০৪:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ফারুক প্রধান :

শিশু কিশোরদের নিয়ে নির্বাচিত একশ ছড়ার বই প্রকাশ করেছেন সপ্তডিঙা

  • প্রকাশিত ০৪:৫৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

আইরিন নিয়াজি মান্না করে না সে কান্না, ছড়ায় ছড়ায় দিক বিজয় সকল পাঠকের মন জয়। শিশু কিশোরদের নিয়ে নির্বাচিত একশ ছড়ার বই প্রকাশ করেছেন সপ্তডিঙা ২০২২ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলায়। বইটির মধ্যে সব রকমের ছড়া লিখেছেন তিনি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা ও বর্তমান সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী প্রতিরোধ এবং সহজ সরল সাদামাটা ভাষায় সবার কথা তুলে ধরবার চেষ্টা করেছেন। আমি সেই ছড়াগুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

অপেক্ষা
————
কবে রে তুই আসবি তুরু
কবে যে তোর ছুটি
তোরই জন্যে রেখেছি পেড়ে
পাকা ডালিম দুটি।

বাগানে অনেক ফুল ফুটেছে
পুকুরভরা রুই
দেখতে ওদের খোকা আমার
আসবি কবে তুই।

মায়ের যে অপেক্ষা খোকা কবে বাড়ি আসবে পুকুরভরা মাছ দেখবে। মায়ের মন খোকার জন্য আঁকুপাঁকু করে অপেক্ষা করতে থাকে। তারই চিত্র ফুটে তুলেছেন তাঁর ছড়ায়।

স্বাধীনতা
————-
ছোট্ট পাখির ইচ্ছে হতো
উড়বে ডানা মেলে
কিন্তু আহা সোনার পাখি
বন্দী খাঁচার জেলে।

মুক্ত পাখি দেখলে ভীষণ
কষ্ট হতো বুকে
নীল আকাশে উড়ছে ওরা
কী যে মহাসুখে!

পাখিটি খাঁচা থেকে মুক্ত হবার জন্য ডানা সাপটাচ্ছে যেমন ঠিক তেমনি মুক্ত আকাশে উড়বার জন্য করুণ সুরে কাঁদছে। হয়তো একদিন সেই আশা পূরণ হবে। সেদিন হয়তো বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে।

নেতা
——–
তিনি অনেক নামিদামি
থাকেন তিনি ঢাকায়
পড়শিরা খুব ভয়ে ভয়ে
তার দিকে যে তাকায়।

ধানমন্ডি আর গুলশানে তার
আছে বিশাল বাড়ি
চালান তিনি নিউ মডেলর
হরেক রকম গাড়ি।

প্রভাব প্রতিপত্তি আছে
আছে অনেক টাকা
ব্যবসা আছে চট্টলাতে
থাকেন তিনি ঢাকা।

তিনি নাকি সমাজসেবক
দয়ার সাগর তিনি
এমন নেতার চেহারাটা
আমরা সবাই চিনি।

নূর হোসেন
—————-
একলা ঘরে থাকতে আমার
আর করে না ভয়
এখন আমার সকল সময়
একাই থাকতে হয়।

বায়ান্নতে বাবা গেছেন
স্বাধীনতায় মা
ভাইটি ছাড়া আমারতো আর
স্বজন ছিল না।

নব্বুয়ে যে শহিদ হলো
আমার ভাইয়া নূর
দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে সে
গেলো অচিনপুর।

একে একে সবাই গেলো
পড়ে কি সেই মন্ত্র!
তারপরও এলো না দেশে
সুখের গণতন্ত্র!

সবার দাবি
—————
হতাশ ভীষণ কষ্ট বুকে
তাইতো আরিফ বিল্লায়-
চাকরি চাই চাকরি চাই
ফুটপাতে বসে বিল্লায়।

পাগলা রফিক উদাস মনে
সময় কাটায় পার্কে
নিত্য চ্যাঁচায় আমার মত
যোগ্য আছে আর কে?

একটা ভালো চাকরি করার
স্বপ্ন দেখে মান্নায়
চাকরি যেন সোনার হরিণ
দুচোখ ভেজে কান্নায়।

হতাশ ভীষণ তরুণ সমাজ
চাকরি কারো নাই যে-
এখন সবার শুধুই দাবি
চাকরি একটা চাই যে।

আশুতোষ ভুটানি
————————
নয় নেপালি নয় জাপানি
আশুতোষ ভুটানি
এই নিয়ে তার দেখি
খুব বেশি ফুটানি।

ওর দেশে আছে নাকি
বরফের হিমালয়
সেই সুখে আশুতোষ
বড় বড় কথা কয়।

বোঁচা নাক উঁচা গাল
বাঁকা দুটো চোখ তো
ভুটানিরা দেখি সবই
বেঁটে বেঁটে লোক তো।

আমাদের দেশে ছিলি
আগে ছিলি চাকমা
আর কিছু বলব না
রেগে যাবি-থাক না।

এই বলে খ্যাপায় ওকে
ডানপিটে রাশুটা
গোলমেলে কথা শুনে
রেগে যায় আশুটা।

রেগে গিয়ে দেয় সে কী
ঘরময় লম্ফ
ঘর জুড়ে সেই ক্ষণে
হয় ভুমিকম্প।

খান আর দত্তরা
———————
খান আর দত্তরা ছিল পাশাপাশি
দু’বাড়ির ভাব কত ছিল হাসাহাসি।
প্রেম ছিল সীমাহীন ছিল আসা যাওয়া
তার মাঝে ছিল কত ভালোবাসা পাওয়া।

দত্তরা ওপারে গেলো ছেড়ে ঘরবাড়ি
খানদের ছেলেরাও দিল দেশ ছাড়ি।
দুটি পথ হয়ে গেলো দুই দিকে ভাগ
শেষ হয়ে গেলো সব রাগ-অনুরাগ।

বাড়ি ঘর পড়ে আছে সব আজ স্মৃতি
শেষ হয়ে গেছে তাই সেই সম্প্রতি।
ধুধু ফাঁকা বাড়ি দুটো নেই হৈ চৈ
খান আর দত্তরা চলে গেলো কই।

সাতচল্লিশের দাঙ্গায় ভারত ভাগ হয়ে দুটি দেশে পরিণত হয়। পাকিস্তান ও ভারত। মানুষে মানুষে সুখদুঃখ একত্রে ছিল। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল। মুসলমান আর হিন্দু। আমরা একটু যদি ভাবি তাহলে মনে হয় দুটি ভাই দুই প্রান্তে চলে গেছে। শুধু পড়ে আছে ভিটা মাটি আর স্মৃতিটুকু।

স্বপ্নখেলা
————-
তুলতুলে লাল গাল
নাম তার লিজা
বার বার বলে শুধু
আমি খাব পিজা।

পিজা খাব পিজা খাব
যাব সোজা পার্কে
হাসি খুশি সাথে যাবে
যাবে বলো আর কে?

শিশু পার্ক গিয়ে ঠিকই
চড়বই চরকি
দূর দেশে যাব চলে
বল্ তাতে তোর কী?

রেলে চড়ে যাব ছুটে
ঢাকা থেকে পাবনা
হেসে খেলে বেড়াব তো
নেই কোন ভাবনা।

প্লেনে চড়ে উড়ে যাব
মেঘেদের দেশে
মেঘ পরিদের সঙ্গে নিয়ে
ফিরব অবশেষে।

শিশু কিশোরদের কল্পনার জগতের কথা যদি ভাবি তাহলে অনেক কিছুই বাবা মার বায়না সহ্য করতে হয়। তারা যা বলে সব কথায় হ্যাঁ বলে যাওয়া। শিশুদের বিকাশের ক্ষেত্রে নেগেটিভ কোন কিছু না বলা। যখন যা খেতে চায়, যখন যা বায়না ধরে সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখা। শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক, মিউজিয়াম, চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে কল্পনার জগতটি ধরা পড়ে।

রাজনীতিবিদ
——————
টাকার তার খুবই বাহার
নিত্য গড়েন টাকার পাহাড়।
শেরাটনে করেন আহার
ক্ষমতা যে অনেক তাহার!

থাইল্যান্ডে করেন বাজার
কর্মী তার কয়েক হাজার।

সাদা টাকা কালো করেন
কালো করেন সাদা
এত্তই তার শক্তি টাকার
দেয় না কেউ বাধা।

নিত্য নতুন বাড়ি করেন
ইচ্ছে মত যান যে ফরেন।

ব্যাংক বীমা টিভি পেপার
সব কিছুরই মালিক
তার পেছনে ঘুরছে সদাই
হাজার পোষা শালিক।

তার কথাতে ওঠেন বসেন
মন্ত্রী শাস্ত্রী সবাই
জনগণের স্বপ্নগুলো
করেন ঠিকই জবাই।

হঠাৎ নেতা নিজেই পালান
ঠিকানা তার লাল সে দালান।

রাজধানী এই ঢাকা
————————–
এই থাকে না পানি আবার
এই থাকে না গ্যাসও
এমন কথা শুনে তোমরা
অট্ট হাসি হাসো?

পথে আছে জ্যামের বাহার
পথ চলতে ক্লান্তি
কষ্ট কি যে জ্যামে থাকা
তুই যদি তা জানতি!

দিন কিবা রাত জ্বলছে নাতে
ঘরের ভিতর লাইট
গরম আর অন্ধকারে
করছি কেবল ফাইট।

টেলিফোনে লাইন থাকে না
আছে কত যুক্তি
নাগরিক এ যন্ত্রণা থেকে
মিলবে কবে মুক্তি!

কোন কিছুই নাই তবু
আসছে এত্ত বিল যে
টাকার পরিমাণটা দেখে
উঠছে কেঁপে দিল যে।

মরার মতো বেঁচে আছি
করছি শুধু লড়াই
রাজধানীতে থাকার নামে
করছি মিথ্যে বড়াই।
ঢাকা শহরে থাকা মানে নিজেকে খুব গর্ববোধ মনে করি। যখন ঢাকায় থাকি তখন বিড়ম্বনার শেষ নাই।কারেন্ট বিলে ধোঁকাবাজি, টেলিফোনে লাইন কাটা বা মোবাইলে নেটওয়ার্ক নিয়ে হইচই করি। রাস্তায় বের হলেও জ্যামে পড়তে হয়। এই সবই নিত্যদিনের ঘটনার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। তারপরও আমরা ঢাকায় থাকি।

Tag :
জনপ্রিয়

শ্রমিক দল নেতা শেখ আহমদ আলী রানার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানির অভিযোগ

ফারুক প্রধান :

শিশু কিশোরদের নিয়ে নির্বাচিত একশ ছড়ার বই প্রকাশ করেছেন সপ্তডিঙা

প্রকাশিত ০৪:৫৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

আইরিন নিয়াজি মান্না করে না সে কান্না, ছড়ায় ছড়ায় দিক বিজয় সকল পাঠকের মন জয়। শিশু কিশোরদের নিয়ে নির্বাচিত একশ ছড়ার বই প্রকাশ করেছেন সপ্তডিঙা ২০২২ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলায়। বইটির মধ্যে সব রকমের ছড়া লিখেছেন তিনি। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা ও বর্তমান সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী প্রতিরোধ এবং সহজ সরল সাদামাটা ভাষায় সবার কথা তুলে ধরবার চেষ্টা করেছেন। আমি সেই ছড়াগুলি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

অপেক্ষা
————
কবে রে তুই আসবি তুরু
কবে যে তোর ছুটি
তোরই জন্যে রেখেছি পেড়ে
পাকা ডালিম দুটি।

বাগানে অনেক ফুল ফুটেছে
পুকুরভরা রুই
দেখতে ওদের খোকা আমার
আসবি কবে তুই।

মায়ের যে অপেক্ষা খোকা কবে বাড়ি আসবে পুকুরভরা মাছ দেখবে। মায়ের মন খোকার জন্য আঁকুপাঁকু করে অপেক্ষা করতে থাকে। তারই চিত্র ফুটে তুলেছেন তাঁর ছড়ায়।

স্বাধীনতা
————-
ছোট্ট পাখির ইচ্ছে হতো
উড়বে ডানা মেলে
কিন্তু আহা সোনার পাখি
বন্দী খাঁচার জেলে।

মুক্ত পাখি দেখলে ভীষণ
কষ্ট হতো বুকে
নীল আকাশে উড়ছে ওরা
কী যে মহাসুখে!

পাখিটি খাঁচা থেকে মুক্ত হবার জন্য ডানা সাপটাচ্ছে যেমন ঠিক তেমনি মুক্ত আকাশে উড়বার জন্য করুণ সুরে কাঁদছে। হয়তো একদিন সেই আশা পূরণ হবে। সেদিন হয়তো বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে।

নেতা
——–
তিনি অনেক নামিদামি
থাকেন তিনি ঢাকায়
পড়শিরা খুব ভয়ে ভয়ে
তার দিকে যে তাকায়।

ধানমন্ডি আর গুলশানে তার
আছে বিশাল বাড়ি
চালান তিনি নিউ মডেলর
হরেক রকম গাড়ি।

প্রভাব প্রতিপত্তি আছে
আছে অনেক টাকা
ব্যবসা আছে চট্টলাতে
থাকেন তিনি ঢাকা।

তিনি নাকি সমাজসেবক
দয়ার সাগর তিনি
এমন নেতার চেহারাটা
আমরা সবাই চিনি।

নূর হোসেন
—————-
একলা ঘরে থাকতে আমার
আর করে না ভয়
এখন আমার সকল সময়
একাই থাকতে হয়।

বায়ান্নতে বাবা গেছেন
স্বাধীনতায় মা
ভাইটি ছাড়া আমারতো আর
স্বজন ছিল না।

নব্বুয়ে যে শহিদ হলো
আমার ভাইয়া নূর
দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে সে
গেলো অচিনপুর।

একে একে সবাই গেলো
পড়ে কি সেই মন্ত্র!
তারপরও এলো না দেশে
সুখের গণতন্ত্র!

সবার দাবি
—————
হতাশ ভীষণ কষ্ট বুকে
তাইতো আরিফ বিল্লায়-
চাকরি চাই চাকরি চাই
ফুটপাতে বসে বিল্লায়।

পাগলা রফিক উদাস মনে
সময় কাটায় পার্কে
নিত্য চ্যাঁচায় আমার মত
যোগ্য আছে আর কে?

একটা ভালো চাকরি করার
স্বপ্ন দেখে মান্নায়
চাকরি যেন সোনার হরিণ
দুচোখ ভেজে কান্নায়।

হতাশ ভীষণ তরুণ সমাজ
চাকরি কারো নাই যে-
এখন সবার শুধুই দাবি
চাকরি একটা চাই যে।

আশুতোষ ভুটানি
————————
নয় নেপালি নয় জাপানি
আশুতোষ ভুটানি
এই নিয়ে তার দেখি
খুব বেশি ফুটানি।

ওর দেশে আছে নাকি
বরফের হিমালয়
সেই সুখে আশুতোষ
বড় বড় কথা কয়।

বোঁচা নাক উঁচা গাল
বাঁকা দুটো চোখ তো
ভুটানিরা দেখি সবই
বেঁটে বেঁটে লোক তো।

আমাদের দেশে ছিলি
আগে ছিলি চাকমা
আর কিছু বলব না
রেগে যাবি-থাক না।

এই বলে খ্যাপায় ওকে
ডানপিটে রাশুটা
গোলমেলে কথা শুনে
রেগে যায় আশুটা।

রেগে গিয়ে দেয় সে কী
ঘরময় লম্ফ
ঘর জুড়ে সেই ক্ষণে
হয় ভুমিকম্প।

খান আর দত্তরা
———————
খান আর দত্তরা ছিল পাশাপাশি
দু’বাড়ির ভাব কত ছিল হাসাহাসি।
প্রেম ছিল সীমাহীন ছিল আসা যাওয়া
তার মাঝে ছিল কত ভালোবাসা পাওয়া।

দত্তরা ওপারে গেলো ছেড়ে ঘরবাড়ি
খানদের ছেলেরাও দিল দেশ ছাড়ি।
দুটি পথ হয়ে গেলো দুই দিকে ভাগ
শেষ হয়ে গেলো সব রাগ-অনুরাগ।

বাড়ি ঘর পড়ে আছে সব আজ স্মৃতি
শেষ হয়ে গেছে তাই সেই সম্প্রতি।
ধুধু ফাঁকা বাড়ি দুটো নেই হৈ চৈ
খান আর দত্তরা চলে গেলো কই।

সাতচল্লিশের দাঙ্গায় ভারত ভাগ হয়ে দুটি দেশে পরিণত হয়। পাকিস্তান ও ভারত। মানুষে মানুষে সুখদুঃখ একত্রে ছিল। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেল। মুসলমান আর হিন্দু। আমরা একটু যদি ভাবি তাহলে মনে হয় দুটি ভাই দুই প্রান্তে চলে গেছে। শুধু পড়ে আছে ভিটা মাটি আর স্মৃতিটুকু।

স্বপ্নখেলা
————-
তুলতুলে লাল গাল
নাম তার লিজা
বার বার বলে শুধু
আমি খাব পিজা।

পিজা খাব পিজা খাব
যাব সোজা পার্কে
হাসি খুশি সাথে যাবে
যাবে বলো আর কে?

শিশু পার্ক গিয়ে ঠিকই
চড়বই চরকি
দূর দেশে যাব চলে
বল্ তাতে তোর কী?

রেলে চড়ে যাব ছুটে
ঢাকা থেকে পাবনা
হেসে খেলে বেড়াব তো
নেই কোন ভাবনা।

প্লেনে চড়ে উড়ে যাব
মেঘেদের দেশে
মেঘ পরিদের সঙ্গে নিয়ে
ফিরব অবশেষে।

শিশু কিশোরদের কল্পনার জগতের কথা যদি ভাবি তাহলে অনেক কিছুই বাবা মার বায়না সহ্য করতে হয়। তারা যা বলে সব কথায় হ্যাঁ বলে যাওয়া। শিশুদের বিকাশের ক্ষেত্রে নেগেটিভ কোন কিছু না বলা। যখন যা খেতে চায়, যখন যা বায়না ধরে সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখা। শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক, মিউজিয়াম, চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে কল্পনার জগতটি ধরা পড়ে।

রাজনীতিবিদ
——————
টাকার তার খুবই বাহার
নিত্য গড়েন টাকার পাহাড়।
শেরাটনে করেন আহার
ক্ষমতা যে অনেক তাহার!

থাইল্যান্ডে করেন বাজার
কর্মী তার কয়েক হাজার।

সাদা টাকা কালো করেন
কালো করেন সাদা
এত্তই তার শক্তি টাকার
দেয় না কেউ বাধা।

নিত্য নতুন বাড়ি করেন
ইচ্ছে মত যান যে ফরেন।

ব্যাংক বীমা টিভি পেপার
সব কিছুরই মালিক
তার পেছনে ঘুরছে সদাই
হাজার পোষা শালিক।

তার কথাতে ওঠেন বসেন
মন্ত্রী শাস্ত্রী সবাই
জনগণের স্বপ্নগুলো
করেন ঠিকই জবাই।

হঠাৎ নেতা নিজেই পালান
ঠিকানা তার লাল সে দালান।

রাজধানী এই ঢাকা
————————–
এই থাকে না পানি আবার
এই থাকে না গ্যাসও
এমন কথা শুনে তোমরা
অট্ট হাসি হাসো?

পথে আছে জ্যামের বাহার
পথ চলতে ক্লান্তি
কষ্ট কি যে জ্যামে থাকা
তুই যদি তা জানতি!

দিন কিবা রাত জ্বলছে নাতে
ঘরের ভিতর লাইট
গরম আর অন্ধকারে
করছি কেবল ফাইট।

টেলিফোনে লাইন থাকে না
আছে কত যুক্তি
নাগরিক এ যন্ত্রণা থেকে
মিলবে কবে মুক্তি!

কোন কিছুই নাই তবু
আসছে এত্ত বিল যে
টাকার পরিমাণটা দেখে
উঠছে কেঁপে দিল যে।

মরার মতো বেঁচে আছি
করছি শুধু লড়াই
রাজধানীতে থাকার নামে
করছি মিথ্যে বড়াই।
ঢাকা শহরে থাকা মানে নিজেকে খুব গর্ববোধ মনে করি। যখন ঢাকায় থাকি তখন বিড়ম্বনার শেষ নাই।কারেন্ট বিলে ধোঁকাবাজি, টেলিফোনে লাইন কাটা বা মোবাইলে নেটওয়ার্ক নিয়ে হইচই করি। রাস্তায় বের হলেও জ্যামে পড়তে হয়। এই সবই নিত্যদিনের ঘটনার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। তারপরও আমরা ঢাকায় থাকি।