১২:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী

  • প্রকাশিত ০৫:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • ৩৪ বার দেখা হয়েছে

বর্ণালী জামান রংপুর থেকে : মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী। জানা গেছে, রংপুরে পরিচ্ছন্নতার অভাবে মশার উৎপাত যেন দখল করেছে পুরো নগরী। শহরের বড়-ছোট ক্যানেল,ব্রিজ,ড্রেন,খাল ও নর্দমায় ময়লার ভাগাড়ে বেড়েছে মশার বংশবিস্তার। এদিকে অভিভাবকহীন রংপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে মশা নিধনে ব্যয় করলেও ফলাফল শূন্যই থেকে যাচ্ছে। বিকেল না হতেই মশার উপদ্রবে স্থির থাকা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ঘাটতিতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী।

সরেজমিনে রংপুর নগরীর ,গোমস্তপাড়া,সেনপাড়াতিনমাথা, কুটিরপাড়া,তাঁতীপাড়া,কোটসংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,ময়লার ভাগাড়ে বংশবিস্তারে বাড়ছে মশা। দিন দুপুরে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে থাকতে অসহ্যকর অবস্থায় অতিষ্ঠ জনজীবনের চিত্রই চোখে পড়েছে।

রংপুর নগরীর ক্যানেলগুলো পরিচ্ছন্নতার অভাবে কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপে মশার রাজ্যে পরিনত হয়েছে৷

নগরীর কোট সংলগ্ন শ্যামাসুন্দরীর ক্যানেলের ধারে চায়ের দোকানের ক্রেতা জেসমিন বলেন,কোটে কাজে এসছি চা খেতে ২ মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না মশার যন্ত্রণায়। শহরে যদি এত ময়লার স্তূপ আর মশার উপদ্রব হয় তাহলেতো খুব দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা পরিচ্ছন্ন ও মশা নিধনের পদক্ষেপ নেন না কেন। জনসাধারণের সুবিধার্থে অতি দ্রুত এর পদক্ষেপ চাচ্ছি৷

কুটিরপাড়া, তাঁতীপাড়া,শ্যামাসুন্দরী ক্যানেল সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রহিজ বলেন,দিন দুপুরে মশার কাপড়ে কয়েল জ্বালায়াও কাম করা যায় না। দিনেও কয়েল লাগে রাইতেও কয়েল লাগে। এখনো মশা মারার কোন ঔষধ দেয়া হয় নাই। মশার খুব যন্ত্রণার মধ্যে আছি আমরা।

সিটি কর্পোরেশনে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা মশক নিধনে ব্যয় করলেও বাস্তবে তার কার্যকারিতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

গোমস্তপাড়ার বাসিন্দারা বলেন, শ্যামা সুন্দরী খাল এখন আমাদের গলার কাঁটা। এত ময়লা জমেছে, এখন এটা মশা মাছির ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে, অথচ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।

রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। যদিও সংখ্যা তুলনামূলক কম, তবে প্রতিদিন বাড়ছে জ্বর ও চুলকানিসহ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশক নিধনে কেবল স্প্রে বা ফগার যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি প্রয়োজন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন। এছাড়াও খাল পরিষ্কার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়মিত মনিটরিং একান্ত প্রয়োজন । ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমেই অ্যানোফিলিস ও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। শুধু ওষুধ ছিটিয়ে লাভ নেই, এর সঙ্গে পরিবেশ ব্যবস্থাপনাও জরুরি।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর

Tag :
জনপ্রিয়

আমতলীতে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া স্বামীকে ডেকে এনে মারধর , ছিনতাই ও মারধরের ঘটনা ফাঁস,গ্রেফতার ৩

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী

প্রকাশিত ০৫:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বর্ণালী জামান রংপুর থেকে : মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী। জানা গেছে, রংপুরে পরিচ্ছন্নতার অভাবে মশার উৎপাত যেন দখল করেছে পুরো নগরী। শহরের বড়-ছোট ক্যানেল,ব্রিজ,ড্রেন,খাল ও নর্দমায় ময়লার ভাগাড়ে বেড়েছে মশার বংশবিস্তার। এদিকে অভিভাবকহীন রংপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে মশা নিধনে ব্যয় করলেও ফলাফল শূন্যই থেকে যাচ্ছে। বিকেল না হতেই মশার উপদ্রবে স্থির থাকা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ঘাটতিতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী।

সরেজমিনে রংপুর নগরীর ,গোমস্তপাড়া,সেনপাড়াতিনমাথা, কুটিরপাড়া,তাঁতীপাড়া,কোটসংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,ময়লার ভাগাড়ে বংশবিস্তারে বাড়ছে মশা। দিন দুপুরে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে থাকতে অসহ্যকর অবস্থায় অতিষ্ঠ জনজীবনের চিত্রই চোখে পড়েছে।

রংপুর নগরীর ক্যানেলগুলো পরিচ্ছন্নতার অভাবে কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপে মশার রাজ্যে পরিনত হয়েছে৷

নগরীর কোট সংলগ্ন শ্যামাসুন্দরীর ক্যানেলের ধারে চায়ের দোকানের ক্রেতা জেসমিন বলেন,কোটে কাজে এসছি চা খেতে ২ মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না মশার যন্ত্রণায়। শহরে যদি এত ময়লার স্তূপ আর মশার উপদ্রব হয় তাহলেতো খুব দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা পরিচ্ছন্ন ও মশা নিধনের পদক্ষেপ নেন না কেন। জনসাধারণের সুবিধার্থে অতি দ্রুত এর পদক্ষেপ চাচ্ছি৷

কুটিরপাড়া, তাঁতীপাড়া,শ্যামাসুন্দরী ক্যানেল সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রহিজ বলেন,দিন দুপুরে মশার কাপড়ে কয়েল জ্বালায়াও কাম করা যায় না। দিনেও কয়েল লাগে রাইতেও কয়েল লাগে। এখনো মশা মারার কোন ঔষধ দেয়া হয় নাই। মশার খুব যন্ত্রণার মধ্যে আছি আমরা।

সিটি কর্পোরেশনে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা মশক নিধনে ব্যয় করলেও বাস্তবে তার কার্যকারিতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর।

গোমস্তপাড়ার বাসিন্দারা বলেন, শ্যামা সুন্দরী খাল এখন আমাদের গলার কাঁটা। এত ময়লা জমেছে, এখন এটা মশা মাছির ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে, অথচ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।

রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। যদিও সংখ্যা তুলনামূলক কম, তবে প্রতিদিন বাড়ছে জ্বর ও চুলকানিসহ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশক নিধনে কেবল স্প্রে বা ফগার যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি প্রয়োজন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন। এছাড়াও খাল পরিষ্কার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়মিত মনিটরিং একান্ত প্রয়োজন । ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমেই অ্যানোফিলিস ও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে। শুধু ওষুধ ছিটিয়ে লাভ নেই, এর সঙ্গে পরিবেশ ব্যবস্থাপনাও জরুরি।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর