০৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫০ বছরে কনকর্ড গ্রুপ এখন নির্মাণ শৈলী নিয়ে গ্লোবাল ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত

  • প্রকাশিত ০৭:২৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • ১২ বার দেখা হয়েছে

রাজু আলীম : যখন একটি শহর মাথা তোলে, আকাশ ছুঁতে চায়, তখন তা নিছক ইট, পাথর আর কংক্রিটের জটিলতা থাকে না। তাতে মিশে যায় সময়, সংগ্রাম, স্বপ্ন আর দৃঢ়তা। ঢাকার দিকে তাকালে আজ আমরা যে শহরটিকে দেখি—সুউচ্চ ভবনের অসংখ্য রূপরেখা, প্রতিটি কোণে আধুনিকতার আভাস—এই রূপান্তরের পেছনে এক দীর্ঘ ইতিহাস কাজ করে গেছে নীরবে, যেমনটি কাজ করেছে কনকর্ড। এটি কেবল একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এক নতুন দেশের আত্মপ্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়ে, ১৯৭৩ সালে, যখন জাতি নিজের ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে পুনরায় উঠে দাঁড়াতে চাইছে, তখন যাত্রা শুরু করে কনকর্ড। যুদ্ধবিধ্বস্ত সেতু মেরামত করে তারা বুঝিয়ে দেয়, নতুন করে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন বাংলাদেশ ধারণ করছে, সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে যারা এগিয়ে এসেছে, কনকর্ড তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭৫ সালে এস এম কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি পায় তার কাঠামোগত পরিচয় এবং একটি স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু হয় এক দীর্ঘ পথচলা।

নগরের অবয়ব কেবল রাস্তা, ভবন কিংবা ব্রিজ দিয়ে গঠিত হয় না; তাতে থাকে সময়ের ছাপ, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। কনকর্ড তার প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে এই সময়েরই সাক্ষ্য রেখেছে। মতিঝিলে শিল্প ব্যাংক ভবন, বাংলাদেশের প্রথম উচ্চতর অট্টালিকা হিসেবে শুধু একটি স্থাপত্য কীর্তি নয়, বরং আধুনিক অর্থনীতির যাত্রার একটি চিহ্ন হয়ে ওঠে। এটি সেই সময়, যখন শহর হিসেবে ঢাকার এক নতুন পরিচয় তৈরি হচ্ছিল—একটি আত্মবিশ্বাসী রাজধানী, উন্নয়নশীল বিশ্বের সম্ভাবনাময় কেন্দ্র।

তবে যে নির্মাণটি কনকর্ডের অস্তিত্বকে জাতীয় চেতনার সঙ্গে যুক্ত করে, সেটি হলো জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ১৯৮২ সালে নির্মিত এই সৌধের প্রতিটি স্তম্ভ শুধু শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নয়, বরং আমাদের সামষ্টিক ইতিহাসের ধারক। কনকর্ড মাত্র ৮৯ দিনে এই মহাকীর্তির বাস্তবায়ন সম্পন্ন করে, যা নির্মাণ দক্ষতা ও অঙ্গীকারের এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

পরিবেশ, স্থায়িত্ব এবং ভবিষ্যৎ—এই তিনটি শব্দ আজ উন্নয়ন-ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু হলেও কনকর্ড এই দর্শনের অনুশীলন শুরু করেছিল অনেক আগেই। ১৯৯৮ সালে, যখন অধিকাংশ নির্মাতা চিমনির ইটের বিকল্প চিন্তাই করছিল না, তখন কনকর্ড চালু করে পরিবেশবান্ধব গ্রীন ব্রিক প্রযুক্তি। এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পরিবেশ সচেতনতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সময়ের পরিক্রমায় যখন সরকারই এখন আগুনে পোড়া ইট থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, তখন বোঝা যায়—কনকর্ড শুধু সময়ের সঙ্গে চলেনি, বরং সময়কে পথ দেখিয়েছে।

তাদের নির্মাণ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল না শুধুমাত্র আবাসিক বা অফিস ভবনে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে কনকর্ড রেখে গেছে তার স্বাক্ষর। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চট্টগ্রাম, আইডিবি ভবন, জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়াম, ব্রিটিশ হাইকমিশন—প্রতিটি প্রকল্পে প্রতিফলিত হয়েছে দক্ষতা ও উচ্চমান। এসব ভবন শুধু নির্মাণশৈলীর নিদর্শন নয়, বরং তারা অর্থনৈতিক গতিশীলতার সহায়ক কাঠামো।

মানুষের আবাসন চাহিদা মেটাতে কনকর্ড গড়ে তুলেছে হাজার হাজার অ্যাপার্টমেন্ট। প্রতিটি আবাসন যেন একেকটি গল্পের পাতা—যেখানে জন্মদিন উদযাপন হয়, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি হয়, এবং প্রতিবেশী থেকে তৈরি হয় এক নির্ভরতার সম্পর্ক। কনকর্ড কেবল ভবন তৈরি করেনি, গড়ে তুলেছে সম্পর্কের জাল, তৈরি করেছে বসবাসযোগ্য নগরের ভিত্তি।
২০০২ সালে, যখন বাংলাদেশে থিম পার্ক ছিল এক অলীক কল্পনা, তখন কনকর্ড চালু করে ফ্যান্টাসি কিংডম—একটি রঙিন জগত, যেখানে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের শিশুরা রোলার কোস্টারের স্বাদ পায়, পরিবার পায় একটি আনন্দময় অবকাশ। এরপর চট্টগ্রামে ফয়’স লেক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করে, বিনোদনের আধুনিক ধারণার সঙ্গে একীভূত করে।

একটি প্রতিষ্ঠানের পরিধি যখন বহুমাত্রিক হয়, তখন তার চরিত্রও হয়ে ওঠে বহুবর্ণ। কনকর্ড শুধু নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; তারা বিস্তৃত হয়েছে পর্যটন, স্থাপত্য ডিজাইন, যোগাযোগ এবং নাগরিক উন্নয়নের প্রতিটি স্তরে। প্রতিটি ক্ষেত্রে একই দৃষ্টিভঙ্গি—উদ্ভাবন, গুণমান এবং দায়িত্ব।

২০২৫ সালের ১০ জুলাই, কনকর্ড উদযাপন করেছে তার ৫০ বছরের ঐতিহাসিক পথচলা। অনুষ্ঠানটি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ছিল একটি কর্মজীবনের সম্মান, একটি কৃতজ্ঞ জাতির শ্রদ্ধা এবং ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারের প্রকাশ। ভাইস চেয়ারপারসন ফারিদা কামাল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার কামাল এবং পরিচালক নাজিয়া করিশমা কামালের নেতৃত্বে কনকর্ডের কর্মীরা এই উৎসবে অংশ নেন, যেন এটি হয়ে ওঠে কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, একটি পরিবারেরও উৎসব।

এই দীর্ঘ সময় ধরে কনকর্ড যা করেছে, তা নিছক ব্যবসায়িক সাফল্য নয়। এটি একটি দেশের পুনর্গঠন, একটি জাতির স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার অংশীদার হয়ে ওঠার গল্প। কনকর্ডের প্রতিটি প্রজেক্টে আমরা দেখতে পাই উন্নয়ন কেমন হতে পারে, যদি তাতে থাকে নৈতিকতা, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব।

৫০ বছর পার করে এখন কনকর্ড দাঁড়িয়ে নতুন এক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে। চ্যালেঞ্জ আসবে, সময় বদলাবে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির যে অঙ্গীকার—একটি উন্নত, বাসযোগ্য, সম্মানজনক বাংলাদেশের নির্মাণ—তা আগের মতোই অটল থাকবে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কনকর্ড নতুন করে শপথ নেয়, যেন আগামী ৫০ বছরও হয়ে ওঠে সমান গৌরবময়, সমান সৃষ্টিশীল এবং মানুষের জন্য নিবেদিত।

২০১৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, এস এম কামাল উদ্দিনে পুত্র শাহরিয়ার কামাল কথা বলেছেন কনকর্ডের ৫০ বছরের অগ্রযাত্রা নিয়ে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যায় থেকে পড়াশোনা শেষে ২০১৬ সাল থেকে গ্রুপটির পরিচালক হিসেবে নেতৃত্ব দেয়া শাহরিয়ার কামাল গুলশানের কনকর্ড সেন্টারে এক সাক্ষাৎকারে কনকর্ডের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে কনকর্ড দেশের আবাসন খাতের একটি আস্থার ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরে অনেক কোম্পানি এসেছে এবং হারিয়ে গেছে; কিন্তু কনকর্ড সবসময় টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে, বড় ধরনের উত্থান-পতন দেখেনি। হঠাৎ বড় হওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের চেয়ারম্যান শুরু থেকেই সততা, নিষ্ঠা ও সুশাসনের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন যে মানুষের আস্থা অর্জন করতে অনেক সময় লাগে; কিন্তু তা হারাতে পাঁচ মিনিটও লাগে না। তাই যেকোনো প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে আমরা অনেক কিছু চিন্তা করি, যার কারণে গ্রাহকের কাছ থেকে খুব বেশি অভিযোগ আসে না।

শাহরিয়ার কামাল জানান, কনকর্ড শুরু করেছিলো চার কর্মী নিয়ে, আর এখন তাদের কর্মীসংখ্যা প্রায় দুই হাজার। তিনি বলেন, “আমাদের চেয়ারম্যানের একটি স্বপ্ন ছিলো যা একা বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল না। এর জন্য নিবেদিত কর্মী প্রয়োজন এবং আমরা তাদের পেয়েছি। আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো কর্মীবাহিনী। যেকোনো সংকটে কর্মীরা পাশে ছিলেন। আজকের কনকর্ড গ্রুপের এই পর্যায়ে আসার পেছনে কর্মীদের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা কর্মীদের সব ধরনের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করি। ৫০ বছর পূর্তিতে নতুন কিছু সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে কর্মীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া কর্মরত অবস্থায় কোনো কর্মী মারা গেলে ছয় মাস পর্যন্ত পরিবারকে বেতনের সমপরিমাণ সুবিধা দেওয়া হবে এবং বিশেষ বোনাসও প্রদান করা হচ্ছে।”

তিনি কনকর্ডের ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকেও আলোকপাত করেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে যেকোনো ব্যবসা থেমে যাবে। আমরা শুরু করেছিলাম ভবন নির্মাণ, ব্রিজ নির্মাণ দিয়ে। পরে বহুতল ভবন তৈরি করি। বিমানবন্দর, ইনডোর স্টেডিয়ামের মতো বড় প্রকল্প সম্পন্ন করার পর বুঝতে পারি যে জমির ওপর ভবন নির্মাণ একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। ফলে বাংলামোটর ও গুলশানে আমরা প্রথম অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং তৈরি করি। ১৯৭৮-৭৯ সালে গুলশানে প্রথম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করি, যখন সবাই বলেছিল মতিঝিল ছেড়ে গুলশানে কেউ অফিস খুলবে না। আমাদের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ছিল ব্যবসা যেন নির্দিষ্ট কোনো খাতে সীমাবদ্ধ না থাকে। তাই আমরা বিলাসবহুল প্রকল্পের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য লেক সিটির মতো প্রকল্পও করেছি। একই সঙ্গে টেকসই নির্মাণের দিকে মনোযোগ দিয়েছি।

পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগের কথাও স্মরণ করেন শাহরিয়ার কামাল। “পোড়ামাটির ইটের কারণে প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষি জমি হারাচ্ছি। ২০০০ সাল থেকে আমরা পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন শুরু করি যা আমাদের সব প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়। এখন সরকারও সব প্রকল্পে এই ইট ব্যবহার করছে। পাশাপাশি সুস্থ বিনোদনের জন্য থিম পার্ক নির্মাণ করেছি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমাদের আটটি পার্ক, গো-কার ও হোটেল রয়েছে। নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছি। তবে ব্যবসার ৫০-৬০ শতাংশ এখনো আবাসন খাতকেন্দ্রিক।

বর্তমান আবাসন খাতের অবস্থা নিয়ে শাহরিয়ার কামাল বলেন, আবাসন ব্যবসার গতি বর্তমানে বেশ কমে গেছে। এটি পুরো অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। যেমন আমেরিকায় আবাসন খাত ভালো করলে অর্থনীতি ভালো হয়, তেমনি আমাদের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে আবাসন ঋণের সুদহার ১৪-১৫ শতাংশে উঠেছে এবং জমির দাম অনেক বেড়ে গেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আবাসন খাতে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, যার ফলে নতুন প্রকল্প গ্রহণ কমে গেছে। সিমেন্ট ও রডের বিক্রি কমে যাওয়াও এ বিষয়ের প্রমাণ। তবে এই পরিস্থিতিকেও আমরা একটি সুযোগ হিসেবে দেখি। চলতি বছর ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমরা ১০টি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। মানুষ এখন বিশ্বাসযোগ্য আবাসন নির্মাতা খুঁজছে, যেখানে তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ থাকবে।
শাহরিয়ার কামাল তার বাবা এস এম কামালউদ্দিনের মানসিকতা ও ব্যবসায় নীতি তুলে ধরেন। “আমাদের চেয়ারম্যানের মূলমন্ত্র ছিল সততা, নিষ্ঠা ও সুশাসন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষের আস্থা অর্জন করতে অনেক সময় লাগে, হারাতে খুব কম সময় লাগে। এজন্য ব্যবসার প্রতিটি পদক্ষেপে সততা ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা খুব জরুরি। এটি আমাদের কোম্পানির টেকসই উন্নতির মূল চাবিকাঠি।

শাহরিয়ার কামালের কথায় স্পষ্ট, কনকর্ড গ্রুপের ৫০ বছরের যাত্রা শুধুমাত্র ভবন নির্মাণ নয়, এটি ছিল আস্থা ও মানসম্পন্ন সেবার প্রতীক। কর্মীদের প্রতি যত্ন, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং সর্বোপরি সততা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে কনকর্ড দেশের আবাসন খাতে একটি আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে। বর্তমান সংকটের মধ্যেও তারা নতুন সুযোগ সৃষ্টির প্রত্যয়ে অগ্রসর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক সংকেত বহন করে।

Tag :
জনপ্রিয়

গাঁজা ও পিকআপসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেফতার

৫০ বছরে কনকর্ড গ্রুপ এখন নির্মাণ শৈলী নিয়ে গ্লোবাল ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত

প্রকাশিত ০৭:২৮:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

রাজু আলীম : যখন একটি শহর মাথা তোলে, আকাশ ছুঁতে চায়, তখন তা নিছক ইট, পাথর আর কংক্রিটের জটিলতা থাকে না। তাতে মিশে যায় সময়, সংগ্রাম, স্বপ্ন আর দৃঢ়তা। ঢাকার দিকে তাকালে আজ আমরা যে শহরটিকে দেখি—সুউচ্চ ভবনের অসংখ্য রূপরেখা, প্রতিটি কোণে আধুনিকতার আভাস—এই রূপান্তরের পেছনে এক দীর্ঘ ইতিহাস কাজ করে গেছে নীরবে, যেমনটি কাজ করেছে কনকর্ড। এটি কেবল একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান নয়, বরং এক নতুন দেশের আত্মপ্রতিষ্ঠার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়ে, ১৯৭৩ সালে, যখন জাতি নিজের ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে পুনরায় উঠে দাঁড়াতে চাইছে, তখন যাত্রা শুরু করে কনকর্ড। যুদ্ধবিধ্বস্ত সেতু মেরামত করে তারা বুঝিয়ে দেয়, নতুন করে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন বাংলাদেশ ধারণ করছে, সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে যারা এগিয়ে এসেছে, কনকর্ড তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭৫ সালে এস এম কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি পায় তার কাঠামোগত পরিচয় এবং একটি স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু হয় এক দীর্ঘ পথচলা।

নগরের অবয়ব কেবল রাস্তা, ভবন কিংবা ব্রিজ দিয়ে গঠিত হয় না; তাতে থাকে সময়ের ছাপ, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। কনকর্ড তার প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে এই সময়েরই সাক্ষ্য রেখেছে। মতিঝিলে শিল্প ব্যাংক ভবন, বাংলাদেশের প্রথম উচ্চতর অট্টালিকা হিসেবে শুধু একটি স্থাপত্য কীর্তি নয়, বরং আধুনিক অর্থনীতির যাত্রার একটি চিহ্ন হয়ে ওঠে। এটি সেই সময়, যখন শহর হিসেবে ঢাকার এক নতুন পরিচয় তৈরি হচ্ছিল—একটি আত্মবিশ্বাসী রাজধানী, উন্নয়নশীল বিশ্বের সম্ভাবনাময় কেন্দ্র।

তবে যে নির্মাণটি কনকর্ডের অস্তিত্বকে জাতীয় চেতনার সঙ্গে যুক্ত করে, সেটি হলো জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ১৯৮২ সালে নির্মিত এই সৌধের প্রতিটি স্তম্ভ শুধু শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নয়, বরং আমাদের সামষ্টিক ইতিহাসের ধারক। কনকর্ড মাত্র ৮৯ দিনে এই মহাকীর্তির বাস্তবায়ন সম্পন্ন করে, যা নির্মাণ দক্ষতা ও অঙ্গীকারের এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

পরিবেশ, স্থায়িত্ব এবং ভবিষ্যৎ—এই তিনটি শব্দ আজ উন্নয়ন-ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু হলেও কনকর্ড এই দর্শনের অনুশীলন শুরু করেছিল অনেক আগেই। ১৯৯৮ সালে, যখন অধিকাংশ নির্মাতা চিমনির ইটের বিকল্প চিন্তাই করছিল না, তখন কনকর্ড চালু করে পরিবেশবান্ধব গ্রীন ব্রিক প্রযুক্তি। এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পরিবেশ সচেতনতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সময়ের পরিক্রমায় যখন সরকারই এখন আগুনে পোড়া ইট থেকে সরে আসার চেষ্টা করছে, তখন বোঝা যায়—কনকর্ড শুধু সময়ের সঙ্গে চলেনি, বরং সময়কে পথ দেখিয়েছে।

তাদের নির্মাণ কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল না শুধুমাত্র আবাসিক বা অফিস ভবনে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে কনকর্ড রেখে গেছে তার স্বাক্ষর। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চট্টগ্রাম, আইডিবি ভবন, জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়াম, ব্রিটিশ হাইকমিশন—প্রতিটি প্রকল্পে প্রতিফলিত হয়েছে দক্ষতা ও উচ্চমান। এসব ভবন শুধু নির্মাণশৈলীর নিদর্শন নয়, বরং তারা অর্থনৈতিক গতিশীলতার সহায়ক কাঠামো।

মানুষের আবাসন চাহিদা মেটাতে কনকর্ড গড়ে তুলেছে হাজার হাজার অ্যাপার্টমেন্ট। প্রতিটি আবাসন যেন একেকটি গল্পের পাতা—যেখানে জন্মদিন উদযাপন হয়, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি হয়, এবং প্রতিবেশী থেকে তৈরি হয় এক নির্ভরতার সম্পর্ক। কনকর্ড কেবল ভবন তৈরি করেনি, গড়ে তুলেছে সম্পর্কের জাল, তৈরি করেছে বসবাসযোগ্য নগরের ভিত্তি।
২০০২ সালে, যখন বাংলাদেশে থিম পার্ক ছিল এক অলীক কল্পনা, তখন কনকর্ড চালু করে ফ্যান্টাসি কিংডম—একটি রঙিন জগত, যেখানে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের শিশুরা রোলার কোস্টারের স্বাদ পায়, পরিবার পায় একটি আনন্দময় অবকাশ। এরপর চট্টগ্রামে ফয়’স লেক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করে, বিনোদনের আধুনিক ধারণার সঙ্গে একীভূত করে।

একটি প্রতিষ্ঠানের পরিধি যখন বহুমাত্রিক হয়, তখন তার চরিত্রও হয়ে ওঠে বহুবর্ণ। কনকর্ড শুধু নির্মাণ সামগ্রী উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; তারা বিস্তৃত হয়েছে পর্যটন, স্থাপত্য ডিজাইন, যোগাযোগ এবং নাগরিক উন্নয়নের প্রতিটি স্তরে। প্রতিটি ক্ষেত্রে একই দৃষ্টিভঙ্গি—উদ্ভাবন, গুণমান এবং দায়িত্ব।

২০২৫ সালের ১০ জুলাই, কনকর্ড উদযাপন করেছে তার ৫০ বছরের ঐতিহাসিক পথচলা। অনুষ্ঠানটি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ছিল একটি কর্মজীবনের সম্মান, একটি কৃতজ্ঞ জাতির শ্রদ্ধা এবং ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারের প্রকাশ। ভাইস চেয়ারপারসন ফারিদা কামাল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার কামাল এবং পরিচালক নাজিয়া করিশমা কামালের নেতৃত্বে কনকর্ডের কর্মীরা এই উৎসবে অংশ নেন, যেন এটি হয়ে ওঠে কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, একটি পরিবারেরও উৎসব।

এই দীর্ঘ সময় ধরে কনকর্ড যা করেছে, তা নিছক ব্যবসায়িক সাফল্য নয়। এটি একটি দেশের পুনর্গঠন, একটি জাতির স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার অংশীদার হয়ে ওঠার গল্প। কনকর্ডের প্রতিটি প্রজেক্টে আমরা দেখতে পাই উন্নয়ন কেমন হতে পারে, যদি তাতে থাকে নৈতিকতা, সততা এবং দূরদর্শী নেতৃত্ব।

৫০ বছর পার করে এখন কনকর্ড দাঁড়িয়ে নতুন এক অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে। চ্যালেঞ্জ আসবে, সময় বদলাবে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির যে অঙ্গীকার—একটি উন্নত, বাসযোগ্য, সম্মানজনক বাংলাদেশের নির্মাণ—তা আগের মতোই অটল থাকবে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কনকর্ড নতুন করে শপথ নেয়, যেন আগামী ৫০ বছরও হয়ে ওঠে সমান গৌরবময়, সমান সৃষ্টিশীল এবং মানুষের জন্য নিবেদিত।

২০১৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, এস এম কামাল উদ্দিনে পুত্র শাহরিয়ার কামাল কথা বলেছেন কনকর্ডের ৫০ বছরের অগ্রযাত্রা নিয়ে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যায় থেকে পড়াশোনা শেষে ২০১৬ সাল থেকে গ্রুপটির পরিচালক হিসেবে নেতৃত্ব দেয়া শাহরিয়ার কামাল গুলশানের কনকর্ড সেন্টারে এক সাক্ষাৎকারে কনকর্ডের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে কনকর্ড দেশের আবাসন খাতের একটি আস্থার ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরে অনেক কোম্পানি এসেছে এবং হারিয়ে গেছে; কিন্তু কনকর্ড সবসময় টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে, বড় ধরনের উত্থান-পতন দেখেনি। হঠাৎ বড় হওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের চেয়ারম্যান শুরু থেকেই সততা, নিষ্ঠা ও সুশাসনের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন যে মানুষের আস্থা অর্জন করতে অনেক সময় লাগে; কিন্তু তা হারাতে পাঁচ মিনিটও লাগে না। তাই যেকোনো প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে আমরা অনেক কিছু চিন্তা করি, যার কারণে গ্রাহকের কাছ থেকে খুব বেশি অভিযোগ আসে না।

শাহরিয়ার কামাল জানান, কনকর্ড শুরু করেছিলো চার কর্মী নিয়ে, আর এখন তাদের কর্মীসংখ্যা প্রায় দুই হাজার। তিনি বলেন, “আমাদের চেয়ারম্যানের একটি স্বপ্ন ছিলো যা একা বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল না। এর জন্য নিবেদিত কর্মী প্রয়োজন এবং আমরা তাদের পেয়েছি। আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো কর্মীবাহিনী। যেকোনো সংকটে কর্মীরা পাশে ছিলেন। আজকের কনকর্ড গ্রুপের এই পর্যায়ে আসার পেছনে কর্মীদের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা কর্মীদের সব ধরনের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করি। ৫০ বছর পূর্তিতে নতুন কিছু সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে কর্মীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া কর্মরত অবস্থায় কোনো কর্মী মারা গেলে ছয় মাস পর্যন্ত পরিবারকে বেতনের সমপরিমাণ সুবিধা দেওয়া হবে এবং বিশেষ বোনাসও প্রদান করা হচ্ছে।”

তিনি কনকর্ডের ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকেও আলোকপাত করেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে যেকোনো ব্যবসা থেমে যাবে। আমরা শুরু করেছিলাম ভবন নির্মাণ, ব্রিজ নির্মাণ দিয়ে। পরে বহুতল ভবন তৈরি করি। বিমানবন্দর, ইনডোর স্টেডিয়ামের মতো বড় প্রকল্প সম্পন্ন করার পর বুঝতে পারি যে জমির ওপর ভবন নির্মাণ একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। ফলে বাংলামোটর ও গুলশানে আমরা প্রথম অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং তৈরি করি। ১৯৭৮-৭৯ সালে গুলশানে প্রথম বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করি, যখন সবাই বলেছিল মতিঝিল ছেড়ে গুলশানে কেউ অফিস খুলবে না। আমাদের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ছিল ব্যবসা যেন নির্দিষ্ট কোনো খাতে সীমাবদ্ধ না থাকে। তাই আমরা বিলাসবহুল প্রকল্পের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য লেক সিটির মতো প্রকল্পও করেছি। একই সঙ্গে টেকসই নির্মাণের দিকে মনোযোগ দিয়েছি।

পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগের কথাও স্মরণ করেন শাহরিয়ার কামাল। “পোড়ামাটির ইটের কারণে প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষি জমি হারাচ্ছি। ২০০০ সাল থেকে আমরা পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদন শুরু করি যা আমাদের সব প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়। এখন সরকারও সব প্রকল্পে এই ইট ব্যবহার করছে। পাশাপাশি সুস্থ বিনোদনের জন্য থিম পার্ক নির্মাণ করেছি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমাদের আটটি পার্ক, গো-কার ও হোটেল রয়েছে। নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতেও ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছি। তবে ব্যবসার ৫০-৬০ শতাংশ এখনো আবাসন খাতকেন্দ্রিক।

বর্তমান আবাসন খাতের অবস্থা নিয়ে শাহরিয়ার কামাল বলেন, আবাসন ব্যবসার গতি বর্তমানে বেশ কমে গেছে। এটি পুরো অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। যেমন আমেরিকায় আবাসন খাত ভালো করলে অর্থনীতি ভালো হয়, তেমনি আমাদের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে আবাসন ঋণের সুদহার ১৪-১৫ শতাংশে উঠেছে এবং জমির দাম অনেক বেড়ে গেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আবাসন খাতে কিছুটা ধীরগতি দেখা যাচ্ছে, যার ফলে নতুন প্রকল্প গ্রহণ কমে গেছে। সিমেন্ট ও রডের বিক্রি কমে যাওয়াও এ বিষয়ের প্রমাণ। তবে এই পরিস্থিতিকেও আমরা একটি সুযোগ হিসেবে দেখি। চলতি বছর ঢাকা ও চট্টগ্রামে আমরা ১০টি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। মানুষ এখন বিশ্বাসযোগ্য আবাসন নির্মাতা খুঁজছে, যেখানে তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ থাকবে।
শাহরিয়ার কামাল তার বাবা এস এম কামালউদ্দিনের মানসিকতা ও ব্যবসায় নীতি তুলে ধরেন। “আমাদের চেয়ারম্যানের মূলমন্ত্র ছিল সততা, নিষ্ঠা ও সুশাসন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষের আস্থা অর্জন করতে অনেক সময় লাগে, হারাতে খুব কম সময় লাগে। এজন্য ব্যবসার প্রতিটি পদক্ষেপে সততা ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা খুব জরুরি। এটি আমাদের কোম্পানির টেকসই উন্নতির মূল চাবিকাঠি।

শাহরিয়ার কামালের কথায় স্পষ্ট, কনকর্ড গ্রুপের ৫০ বছরের যাত্রা শুধুমাত্র ভবন নির্মাণ নয়, এটি ছিল আস্থা ও মানসম্পন্ন সেবার প্রতীক। কর্মীদের প্রতি যত্ন, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং সর্বোপরি সততা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে কনকর্ড দেশের আবাসন খাতে একটি আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে। বর্তমান সংকটের মধ্যেও তারা নতুন সুযোগ সৃষ্টির প্রত্যয়ে অগ্রসর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক সংকেত বহন করে।