সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গোপনে সংগঠিত হয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা এবং রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার অভিযোগে পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের ৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া বাদী হয়ে গত ২৬ জুন মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, সরকার ১২ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের সকল দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর পরও ২৬ জুন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ী ইউনিয়নের বজরা বাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি বাড়িতে দলীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের আয়োজন চলছে।
তথ্যমতে, ওই বাড়িটি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাইমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তার মালিকানাধীন। সেখানে তার স্ত্রী ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মৌসুমীর নেতৃত্বে প্রায় ১১০-১২০ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজনে কেক কাটা, স্লোগান জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, খাবার বিতরণ এবং নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি দলীয় উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয় বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ওই অনুষ্ঠানটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামীলীগ নিউজ বিডি পেইজে প্রচার করা হয়, যা জনমনে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাত, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, অভিযান পরিচালনার সময় অভিযুক্তরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাইমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা, যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মুক্তার স্ত্রী কাজী মৌসুমী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু তোয়াবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া খাতুন, যুব মহিলা লীগ জেলা সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর উজ্জ্বল, সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আমিরুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আল তারেক, পৌর যুবলীগ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর হাসনাত মোহাম্মদ হামিদুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শেখ মিলন, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি সুজাউদ দৌলা সুজা, সদর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মামুনুর রশিদ লায়ন সহ মামলায় আরও ৩৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ হিল জামান বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
বদরুদ্দোজা প্রধান - পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ে নিষিদ্ধ দলীয় কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগসহ ৪৭ নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা
Tag :
জনপ্রিয়