মোঃ আমির হোসেন,
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী,
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় টহলরত অবস্থায় বজ্রপাতে রিয়াদ হোসেন (৩২) নামের এক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ছাটকড়াইবাড়ী-ধর্মপুর আন্তর্জাতিক সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আরও চারজন সদস্য আহত হন, যাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহত রিয়াদ হোসেন জামালপুরের ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন দাঁতভাঙ্গা বিওপিতে (বর্ডার আউটপোস্ট) কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার দিয়ারা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে। পিতার নাম আবদুল লতিফ। দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দাঁতভাঙ্গা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আবদুল হালিম।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রাতের টহলের অংশ হিসেবে একটি টহলদল ছাটকড়াইবাড়ী-ধর্মপুর সীমান্তে অবস্থান করছিল। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে রিয়াদ হোসেন গুরুতরভাবে আহত হন। সঙ্গে থাকা অন্য চারজন—হাবিলদার মো. জসিম (৫২), সিপাহি নাদিম (২৮), সিপাহি শাহীন (২৮) ও আনসার সদস্য ফেরদৌস হোসেন (৩৬)—বজ্রপাতে আহত হন।
তাঁদের প্রথমে উদ্ধার করে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় থাকা দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. নবিউল ইসলাম বলেন, “বজ্রাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় একজন বিজিবি সদস্যকে হাসপাতালে আনা হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকিদের মধ্যে দুজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান বলেন, “সীমান্তে দায়িত্বরত অবস্থায় বজ্রপাতে এক বিজিবি সদস্যের মৃত্যু ও চারজন আহত হওয়ার বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।”
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও সরঞ্জামের দাবি তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।