পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানিয়া উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরবেশ্বর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ও তার ভাবি মৌলি বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় সন্ত্রাসীরা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। শুক্রবার (২৮ জুন) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা জানাই গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা তাদের বাড়িতে ঢুকে আতঙ্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় সাবেক ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে। তাকে বাঁচাতে তার ভাইয়ের স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় নিহত শহীদুলের স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত যখন করে ।
পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে রেহেনা বেগমকে মু’মূর্ষু অবস্থায় পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার অবস্থা অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক । নিহত শহিদুল ইসলাম পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন সেচ্চাসেবকলীগ এর সাবেক আহবায়ক চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর ইউপি সদস্য, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার কল্যান এসোসিয়েশন এর ইন্দুরকানী উপজেলার সহ সভাপতি ছিলেন।
ইন্দুরকানীতে নিজ বাড়ির উঠানে ইউপি সদস্য ও ভাবিকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা; স্ত্রী গুরুতর জখম
ঘটনার বিবরণী জানা যায় নিহত শহিদুল ইসলাম চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম চরবেশ্বর ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য এবং ঐ গ্রামের মৃত মোসলেম আলী হাওলাদারের ছেলে। তার আপন বড় ভাই মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান হাওলাদার চন্ডিপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি এবং মেজ ভাই মনিরুজ্জামান সেলিম উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মোবাইলে কথা বলার সময় ঘরে নেটওয়ার্কের সমস্যা দেখা দেওয়ায় বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ে মোবাইলে কথা বলতে ছিলেন ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি পুকুর ঘাটে দাঁড়িয়ে মাছের খাবার দেন। তখন ঘরের আশপাশে ওৎপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার উপর হঠাৎ করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলোপাথারি কোপাতে শুরু করে। ঘটনার সময় তার ছোট মেয়ে তহা সাথে ছিলেন। পিতাকে রক্ষা করতে সামনে এলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় খুনিরা।
এ অবস্থায় স্বামী ও মেয়ের ডাক চিৎকার শুনে তার স্ত্রী রেহেনা বেগম ঘর থেকে বেরিয়ে তাকে রক্ষা করতে এলে দুজনকেই নৃশংসভাবে ভাবে কুপিয়ে বাড়ির উঠানে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা। এরপর শহিদুলের ভাবি মুকুল বেগম বাইরে এলে তাকেও বাড়ির উঠানের সামনে রাস্তায় ফেলে এলোপাতারি কুপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। পরে আশপাশের লোকজন এসে তিনজনকেই বাড়ির উঠানে কাদা পানির মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ও তার ভাবি মুকুল বেগম ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং শহিদুলের স্ত্রী রেহেনা বেগমকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাঝ রাতে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সকাল পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি বলে জানা যায়।
এদিকে এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে পিরোজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ইন্দুরকানি থানার ওসি মোঃ মারুফ হোসেন সহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের শ্যালক মিজান মাঝী মোবাইলে জানান, রাতে আমরা খবর পেলাম আমার দুলাভাই ও তার ভাবিকে দূর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেছে এবং বোনকেও এলোপাথারি কুপিয়ে মারাত্বক জখম করা হয়েছে। কিন্তু কেন এমন নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটলো তা বুঝে উঠতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: মারুফ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ির উঠানে ইউপি সদস্য ও তার ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ইউপি সদস্যের স্ত্রী
রেহেনা বেগম গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ হত্যাকান্ডের রফিকুল নামের একজনকে পুলিশ রাতে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য আটক করে। এছাড়া
রহস্য উদঘাটন এবং খুনীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর থাকবে বলে তিনি জানান।