সীতাকুণ্ডে উদুর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে চাপানোর মতো প্রফেসর জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ নেতাকে বাঁচানোর প্রতিবাদে লাইভ করায় জামায়াত কর্মীকে বহিস্কার করেছে। বহিস্কাকারের ঘটনায় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।এ বহিস্কারকে কেন্দ্র করে গত ৪/৫ দিন ধরে ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাওয়াসহ যে কোন মূহুর্তে অঘটন ঘটনা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন মেম্বারকে ছাড়িয়ে নিতে জামায়াতের রুকন প্রফেসর জাহাঙ্গীর সীতাকুণ্ড মডেল থানায় যান।সেখানে উপস্হিত জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঐ নেতাকে না ছড়ানোর জন্য জোরালো প্রতিবাদ করে এবং লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনার জেরে জামায়াতের রুকন প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর থানায় আওয়ামী লীগের নেতা ছাড়িয়ে আনার ভিডিও লাইভ করা ওই জামায়াত কর্মী রুবেল আনছারীকে বহিষ্কার করে।এ ঘটনা ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠে।উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী কুতুব উদ্দিন শিবলী স্বাক্ষরিত গত ১৭ সেপ্টম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে কর্মী রুবেলকে বহিষ্কার করে।বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেন উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে দলের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তাকে সংগঠনের সব কার্যক্রম এবং কর্মী ও প্রাথমিক সহযোগী সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
তবে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কয়েকজন রুকন বলেন,তৌহিদ ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশও মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।কারণ গত ৭ আগষ্ট ২৫ইং দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক দিনকালে মাওলানা তাওহীদুল হকের বিরুদ্ধে বহিস্কার নিউজ প্রকাশিত হলে তৎক্ষণাৎ স্হানীয় মানব জমিন প্রতিনিধি সহ কয়েকজন সাংবাদিক উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ওনার ব্যাপারে এ ধরনের বহিষ্কারের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।কিন্তু গত বুধবার (১৭/০৯/২৫ইং) কুতুব উদ্দিন শিবলী স্বাক্ষরিত প্যাডে জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক বহিষ্কার এই ধরনের কথা ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করলে কুতুব উদ্দিন শিবলীর প্রতি পৌরসভাসহ পুরো উপজেলায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ এবং সমালোচনা শুরু হয়।যা ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলে বুঝা যায়।এমনকি শিবলীর বিরুদ্ধে সমালোচনা সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরালও হয়ে যায়।জামায়াতের শত শত কর্মীরা জানান, এধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনা সীতাকুণ্ডের ইতিহাসে কখনো ৩৫/৪০ বছরেও দেখা যায়নি।যা কুতুব উদ্দীন গংরা শুরু করেছে।তারা সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব থেকে বহিস্কৃতদেরকে দিয়ে একের পর এক মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী সাজিয়ে বিভিন্ন ভাবে প্রোবাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে।এটা বন্ধ না করলে যে কোন মূহুর্তে সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই।তাছাড়া ইতিপূর্বে গত ৭ ফেব্রুয়ারী সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব দখলের পিছনেও কুতুব উদ্দীন শিবলীর ইন্ধনের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে পৌরসভা জামায়াতের আমিরাবাদ ৭নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দীন ও পৌরসভার সাবেক শিবির সভাপতি জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন সুমনসহ আরো অনেকে বলেন, প্রফেসর জাহাঙ্গীর ঐদিন থানায় উপস্থিত হয়ে ছিলেন তা ভিডিও দেখলে এবং থানার সিসি ফুটেজ দেখলে সত্যতা পাওয়া যাবে।তিনি জামায়াতের একজন রুকন হয়ে আঃলীগের মেম্বার সেলিমকে ছাড়িয়ে আনতে কেন থানায় গেলেন ?সত্য ঘটনার অভিযোগ থাকার পরও বিষয়টি আড়াল করে উদুর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে চাপানোর মতো উল্টো রুবেলের উপর দোষ চাপিয়ে দিলেন।সত্য ভিডিও প্রচার করায় উল্টো বহিষ্কার হলো নির্যাতিত ও ত্যাগী কর্মী রুবেল। যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০/৩০টির মত মামলার আসামী ছিল।তারা আরো জানান, জামায়াতের গঠনতন্ত্রে কর্মী বহিস্কার বলতে কোন নিয়ম বা শব্দ নেই।এখন আমাদের নেতাকর্মীদের মনে হচ্ছে বর্তমান নেতৃত্ব গুনে ধরে গেছে।কারণ কোন প্রোগ্রামে সংগঠনের কোন সমস্যা নিয়ে কথা বলার অধিকার দেয় না।আমাদের কাছে মনে হচ্ছে সংগঠন এখন আনোয়ার সিদ্দিক ও কুতুব উদ্দীন শিবলী এবং জেলার ৩/১ জনের ইশরায় চলছে।তাছাড়া কুতু্ব উদ্দীন শিবলী তৌহিদ ভাইয়ের বিরুদ্ধেও যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।কারণ এধরনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিয়মের মধ্যে পড়ে না।তাই রক্ত ঝরা ময়দানের মজলুম জননেতা মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী উল্লেখিত ঐ দুই জনের ষড়যন্ত্রের শিকার।অপরদিকে ৭নং ওয়ার্ড সহ-সভাপতি নিজাম আরো বলেন,উপজেলা নেতৃবৃন্দ আমার ওয়ার্ডের সভাপতিকে অবহিত না করে এতবড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।যেহেতু আমাদের সংগঠন কচুরিপানার মত সংগঠন নয়।নেতারা যা মন চাইবে তাই করবে।আর যদি ভিডিও’র ঘটনায় ফেসবুকে ভাইরাল অনুযায়ী বিশ্লেষণ করা হয়,তাহলে মাঠ পর্যায়ের দাবী আগে প্রফেসর জাহাঙ্গীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রদক্ষেপ নেয়া উচিত।সুতরাং আমরা কেন্দ্রের আমীরে জামায়াতের কাছে আমাদের আহ্বান ঐ ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিতে।
অপরদিকে বহিষ্কার আদেশে রুবেল আনছারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন,তার প্রতি বহিষ্কারাদেশ অন্যায়, অবিচার ও ভিত্তিহীন এবং অন্যায়কে আড়াল করার সামিল।কারণ ‘আলহামদুলিল্লাহ এটা মিথ্যা অপপ্রচার নয়, চির সত্য। সেলিম মেম্বারকে ছাড়াতে প্রফেসর জাহাঙ্গীর ভাই থানায় গিয়ে ছিল।তখন আমার সাথে জামায়াতের ১০/১২ জন কর্মী ছিল।তারাই কালের স্বাক্ষী।আর একথা সাংবাদিকদের কাছে জাহাঙ্গীর ভাই নিজে বলেছে যে, সেলিম মেম্বার আওয়ামী লীগ করে সেটা জানত না।এমনকি ওনার বক্তব্য দৈনিক সমকাল, দৈনিক ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকার অন-লাইনে প্রকাশিত হয়ে ছিল।মুলত সত্য বলায় ও ইকবালের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে আমাকে বহিষ্কার করে। আমি তো এমনিতেই মিথ্যার বাহিনী থেকে দূরে ছিলাম।তবে সহযোদ্ধা ভাইদের প্রতি অনুরোধ সত্যকে সত্য বলবেন।
অপরদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী বলেন, ষড়যন্ত্র করে কোন সুফল বয়ে আনবে না। কিছু লোকের ষড়যন্ত্র এক দিন না এক দিন প্রকাশ হবে ইনশাআল্লাহ।













