮ টি  প্রকল্পে ১৩৬.৩২৬১ মেট্রিকটন গম, ৩৭ টি কাবিটা প্রকল্পের বিপরীতে ১কোটি ৯০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫৯ টাকা,৯২ টি টিআর প্রকল্পের বিপরীতে ১কোটি ৭০ লাখ ২৯ হাজার ৬৩৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। জুন মাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে।

এলাকাবাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে টিআর-কাবিটা প্রকল্পের ছোঁয়া লেগেছে। যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা ও ব্যবসাসহ বিভিন্ন সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

রাস্তার সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মেছের আলীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, কচুকাটা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া হতে পাতুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির কোথাও উচু কোথাও নিচু। উচু রাস্তা কেটে আমরা সমান করছি। কাজ শেষ হলে রাস্তাটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগবে। পাশাপাশি চলাচলেরও সুবিধা হবে।

ইউপি সদস্য মোশফিকুর রহমান মুশু বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশা ছিল এবং উচু-নিচু থাকায় বর্ষার পানিতে তলিয়ে যেত । এখন রাস্তাটি উচু করায় বর্ষা মৌসুমে চলাচলে আর কোন সমস্যা হবে না।

দেখা যায়, কচুকাটা উত্তরপাড়া আশরাফ আলীমের বাড়ি থেকে কবিরাজ পাড়া পর্যন্ত রাস্তাটির সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় ভ্যান চালক জলিল ও ভুট্টা ব্যাবসায়ী হাফিজার রহমান বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। আগে রাস্তাটি অনেক ভাঙ্গা ছিল। রাস্তায় মাটি ভড়াট করার পর আমরা অনেকটাই স্বস্তিতে আছি।

এছাড়াও ইউনিয়নটির বিভিন ওয়ার্ডে ব্রীজ সংস্কার, পানি নিষ্কাশনের জন্য ইউড্রেন ও রাস্তা এইচবিবিকরণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।

কচুকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুর রউফ চৌধূরী বলেন, টিআর-কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় কচুকাটা ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট থেকে শুরু করে ব্রীজ-কালভার্ড, ইউড্রেনসহ বিভিন্ন কাজ চলমান। আমি নিজে দাড়িয়ে থেকে গুরুত্বের সাথে এসব কাজ করছি। এতেকরে ইউনিয়নের গ্রামীণ কাচা রাস্তাগুলোর দৃশ্য পাল্টে গেছে, গ্রাম এখন শহরের রূপ নিচ্ছে।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে। কোনো প্রকল্পের সম্পূর্ণ বিল ছাড় করা হয়নি। নির্ধারিত কাজ শেষ হলেই কেবল চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হবে।

নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। এখানে কোনো ধরণের অনিয়মের সুযোগ নেই। শতভাগ কাজ ‍বুঝে না পেলে সম্পূর্ণ বিল প্রদান করা হবে না।