১০:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ফারুক প্রধান :

মেঘে ঢাকা আকাশ

  • প্রকাশিত ০১:০৯:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • ৯ বার দেখা হয়েছে

কবি সুমন্ত রায় গদ্যের পাশাপাশি কাব্যচর্চা করে আসছেন সে কথা কারোই অজানা নয়। শিশু সাহিত্যেও তাঁর লেখার ছাপ রয়েছে। তিনি করোনাকালে মানুষের পৃথিবীর ছেড়ে চলে যাওয়া কোনো ভাবেই মেনে নেননি। অকালে চলে যেতে হচ্ছে করোনার ছোবলে। তিনি এই পরিণতি কিছুতেই স্বাভাবিক মনে করেননি। তাঁর কলমে উঠে এসেছে, “মৃত্যু”

মৃত্যু, দুটি অক্ষরের কঠিনতম শব্দ, ভয়ে কাঁপে হৃদয়
অহর্নিশ তাড়িয়ে বেড়ায় মহাশূন্যের দিকে শেষে সমাপন
সব মানুষের জন্যে একই বিধির বিধান নেই ধর্মভেদে
সকাল-দুপুর-রাত কখন আসবে কেউ জানে না।

“সময় বড় দুঃসময়”
খবর ছিল আমার প্রিয় দেখি না আমি কাঁপে হৃদয় সরল-প্রাণ
লাশের সারি কান্না শুধু কষ্ট যেন মানুষেরই নিত্য সঙ্গী
সেদিকে দেখি বিপদ যেন তাড়িয়ে আসে ছাড়ে না পিছু বিমর্ষ আমি
সময় বড় দুঃসময়ই সবার কাছে পালাবো কোথায় জানা নেই।
করোনার পরে পৃথিবী যেন মানবিক হয়-হিংসাদ্বেষ না রয়।

কবি মানুষের ভিতরে যে পাপাচরণ রয়েছে তা থেকে মুক্তি যেন পাই সেই কথায় বলেছেন তাঁর মেঘে ঢাকা আকাশে। তারপর যদি মানুষ এতোটুকুও ভালো হয় তাহলেই কবির স্বার্থকতা। বিপদ আসলে ভগবান, ঈশ্বর, আল্লাহকে ডাকি আর বিপদ চলে গেলেই সব ভুলে গিয়ে আগের সেই পাপাচারে লিপ্ত হই। মানুষের এই আচরণ বদলায় না। কিছু কিছু মানুষের আচরণ তার শিক্ষা থেকেই বদলায়।

“সাঁকো”
সাঁকো ছিল আমাদেরই সেই
ছোট গাঁয়ে রাড়ির খালে
বর্ষাকালে বাঁকে বাঁকে
দেখা যেতো খাল-বিল -নদে।

আহা! সাঁকো বেঁধে রেখো
স্মৃতি ভরা সেই দিনগুলো
দলে দলে যেতাম ছুটে
বৃষ্টি যখন আসতো ঝেঁপে।

কত রকম সাঁকো ছিলো
বাঁশের তৈরি বেশি ছিলো
মালার মত জড়িয়ে ছিলো
ইতিহাসের বিক্রমপুরে।

গ্রামের মানুষের সেতু বন্ধন হচ্ছে সাঁকো। দুই গ্রামের মানুষ জন পারাপার হতো এই সাঁকো দিয়ে। বাজার সদায় করতে গেলে এই সাঁকোর প্রয়োজন হতো। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে যখন সাঁকোটি ভেঙে গেল তখন দুই পাড়ের মানুষের খুবই কষ্ট হতো। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা বই খাতা কলম মাথায় করে পাড় হওয়ার সময় হাফপ্যাণ্ট ভিজে যেত। গায়ের জামা খুলে বই খাতা কলম বেঁধে নিত। যাতে করে ভিজে যেন না যায়। কবির ছোট বেলার সাঁকো পার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

“পালকি”
পালকি চলে পালকি চলে
নতুন বধু যায় যে চলে
গাঁয়ের পথের বাঁকে বাঁকে
সহজ মানুষ দাঁড়ায় এসে।

উত্তেজনায় ভরপুর সবে
গন্ধ নেবে নতুন বউয়ের
খুশি মনে চার বেহারা
পালকি নামায় ক্ষণিক হেসে।

পুরোনো দিনের বিয়েতে বর বধু যখন পালকি চড়ে যায় তখন গ্রামের ছেলে মেয়েরা পালকির পিছু পিছু দৌড়ায়। চার বেয়ারা উহুম না, উহুম না বলতে যায়। সেই সময়ের বিয়ে কত আনন্দের ছিলো ভাবায় যায়। একন সেই পালকি চোখেই পড়ে না।

” রংধনু ”
শারদ প্রাতে কে গো তুমি
এলে কাশের বনে
সারাদিনের কাজ যে আমার
বিফল হবে ভ্রমে।

দূর্বাঘাসে জমে থাকা
শুভ্র শিশির কণা
তোমার পায়ে করছে খেলা
আমি মাতাল হাওয়া।

মহালয়ার শুদ্ধ সুরে
মা আসছেন এই পথে
রংধনু আর একটু থাক না
মাকে এনো সঙ্গে।

শৈশব কালে শিশুরা যখন আকাশে রংধনু দেখে তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। পাড়ার বন্ধুদের ডেকে দেখায় আর বলে রংধনু আর একটু খানি থেকে যাও না। মাকে সঙ্গে নিয়ে রংধনু দেখার জন্য আর অপেক্ষা করতে বলে। শিশুর চোখে আকাশে সাত রঙা রঙধনু দেখতে পেলে শিশুরা কল্পনায় ছবি আঁকে।

” আমার লিরিক ”
আজ সারাদিন বিষন্ন মন
একলা ঘরে খুব সাধারণ
মাঝে মাঝে এমন কেন হয়
এই পৃথিবী আমার যেন নয়!

একলা ঘরে মন উচাটন
করোনাকাল শুধু বিয়োজন
ভুলে গেছে মন আহত পণ
চোখে ভাসে নিশি পবন।

হঠাৎ দেখি আলোর ঝিলিক
হারিয়ে যাওয়া আমার লিরিক
মুখ লুকিয়ে শাড়ির ভাঁজে
আমায় দেখে মরে লাজে!

হঠাৎ করে যখন কবিতার লাইন মনে পড়ে তখন যেন মনে হয় এখনই লিরিক লিখে ফেলতে পারবো।
এই সময়টা সব কবির বেলায় আনন্দের হাতছানি দেয়।

” জীবন গড়ো ”
সুনীল আকাশ সবুজের মাঠ
খুঁজে নাও জীবনের পাঠ
জীবন আজও কত যে মধুর
যেখানে আছে তাল-লয়-সুর।

কখনো বা ভাবি মনে
জী আছে জীবনের মানে
এই বিরান মাঠ সবই শূন্য
কেউ নেই হল না আশা পূর্ণ।

কী ভাবছো বালক আনমনে
জীবন-ধন ভাবাও নির্জনে
সোনার ফসলে হবে পূর্ণ
চেয়ে দেখো পাশে তৃণ।

যখন তুমি একা অপূর্ণ
নিঃসঙ্গ জীবন চূর্ণ-বিচূর্ণ
স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো
একটা জীবন যত্ন করো।

কবিতায় কবির ভাব ভাষা ছন্দের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করবেন। কবিরা কখনো তাঁর লেখায় উপদেশ মূলক লেখা লেখে না। তবে আধ্যাত্ব গানে লেখা যায়। কবিরা সৃজন শীলতার সৃষ্টি কর্মে মগ্ন থাকেন। শিল্প ভাবনা আর শব্দের নিপুন কারুকাজ তার উপমা, উৎপ্রেক্ষা, অলংকার আরও বেগবান করবে। উপদেশ মূলক লেখায় শিল্প মান হারিয়ে যায়।

“একুশ আমার”
একুশ আমার চেতনায় বুদবুদ
বর্ণমালার সুখ
মায়ের ভাষায় কথা বলি তাই
গর্বে ভরে বুক।

একুশ আমার ভাষা শহিদের
জাতির সামনে উজ্জ্বল আলো
প্রেরণার যুগ যুগ।

একুশ আমার স্বাধীকার পথে
প্রথম কোনো অর্জন
বায়ান্ন উনসত্তর সত্তর জয়ে
একাত্তরের গড়জন।

ভাষার অধিকার বাঙালির অস্তিত্বের লড়াইয়ে সত্তরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন বাক স্বাধীনতার ফসল আর একটি বাংলাদেশ।

কবি সুমন্ত রায় একজন শিক্ষক ও সাহিত্য প্রেমী। কবিতার প্রতি ভালোবাসা তাঁর আর একটি বহিঃপ্রকাশ। তিনি গদ্য সাহিত্য যেমন লেখেন তেমনি পদ্য সাহিত্যেও বিশালতা রয়েছে। প্রবন্ধ থেকে শুরু করে গদ্যের নানা শাখায় তাঁর বিচরণ দেখা যায়। কবিতার শুরুটা ভালো কিন্তু শেষ স্তবকে কিচুটা অমিল লক্ষ্য করা যায়। ভাব বস্তুর সঙ্গে আদি ভাবের অভাব। কাব্য গ্রন্থের মধ্যে কবিতা ও ছড়া মিলিয়ে একাকার। মাত্রা বৃত্ত ছন্দে লিখতে লিখতে স্বরবৃত্ত ছন্দে লিখবার আয়ত্ত করেছেন বেশ। মেঘে ঢাকা আকাশ নামকরণ সময় উপযোগী এবং বর্তমান অবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে মাত্র। বইটি প্রকাশ করেছে কব্যকথা। অমর একুশে বইমেলা মার্চ ২০২১। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।

Tag :
জনপ্রিয়

জাতীয় দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা ও সাপ্তাহিক কালধারা’র চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিস উদ্বোধন

ফারুক প্রধান :

মেঘে ঢাকা আকাশ

প্রকাশিত ০১:০৯:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

কবি সুমন্ত রায় গদ্যের পাশাপাশি কাব্যচর্চা করে আসছেন সে কথা কারোই অজানা নয়। শিশু সাহিত্যেও তাঁর লেখার ছাপ রয়েছে। তিনি করোনাকালে মানুষের পৃথিবীর ছেড়ে চলে যাওয়া কোনো ভাবেই মেনে নেননি। অকালে চলে যেতে হচ্ছে করোনার ছোবলে। তিনি এই পরিণতি কিছুতেই স্বাভাবিক মনে করেননি। তাঁর কলমে উঠে এসেছে, “মৃত্যু”

মৃত্যু, দুটি অক্ষরের কঠিনতম শব্দ, ভয়ে কাঁপে হৃদয়
অহর্নিশ তাড়িয়ে বেড়ায় মহাশূন্যের দিকে শেষে সমাপন
সব মানুষের জন্যে একই বিধির বিধান নেই ধর্মভেদে
সকাল-দুপুর-রাত কখন আসবে কেউ জানে না।

“সময় বড় দুঃসময়”
খবর ছিল আমার প্রিয় দেখি না আমি কাঁপে হৃদয় সরল-প্রাণ
লাশের সারি কান্না শুধু কষ্ট যেন মানুষেরই নিত্য সঙ্গী
সেদিকে দেখি বিপদ যেন তাড়িয়ে আসে ছাড়ে না পিছু বিমর্ষ আমি
সময় বড় দুঃসময়ই সবার কাছে পালাবো কোথায় জানা নেই।
করোনার পরে পৃথিবী যেন মানবিক হয়-হিংসাদ্বেষ না রয়।

কবি মানুষের ভিতরে যে পাপাচরণ রয়েছে তা থেকে মুক্তি যেন পাই সেই কথায় বলেছেন তাঁর মেঘে ঢাকা আকাশে। তারপর যদি মানুষ এতোটুকুও ভালো হয় তাহলেই কবির স্বার্থকতা। বিপদ আসলে ভগবান, ঈশ্বর, আল্লাহকে ডাকি আর বিপদ চলে গেলেই সব ভুলে গিয়ে আগের সেই পাপাচারে লিপ্ত হই। মানুষের এই আচরণ বদলায় না। কিছু কিছু মানুষের আচরণ তার শিক্ষা থেকেই বদলায়।

“সাঁকো”
সাঁকো ছিল আমাদেরই সেই
ছোট গাঁয়ে রাড়ির খালে
বর্ষাকালে বাঁকে বাঁকে
দেখা যেতো খাল-বিল -নদে।

আহা! সাঁকো বেঁধে রেখো
স্মৃতি ভরা সেই দিনগুলো
দলে দলে যেতাম ছুটে
বৃষ্টি যখন আসতো ঝেঁপে।

কত রকম সাঁকো ছিলো
বাঁশের তৈরি বেশি ছিলো
মালার মত জড়িয়ে ছিলো
ইতিহাসের বিক্রমপুরে।

গ্রামের মানুষের সেতু বন্ধন হচ্ছে সাঁকো। দুই গ্রামের মানুষ জন পারাপার হতো এই সাঁকো দিয়ে। বাজার সদায় করতে গেলে এই সাঁকোর প্রয়োজন হতো। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে যখন সাঁকোটি ভেঙে গেল তখন দুই পাড়ের মানুষের খুবই কষ্ট হতো। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা বই খাতা কলম মাথায় করে পাড় হওয়ার সময় হাফপ্যাণ্ট ভিজে যেত। গায়ের জামা খুলে বই খাতা কলম বেঁধে নিত। যাতে করে ভিজে যেন না যায়। কবির ছোট বেলার সাঁকো পার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

“পালকি”
পালকি চলে পালকি চলে
নতুন বধু যায় যে চলে
গাঁয়ের পথের বাঁকে বাঁকে
সহজ মানুষ দাঁড়ায় এসে।

উত্তেজনায় ভরপুর সবে
গন্ধ নেবে নতুন বউয়ের
খুশি মনে চার বেহারা
পালকি নামায় ক্ষণিক হেসে।

পুরোনো দিনের বিয়েতে বর বধু যখন পালকি চড়ে যায় তখন গ্রামের ছেলে মেয়েরা পালকির পিছু পিছু দৌড়ায়। চার বেয়ারা উহুম না, উহুম না বলতে যায়। সেই সময়ের বিয়ে কত আনন্দের ছিলো ভাবায় যায়। একন সেই পালকি চোখেই পড়ে না।

” রংধনু ”
শারদ প্রাতে কে গো তুমি
এলে কাশের বনে
সারাদিনের কাজ যে আমার
বিফল হবে ভ্রমে।

দূর্বাঘাসে জমে থাকা
শুভ্র শিশির কণা
তোমার পায়ে করছে খেলা
আমি মাতাল হাওয়া।

মহালয়ার শুদ্ধ সুরে
মা আসছেন এই পথে
রংধনু আর একটু থাক না
মাকে এনো সঙ্গে।

শৈশব কালে শিশুরা যখন আকাশে রংধনু দেখে তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে। পাড়ার বন্ধুদের ডেকে দেখায় আর বলে রংধনু আর একটু খানি থেকে যাও না। মাকে সঙ্গে নিয়ে রংধনু দেখার জন্য আর অপেক্ষা করতে বলে। শিশুর চোখে আকাশে সাত রঙা রঙধনু দেখতে পেলে শিশুরা কল্পনায় ছবি আঁকে।

” আমার লিরিক ”
আজ সারাদিন বিষন্ন মন
একলা ঘরে খুব সাধারণ
মাঝে মাঝে এমন কেন হয়
এই পৃথিবী আমার যেন নয়!

একলা ঘরে মন উচাটন
করোনাকাল শুধু বিয়োজন
ভুলে গেছে মন আহত পণ
চোখে ভাসে নিশি পবন।

হঠাৎ দেখি আলোর ঝিলিক
হারিয়ে যাওয়া আমার লিরিক
মুখ লুকিয়ে শাড়ির ভাঁজে
আমায় দেখে মরে লাজে!

হঠাৎ করে যখন কবিতার লাইন মনে পড়ে তখন যেন মনে হয় এখনই লিরিক লিখে ফেলতে পারবো।
এই সময়টা সব কবির বেলায় আনন্দের হাতছানি দেয়।

” জীবন গড়ো ”
সুনীল আকাশ সবুজের মাঠ
খুঁজে নাও জীবনের পাঠ
জীবন আজও কত যে মধুর
যেখানে আছে তাল-লয়-সুর।

কখনো বা ভাবি মনে
জী আছে জীবনের মানে
এই বিরান মাঠ সবই শূন্য
কেউ নেই হল না আশা পূর্ণ।

কী ভাবছো বালক আনমনে
জীবন-ধন ভাবাও নির্জনে
সোনার ফসলে হবে পূর্ণ
চেয়ে দেখো পাশে তৃণ।

যখন তুমি একা অপূর্ণ
নিঃসঙ্গ জীবন চূর্ণ-বিচূর্ণ
স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো
একটা জীবন যত্ন করো।

কবিতায় কবির ভাব ভাষা ছন্দের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করবেন। কবিরা কখনো তাঁর লেখায় উপদেশ মূলক লেখা লেখে না। তবে আধ্যাত্ব গানে লেখা যায়। কবিরা সৃজন শীলতার সৃষ্টি কর্মে মগ্ন থাকেন। শিল্প ভাবনা আর শব্দের নিপুন কারুকাজ তার উপমা, উৎপ্রেক্ষা, অলংকার আরও বেগবান করবে। উপদেশ মূলক লেখায় শিল্প মান হারিয়ে যায়।

“একুশ আমার”
একুশ আমার চেতনায় বুদবুদ
বর্ণমালার সুখ
মায়ের ভাষায় কথা বলি তাই
গর্বে ভরে বুক।

একুশ আমার ভাষা শহিদের
জাতির সামনে উজ্জ্বল আলো
প্রেরণার যুগ যুগ।

একুশ আমার স্বাধীকার পথে
প্রথম কোনো অর্জন
বায়ান্ন উনসত্তর সত্তর জয়ে
একাত্তরের গড়জন।

ভাষার অধিকার বাঙালির অস্তিত্বের লড়াইয়ে সত্তরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন বাক স্বাধীনতার ফসল আর একটি বাংলাদেশ।

কবি সুমন্ত রায় একজন শিক্ষক ও সাহিত্য প্রেমী। কবিতার প্রতি ভালোবাসা তাঁর আর একটি বহিঃপ্রকাশ। তিনি গদ্য সাহিত্য যেমন লেখেন তেমনি পদ্য সাহিত্যেও বিশালতা রয়েছে। প্রবন্ধ থেকে শুরু করে গদ্যের নানা শাখায় তাঁর বিচরণ দেখা যায়। কবিতার শুরুটা ভালো কিন্তু শেষ স্তবকে কিচুটা অমিল লক্ষ্য করা যায়। ভাব বস্তুর সঙ্গে আদি ভাবের অভাব। কাব্য গ্রন্থের মধ্যে কবিতা ও ছড়া মিলিয়ে একাকার। মাত্রা বৃত্ত ছন্দে লিখতে লিখতে স্বরবৃত্ত ছন্দে লিখবার আয়ত্ত করেছেন বেশ। মেঘে ঢাকা আকাশ নামকরণ সময় উপযোগী এবং বর্তমান অবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে মাত্র। বইটি প্রকাশ করেছে কব্যকথা। অমর একুশে বইমেলা মার্চ ২০২১। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।