রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বোদা পৌরসভার উচ্চমান সহকারী পদে ২০০৯ সালে যোগদানের পরেই যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন সাজ্জাদ হাসান আল তারিক সবুজ। কয়েক বছরেই বনে গেছেন কোটি টাকার সম্পদের মালিক। কিনেছেন জমিজমা ও ট্রাক্টর গাড়ী করছেন ঠিকাদারী ব্যবসাও। অনুসন্ধানে দেখা যায় সাজ্জাদ চাকরিতে যোগদানকালে তার কিংবা পৈত্রিক কোন সম্পদ না থাকলেও চাকরীতে যোগদানের পর বোদা পঞ্চগড় হাইওয়ে সংলগ্ন প্রায় ০৩ শতক জমি কিনেছেন ৫০ লক্ষধিক টাকায়, কিনেছের ট্রাক্টর গাড়ী এছাড়াও আরো জমাজমি রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
অপরদিকে তার বাবা বাবুল ইসলাম ছিলেন একজন তালার মিস্ত্রি। তিনিও প্রায় ২০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ বলে কিছুই ছিলো না। পৌরসভার উচ্চমান সহকারী পদে চাকরির পর হঠাৎ বিপুল টাকার মানিক বনে যান সাজ্জাদ। তার চাচা রবিউল আলম সাবুল উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রাজেদুজ্জামান বাবু পৌর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় যোগসাজসে সবাইকে ম্যানেজ করে ঠিকাদারি কাজসহ সব কিছুর একক নিয়ন্ত্রণ নেয় সাজ্জাদ।
ছাত্রলীগ ও পরবর্তীতে যুবদলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার সুবাদে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তৎকালীন সংসদ সদস্যের সরাসরি সুপারিশে চাকরি পাওয়ায় বোদা পৌরসভার একক আধিপত্য বিস্তার করেন সাজ্জাদ। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান সুজা মেয়র নির্বাচিত হলে তার জন্য আর্শীবাদ হয়ে আসে। আওয়ামীলীগের নেতা দাবী করে পৌরসভার টেন্ডার কাজে জড়িয়ে পড়েন। সকল টেন্ডারের কাজ বাগিয়ে নিতেন। অন্য কোন ঠিকাদার কাজ পেলেও আওয়ামীলীগের দলীয় লোকজন দিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতেন। এছাড়াও মেয়র ও সাজ্জাদ দলীয় লোক হওয়ায় অনেক অবৈধ কাজ করলেও মেয়র তাকে সে সুবিধা দিতেন বলেও জানা যায়।
পৌরসভার প্রায় সকল কাজেই সাজ্জাদের অনুমতি ছাড়া যেন সম্ভব নয়। পৌরসভার হাট ইজারায় তার প্রত্যক্ষ মদদ দিয়ে হাট পাইয়ে দিয়ে নিতেন অবৈধ অর্থ। সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে নিজের পটেক ভরেন সাজ্জাদ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মাত্র কয়েক বছর আগেই যেই ছেলে বেকার ও অর্থহীন অবস্থায় ছিল। শুধুমাত্র সহকারী পদে চাকুরী নিয়েই কিভাবে এত টাকার মালিক বনে যায়। বোদা পৌরসদরের প্রানকেন্দ্র উপজেলা পরিষদের সামনে উচ্চদামে একটি জমি সহ অনেক জমাজমি ক্রয় করেন।
স্থানীয়রা আরো বলেন, ওই পরিবার এখন আঙুল ফুলে কলাগাছ। আগে কী ছিলো আর এখন কী হয়েছে তা সবার জানা। দূর্নীতি না করলে কি কেউ এত সম্পদের মালিক হতে পারেন? এক চাচা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও আরেক চাচা পৌর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, সে নিজেই যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয় সম্পাদক এবং সাবেক রেলমন্ত্রীর ছেলের আস্তভাজন হাওয়ায় সেই ভয়ে এলাকার মানুষ কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।
এ বিষয়ে সাজ্জাদ হাসান আল তারিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাহার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানা যায়, বর্তমানে একটি মামলায় সে ওয়ারেন্ট ভুক্ত মামলার আসামী হওয়ায় পলাতক রয়েছে।
০৫:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সহকারী হয়েই কোটিপতি সাজ্জাদ
Tag :
জনপ্রিয়