তথ্যপ্রযুক্তি সাহিত্যে দীর্ঘদিনের লেখালেখি ও বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ খ্যাতনামা ব্রডকাস্ট গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও লেখক এস কে মনোয়ার নাহিদ পেয়েছেন সাউথ এশিয়া সিনে গোল্ডেন স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ৬ জুলাই ২০২৫, ঢাকার মতিঝিলস্থ দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা এর কার্যালয়ে। সাউথ এশিয়া সাহিত্য পরিষদ ও সুন্দরবন সাহিত্য সাংস্কৃতিক পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সম্মাননা তুলে দেন দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা-র উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান এম ইব্রাহিম পাটোয়ারী এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়কারী ও দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা-র সিনিয়র রিপোর্টার মোঃ আজগর হোসেন।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি স্বতন্ত্র জুরি বোর্ড গঠন করা হয়। এই জুরি বোর্ড মনোনীতদের মূল্যায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয় তাঁদের দীর্ঘমেয়াদি সাহিত্যচর্চা ও লেখালেখির প্রভাব, প্রকাশনার মান ও সংখ্যা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পরিবেশবিষয়ক উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা, সমাজে তাঁদের কাজের ইতিবাচক প্রভাব এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তাঁদের অবদানের বিস্তারকে। বিভিন্ন ধাপের যাচাই-বাছাই, সম্মিলিত মতামত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়।
১৯৮৭ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে খুলনার “দৈনিক পূর্বাঞ্চল” পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এস কে মনোয়ার নাহিদের প্রথম কবিতা ‘বৃষ্টি’, যা তাঁর সৃজনশীল যাত্রার সূচনা হিসেবে বিবেচিত। সেই শিশুকবি আজ একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রযুক্তিনির্ভর সাহিত্যিক।
বাংলাদেশের টেলিভিশন সম্প্রচার শিল্পে তাঁর ১৭ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন আরটিভি, যমুনা টিভি, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি ও চ্যানেল ২৪-এ। ডিজাইন, নির্বাচনী সম্প্রচার কাভারেজ ও বর্ধিত বাস্তবতা প্রযুক্তির সৃজনশীল প্রয়োগের মাধ্যমে টেলিভিশন গ্রাফিক্সে এনেছেন নতুন মাত্রা।
তাঁর লেখা “টেলিভিশন সম্প্রচার শিল্পে সৃজনশীলদের ভূমিকা” বইটি তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল মিডিয়ার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। বইটিতে তিনি আধুনিক সম্প্রচার প্রযুক্তি, ডিজাইনের ভবিষ্যৎ ও মিডিয়া শিক্ষায় উদ্ভাবনী প্রয়োগের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
তথ্যপ্রযুক্তির পাশাপাশি পরিবেশবিষয়ক সাহিত্যেও রয়েছে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান। “পৃথিবীর রক্ষক: টেকসই ভবিষ্যতের সহজ পদক্ষেপ” বইটিতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য অভ্যাস এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলেছেন। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অনুযায়ী বইটির বিষয়বস্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
এর আগে পরিবেশবিষয়ক লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন সুন্দরবন বেঙ্গল স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫। এছাড়া তিনি ভূষিত হয়েছেন স্টার বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, শের-ই-বাংলা স্টার অ্যাওয়ার্ড, ও এক্সেলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড-এ, যা বাংলাদেশের টেলিভিশন গ্রাফিক্স ও প্রযুক্তিনির্ভর সৃজনশীলতায় তাঁর দীর্ঘ অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাঁর সাফল্য প্রশংসনীয়। তিনি এশিয়ান বিজনেস আইকনিক অ্যাওয়ার্ড ২০২৫-এ ‘ব্রডকাস্ট ও ভিজ্যুয়াল গ্রাফিক্স’-এ সৃজনশীল নেতৃত্বের জন্য সম্মানিত হন। এছাড়া নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সম্প্রচার সম্মেলন (আইবিসি)-এ অংশ নিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার ব্র্যান্ড অ্যাডোবি এবং সম্প্রচার প্রযুক্তি সংস্থার পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা অর্জন করেন—যা তাঁর উদ্ভাবনী দক্ষতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
বর্তমানে তিনি পাঠশালা – দক্ষিণ এশিয়া মিডিয়া ইনস্টিটিউট-এ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠিত ডিজাইনকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান সফলভাবে বাংলাদেশ, পর্তুগাল, যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাই-এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
এস কে মনোয়ার নাহিদের এই স্বীকৃতি শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিবেশ ভাবনায় বাংলাদেশের নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরার গৌরবময় দৃষ্টান্ত।
০৯:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
মোঃ আজগর হোসেন সিনিয়র রিপোর্টার :
তথ্যপ্রযুক্তি সাহিত্যে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি পেলেন এস কে মনোয়ার নাহিদ
Tag :
জনপ্রিয়