০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিবারের দাবি, চাঁদা না দেয়ায় লক্ষ্মীপুরে সাইজ উদ্দিনকে হত্যা

  • প্রকাশিত ০৪:২২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫ বার দেখা হয়েছে

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মী প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ানকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় বিএনপি নেতাসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় অভিযুক্তরা সাইজ উদ্দিনকে প্রথমে গুলি ও পরে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এদিকে সাইজ উদ্দিন দেওয়ানের মৃত্যুতে তার দুই ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী নার্গিস আক্তার অসহায় হয়ে পড়েছেন। চোখে ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন। ছুটি শেষে শনিবার (১২ এপ্রিল) সাইজ উদ্দিন স্পেন যাওয়ার কথা ছিল। স্পেন থেকে ভিসা পেলে স্ত্রী-সন্তানকেও এ বছর সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ৭ এপ্রিল তাকে হত্যা করা হয়। সাইজ উদ্দিনকে গুলি করে পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাকে ঘণ্টাব্যাপী আটকে রাখা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইজ উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার, বড় ভাই হানিফ দেওয়ান, বড় ছেলে নিখন হোসেন ও ছোট ছেলে নাসিম হোসেনসহ স্বজনরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাইজ উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বলেন, “আমারতো এতো তাড়াতাড়ি স্বামী হারানোর কথা ছিল না। আমার ছেলেরা এতিম হয়ে গেল, তাদের দায়িত্ব নেবে কে। আমরাতো একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখছিলাম। স্পেন গিয়ে আমাদের নতুন করে জীবনযাপন শুরু করার কথা ছিল। ফারুক কবিরাজ-মেহেদী কবিরাজরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড চাই।”

সাইজ উদ্দিনের বড় ভাই হানিফ দেওয়ান বলেন, “ফারুক কবিরাজের অনুসারী ফারুক গাজি রমজানে একদিন এসে সাইজ উদ্দিনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। ওই টাকা না দেওয়ায় সাইজ উদ্দিনের ওপর তারা ক্ষিপ্ত ছিল। শ্বশুর বাড়ি থেকে আসার পথে তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেয়। হাত-পা ধরলেও তারা ছাড়েনি। পরে থানা থেকে পুলিশ এলে তারা ছেড়ে দেয়। এরপরও ভাইকে বাঁচাতে পারিনি।”

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে নিহতের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ ও তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।”
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর

Tag :
জনপ্রিয়

পরিবারের দাবি, চাঁদা না দেয়ায় লক্ষ্মীপুরে সাইজ উদ্দিনকে হত্যা

প্রকাশিত ০৪:২২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরে বিএনপি কর্মী প্রবাসী সাইজ উদ্দিন দেওয়ানকে (৪০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় বিএনপি নেতাসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় অভিযুক্তরা সাইজ উদ্দিনকে প্রথমে গুলি ও পরে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এদিকে সাইজ উদ্দিন দেওয়ানের মৃত্যুতে তার দুই ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী নার্গিস আক্তার অসহায় হয়ে পড়েছেন। চোখে ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছেন। ছুটি শেষে শনিবার (১২ এপ্রিল) সাইজ উদ্দিন স্পেন যাওয়ার কথা ছিল। স্পেন থেকে ভিসা পেলে স্ত্রী-সন্তানকেও এ বছর সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ৭ এপ্রিল তাকে হত্যা করা হয়। সাইজ উদ্দিনকে গুলি করে পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করা হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাকে ঘণ্টাব্যাপী আটকে রাখা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইজ উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার, বড় ভাই হানিফ দেওয়ান, বড় ছেলে নিখন হোসেন ও ছোট ছেলে নাসিম হোসেনসহ স্বজনরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাইজ উদ্দিনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বলেন, “আমারতো এতো তাড়াতাড়ি স্বামী হারানোর কথা ছিল না। আমার ছেলেরা এতিম হয়ে গেল, তাদের দায়িত্ব নেবে কে। আমরাতো একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখছিলাম। স্পেন গিয়ে আমাদের নতুন করে জীবনযাপন শুরু করার কথা ছিল। ফারুক কবিরাজ-মেহেদী কবিরাজরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড চাই।”

সাইজ উদ্দিনের বড় ভাই হানিফ দেওয়ান বলেন, “ফারুক কবিরাজের অনুসারী ফারুক গাজি রমজানে একদিন এসে সাইজ উদ্দিনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। ওই টাকা না দেওয়ায় সাইজ উদ্দিনের ওপর তারা ক্ষিপ্ত ছিল। শ্বশুর বাড়ি থেকে আসার পথে তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেয়। হাত-পা ধরলেও তারা ছাড়েনি। পরে থানা থেকে পুলিশ এলে তারা ছেড়ে দেয়। এরপরও ভাইকে বাঁচাতে পারিনি।”

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে নিহতের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ ও তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।”
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর