০৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরসরাইয়ে খুনের তিন সপ্তাহ পর বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ হত্যার রহস্য উন্মোচন

  • প্রকাশিত ০৭:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • ৫৭ বার দেখা হয়েছে

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খুনের তিন সপ্তাহ পর বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ (৮৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এই খুনের সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। ফয়েজ আহমেদ হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন ও আসামিদের গ্রেফতার বিষয়ে ১৯ জুলাই বিকাল ৪ টায় সংবাদ সম্মেলন করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।

খুনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতের কোন এক সময় মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ঘেড়ামারা এলাকায় নিজ বসত ঘরে খুন হন বৃদ্ধ ফয়েজ আহমদ। খবর পেয়ে সকালে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে আনে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জুন জোরারগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত ব্যক্তির ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর।

মামলার পর পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়ে উঠে। নিহত ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার বোন শ্যামলা (৬০) বেগমকে হেফাজতে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এ খুনের সাথে আক্তার (৩৩) নামের একজনের জড়িত থাকার কথা জানায়। ১৯ জুলাই রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সীতাকুণ্ড থানা এলাকা থেকে আখতারকে গ্রেফতার করলে তার দেয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে আক্তারের সহযোগিতা করা ইয়াসিন রুবেল ও সাকিব নামের আরো দুজনকে সীতাকুন্ড থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আসামিদের দেয়া তথ্য মতে, আক্তার নিহত ফয়েজ আহমেদের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতো। পরিচয়ের সূত্রে ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয় দিনমজুর আক্তারের সাথে। ফিরোজা বেগম তার স্বামী ফয়েজ আহমেদ কৃপণ প্রকৃতির লোক জানিয়ে তার চিকিৎসা খরচ ও সংসারের প্রয়োজনীয় ব্যয় না মেটানোর বিষয় আক্তারের সাথে আলোচনা করে। পরে বোনের সাথে যুক্তি করে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের ড্রয়ারে নগদ ৩০ হাজার টাকা আছে জানিয়ে আক্তারকে দিয়ে তা চুরি করার পরিকল্পনা করে। কথামতো টাকা চুরি করার সুযোগ তৈরি করে দিতে ২৬ জুন রাতে ঘরের দরজা খুলে ধাত্রির কাজ করতে বাড়ির বাইরে যায় ফিরোজা বেগম। তখন আক্তার তার দুই সহযোগীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের হাত-পা বেঁধে টাকা চুরি করতে গেলে বৃদ্ধ তাদের চিনে ফেললে আক্তার ও তার সহযোগীরা ফয়েজ আহমেদকে কিল ঘুসি মেরে ও মুখে কাপড় চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

মিরসরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের হত্যাকাণ্ড টি ছিল একেবারে ক্লুলেছ। আমরা ধাপে ধাপে তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছি। আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। মূলত ফয়েজ আহমেদের স্ত্রীর পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হালিম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম।

Tag :
জনপ্রিয়

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মুন্সিরহাট ওয়ার্ড বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন:

মিরসরাইয়ে খুনের তিন সপ্তাহ পর বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ হত্যার রহস্য উন্মোচন

প্রকাশিত ০৭:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে খুনের তিন সপ্তাহ পর বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদ (৮৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এই খুনের সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। ফয়েজ আহমেদ হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন ও আসামিদের গ্রেফতার বিষয়ে ১৯ জুলাই বিকাল ৪ টায় সংবাদ সম্মেলন করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।

খুনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতের কোন এক সময় মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ঘেড়ামারা এলাকায় নিজ বসত ঘরে খুন হন বৃদ্ধ ফয়েজ আহমদ। খবর পেয়ে সকালে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে আনে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জুন জোরারগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত ব্যক্তির ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর।

মামলার পর পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনের তৎপর হয়ে উঠে। নিহত ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার বোন শ্যামলা (৬০) বেগমকে হেফাজতে নিয়ে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা এ খুনের সাথে আক্তার (৩৩) নামের একজনের জড়িত থাকার কথা জানায়। ১৯ জুলাই রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সীতাকুণ্ড থানা এলাকা থেকে আখতারকে গ্রেফতার করলে তার দেয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে আক্তারের সহযোগিতা করা ইয়াসিন রুবেল ও সাকিব নামের আরো দুজনকে সীতাকুন্ড থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আসামিদের দেয়া তথ্য মতে, আক্তার নিহত ফয়েজ আহমেদের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করতো। পরিচয়ের সূত্রে ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয় দিনমজুর আক্তারের সাথে। ফিরোজা বেগম তার স্বামী ফয়েজ আহমেদ কৃপণ প্রকৃতির লোক জানিয়ে তার চিকিৎসা খরচ ও সংসারের প্রয়োজনীয় ব্যয় না মেটানোর বিষয় আক্তারের সাথে আলোচনা করে। পরে বোনের সাথে যুক্তি করে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের ড্রয়ারে নগদ ৩০ হাজার টাকা আছে জানিয়ে আক্তারকে দিয়ে তা চুরি করার পরিকল্পনা করে। কথামতো টাকা চুরি করার সুযোগ তৈরি করে দিতে ২৬ জুন রাতে ঘরের দরজা খুলে ধাত্রির কাজ করতে বাড়ির বাইরে যায় ফিরোজা বেগম। তখন আক্তার তার দুই সহযোগীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের হাত-পা বেঁধে টাকা চুরি করতে গেলে বৃদ্ধ তাদের চিনে ফেললে আক্তার ও তার সহযোগীরা ফয়েজ আহমেদকে কিল ঘুসি মেরে ও মুখে কাপড় চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

মিরসরাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বৃদ্ধ ফয়েজ আহমেদের হত্যাকাণ্ড টি ছিল একেবারে ক্লুলেছ। আমরা ধাপে ধাপে তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেছি। আদালতে তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। মূলত ফয়েজ আহমেদের স্ত্রীর পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হালিম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম।