দিন যায় মাস যায় ঘুরে আসে তিথি। জীবটা বাঁধা পড়ে চক্র রীতিনীতি। শ্যামলী মণ্ডলের জীবনটা চক্র রীতিনীতির মতই বাঁধা পড়ে থাকেনি। রাজকন্যা পরিবারে তিনিই হচ্ছেন ৬ষ্ঠ রাজকন্যা। কখনো নিজেকে দরিদ্র মনে করে না। পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্য দিয়ে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়ে চলেন। তাঁর সাহিত্যের পরিধি নিজস্ব পরিমণ্ডলের মধ্যে থাকার চেষ্টা করেন। কখনো কখনো অন্যান্য সাহিত্য পরিবেশের মধ্যে বিচরণ করবার চেষ্টা করেন কিন্তু তিনি তা সফলতা অর্জন করতে পারেন না। রাজকন্যা গল্পের মধ্যে ছয় বোনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড কবিতার মধ্য দিয়ে তুলে ধরবার চেষ্টা করেছেন। জীবনটা হচ্ছে হাসি কান্নায় ভরা পর্ব। নিজেকে সাহিত্যের অঙ্গনে রাজকন্যা মনে করলেও তিনি এখনো রাজকন্যা হয়ে উঠতে পারেননি। ঝর্ণার জলে ঢেউয়ে ঢেউয় গাইতো যত গান, ফুল পাখিদের নাচনে জুড়াতো প্রাণ। তিনি নেচে নেচে সব জায়গা নিজের করে নিতে চান। সেখানে পরিবেশ তাঁকে দেয় না ঠাঁই। নিজের পথচলা নিজরেই সামলে নিতে হয়। অশ্রুজলে ভাসে কন্যার সেই নিকুঞ্জ কানান। রাজকন্যার জীবনে বিষাদ নেমে আসে। পাখিরা গান গায় না, ফুলবাগানে ফোটে ফুল না। এমনই একটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। তিনি যে রাজার আহ্লাদের ছোট মেয়ে। সেই কারণে ফুল-পাখিরা গোমরা মুখে তাকায় ছোট্টো রাজকন্যার দিকে। মাঘ যায় চলে আসে বসন্ত ঋতু বদলায়। জীবনের সব কিছুই বসন্ত ঋতুর মতই বদলে যায় ছোট রাজকন্যা শ্যামীলী মণ্ডলের জীবনে। পালা বদলের পালায় জীবন নদী হয়ে যায়। তবুও নিশি পোহায় ভোরের নতুন আশায়। এবার শ্যামলী বসুমতী পুষ্প কানন কুমারী। কুহু কুহ কালতানে জীবনের সঙ্গীত বাজে, বাঁচিবার তরে এই ধরণীর পড়ে আশা জাগে। ছোট রাজকন্যা কখনো হোচট খায় আবার কখনো সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে চলেছে। অবরুদ্ধতার মুক্তি নিয়ে আসে নতুন প্রভাত। জীবনের বাঁধা পেরিয়ে নতুনভাবে বাঁচার চেষ্টা করে চলেছেন। সকালে সোনালী আভায় পৃথিবী ঝিলমিল হয়ে আসে। একদিন হয়তো ছোট রাজকন্যার জীবনে সূর্য ঝলমল হয়ে উঠবে। ঘরের বধুয়া গৃহকর্ম ভুলে খোলে ভোরের দরজা জানালা। দূর আকাশের গায়ে ভাসে গ্রহ তারা শশী। পাশের বাগানে মহা আনন্দে হাসে ফুল-পাখি। রাজকন্যা কাব্যগ্রন্থটি দুই শত লাইনে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা হয়েছে। গত বই মেলায় বাংলা একাডেমিতে প্রকাশ পায়। পাঠকের কাছে এই দুই শত লাইনের রাজকন্যা বইটি সমাদর পাপে আশা করছি।