০৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীতে ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজী স্মরণসভা

  • প্রকাশিত ০৭:০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
  • ৭৫ বার দেখা হয়েছে

১৪ জুলাই ২০২৫ সোমবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে প্রখ্যাত সমবায়ী ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা। তার অমর কৃতিত্ব এবং সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মানবাধিকার সম্মিলিত জোট এই স্মরণসভার আয়োজন করছে।

স্মরণসভায় উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রী এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বিচারপতি মীর হাসমত আলী, বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র কবি ও সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী। এছাড়া, ডা. তামিজীর সহকর্মী এবং বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি তার জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করবেন এবং তার অবদানের উপর আলোকপাত করবেন।

ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজী (১৯৪৯ – ২০২৩) ছিলেন বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ও একজন সমাজসংস্কারক, যিনি অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়ন এবং সমবায়ভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন কাজ করেছেন। ১৯৬৯ সালে তিনি দরিদ্র ও অসহায় কৃষকদের নিয়ে গঠন করেন ‘মন্দুক সমিতি’, এবং ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘মন্দুক সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি’। এই সমিতি আজও গ্রামীণ উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিবেচিত।

তিনি ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন এবং ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চট্টগ্রামে থেকে গণসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জোগান এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ, ১৯৮৪ সালের জাতীয় সমবায় দিবসে তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা লাভ করেন।

ডা. তামিজী ১৯৩৯ সালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার মন্দুক গ্রামে এক অভিজাত তামিজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা পন্ডিত এম নুর মোহাম্মদ তামিজী এবং পিতামহ মৌলভী তমিজ উদ্দীন তামিজী ছিলেন প্রভাবশালী ও অগাধ ভূসম্পত্তির মালিক। তবে, পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত সন্পত্তির অধিকাংশই তিনি মানবকল্যাণে ব্যয় করেন।

ষাটের দশকে চিকিৎসক হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ব্যাপক সুনাম অর্জন করার পর, তিনি ১৯৬৯ সালে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসেন এবং সমবায় আন্দোলন শুরু করেন। মন্দুক সমিতি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তিনি গ্রামীণ জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন, যা গ্রামীণ মানুষের আর্থিক উন্নতি এবং সামাজিক কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ স্মরণসভা ডা. তামিজীর জীবনের আদর্শ ও তার সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তরুণ প্রজন্মকে আরও সচেতন করবে এবং তার উত্তরসূরীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজীর আত্মত্যাগ এবং তার অবদানের স্মরণে আয়োজিত এই স্মরণসভা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সহায়তামূলক কার্যক্রমে তার অবদানকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।

Tag :
জনপ্রিয়

মোছাফ্ফাহ যুবদলের উদ্যোগে কাতার ও দুবাই ব্যবসায়ী সালেহ আহমদ চৌধুরীকে সংবর্ধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীতে ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজী স্মরণসভা

প্রকাশিত ০৭:০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

১৪ জুলাই ২০২৫ সোমবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে প্রখ্যাত সমবায়ী ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা। তার অমর কৃতিত্ব এবং সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মানবাধিকার সম্মিলিত জোট এই স্মরণসভার আয়োজন করছে।

স্মরণসভায় উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রী এম নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, বিচারপতি মীর হাসমত আলী, বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র কবি ও সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মু. নজরুল ইসলাম তামিজী। এছাড়া, ডা. তামিজীর সহকর্মী এবং বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি তার জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করবেন এবং তার অবদানের উপর আলোকপাত করবেন।

ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজী (১৯৪৯ – ২০২৩) ছিলেন বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ও একজন সমাজসংস্কারক, যিনি অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়ন এবং সমবায়ভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন কাজ করেছেন। ১৯৬৯ সালে তিনি দরিদ্র ও অসহায় কৃষকদের নিয়ে গঠন করেন ‘মন্দুক সমিতি’, এবং ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘মন্দুক সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি’। এই সমিতি আজও গ্রামীণ উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিবেচিত।

তিনি ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন এবং ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চট্টগ্রামে থেকে গণসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা জোগান এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ, ১৯৮৪ সালের জাতীয় সমবায় দিবসে তিনি তৎকালীন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা লাভ করেন।

ডা. তামিজী ১৯৩৯ সালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার মন্দুক গ্রামে এক অভিজাত তামিজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা পন্ডিত এম নুর মোহাম্মদ তামিজী এবং পিতামহ মৌলভী তমিজ উদ্দীন তামিজী ছিলেন প্রভাবশালী ও অগাধ ভূসম্পত্তির মালিক। তবে, পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত সন্পত্তির অধিকাংশই তিনি মানবকল্যাণে ব্যয় করেন।

ষাটের দশকে চিকিৎসক হিসেবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে ব্যাপক সুনাম অর্জন করার পর, তিনি ১৯৬৯ সালে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে গ্রামে ফিরে আসেন এবং সমবায় আন্দোলন শুরু করেন। মন্দুক সমিতি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে তিনি গ্রামীণ জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন, যা গ্রামীণ মানুষের আর্থিক উন্নতি এবং সামাজিক কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ স্মরণসভা ডা. তামিজীর জীবনের আদর্শ ও তার সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তরুণ প্রজন্মকে আরও সচেতন করবে এবং তার উত্তরসূরীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

ডা. মো. নুরুল আমিন তামিজীর আত্মত্যাগ এবং তার অবদানের স্মরণে আয়োজিত এই স্মরণসভা বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সহায়তামূলক কার্যক্রমে তার অবদানকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখবে।