১০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোহাম্মদ আকবর হোসেন ভুঁইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা উজ্জ্বল রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙালীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা দেখা দিয়েছে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু

  • প্রকাশিত ১২:২৭:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫ বার দেখা হয়েছে

ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়ে) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬ একর জমি নতুন করে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ভূমির মালিকদের কাছে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে নোটিশ জারি করা হয়। নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করার আগ পর্যন্ত সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীরা রামগড় স্থলবন্দরকে একটি পরিত্যক্ত প্রকল্প হিসাবে ধরে নিয়েছে। এককালের প্রাণচাঞ্চল্যকর মহুকুমা শহর একটি মৃত শহরে পরিণত হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। রাত ৮.০০ টার পর রামগড় শহরের হোটেল-রেস্তোরায় ভাত ও নাস্তা পাওয়া যায় না। এমনকি দু-একটা আবাসিক হোটেল থাকলেও তাহা ভাড়া হয় না। বছরের অধিকাংশ সময় তাহা খালি থাকে। ঐতিহ্যবাহী রামগড় বাজারে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। এ দু’দিন বাজারে মাছ-মাংস, তরু-তরকারীসহ এমন কিছু নাই যে যাহা পাওয়া যায় না। আর হাটের দিন ছাড়া বাকী ৫ দিন মাছ-মাংস পাওয়া যায় না। শুধু তরু-তরকারী, মৌসুমী ফলমূল ও মশলা পাওয়া যায়। অন্য কিছু পাওয়া যায় না। ব্যাচেলর ঘর তেমন ভাড়া পাওয়া যায় না। যা আছে তাও গোয়ালঘরের চেয়েও খারাপ। তারপরও স্থলবন্দর হওয়ার পর ভূমির মূল্য অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার একমাত্র কারণ হলো ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনা।

চলমান পাতা- ০২

পাতা নং- ০২

২০২০ সালে রামগড় স্থলবন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণকালে প্রতি শতক ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রায় ৭ লক্ষ টাকা হরে দেওয়ার পর হু হু করে এই এলাকায় ভূমির মূল্য বেড়ে যায়। গত ২৬ মে রাজধানীর বনানীতে অর্থনৈতিক করিডর ও দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তায় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আলোচনা সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পশ্চাৎ ভূমি বা হিন্টারল্যান্ড হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ওই অঞ্চলের পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হতে পারে। এমনকি সেখান থেকে কাঁচামাল এনে বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন করে ও রপ্তানি করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের মূল্যবান সম্পদ। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বাঁশ বেতসহ অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। সেগুলো আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রূপান্তরের সুযোগ করে দিতে পারি। সবচেয়ে ভালো হয় সেই কাঁচামালগুলো চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করা গেলে। তাতে দুই দেশের জন্যই ভালো হবে। তবে এ জন্য অনুকূল ভূরাজনৈতিক পরিবেশ আগে তৈরি করতে হবে বলে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেটি করা গেলে এ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান অন্যত্র সুবিধাজনক জায়গায় হতে পারে। এ জন্যই আমরা চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে পরিকল্পনা করেছি ও প্রকল্প নিয়েছি।

রাজনীতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। রাজনৈতিক সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে, দায়বদ্ধতাও অনেক, আবার বিরোধী দলের বিরোধীতাও থাকতে পারে। কারণ এ দেশের অধিকাংশ মানুষ নিজ দলকে ফেরেস্তার দল এবং বিরোধী দলকে শয়তানের দল মনে করে। এ সংস্কৃতি থেকে আমাদের বাহির না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।

Tag :
জনপ্রিয়

বিএনপি প্রতিষ্ঠা না হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতনা-নকলায় বিএনপি নেতা ইলিয়াস

মোহাম্মদ আকবর হোসেন ভুঁইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা উজ্জ্বল রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙালীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা দেখা দিয়েছে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু

প্রকাশিত ১২:২৭:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ। সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় স্থলবন্দর সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়ে) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬ একর জমি নতুন করে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ভূমির মালিকদের কাছে জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে নোটিশ জারি করা হয়। নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করার আগ পর্যন্ত সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীরা রামগড় স্থলবন্দরকে একটি পরিত্যক্ত প্রকল্প হিসাবে ধরে নিয়েছে। এককালের প্রাণচাঞ্চল্যকর মহুকুমা শহর একটি মৃত শহরে পরিণত হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। রাত ৮.০০ টার পর রামগড় শহরের হোটেল-রেস্তোরায় ভাত ও নাস্তা পাওয়া যায় না। এমনকি দু-একটা আবাসিক হোটেল থাকলেও তাহা ভাড়া হয় না। বছরের অধিকাংশ সময় তাহা খালি থাকে। ঐতিহ্যবাহী রামগড় বাজারে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। এ দু’দিন বাজারে মাছ-মাংস, তরু-তরকারীসহ এমন কিছু নাই যে যাহা পাওয়া যায় না। আর হাটের দিন ছাড়া বাকী ৫ দিন মাছ-মাংস পাওয়া যায় না। শুধু তরু-তরকারী, মৌসুমী ফলমূল ও মশলা পাওয়া যায়। অন্য কিছু পাওয়া যায় না। ব্যাচেলর ঘর তেমন ভাড়া পাওয়া যায় না। যা আছে তাও গোয়ালঘরের চেয়েও খারাপ। তারপরও স্থলবন্দর হওয়ার পর ভূমির মূল্য অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার একমাত্র কারণ হলো ভারতের সেভেন সিস্টারের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনা।

চলমান পাতা- ০২

পাতা নং- ০২

২০২০ সালে রামগড় স্থলবন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণকালে প্রতি শতক ভূমির ক্ষতিপূরণ প্রায় ৭ লক্ষ টাকা হরে দেওয়ার পর হু হু করে এই এলাকায় ভূমির মূল্য বেড়ে যায়। গত ২৬ মে রাজধানীর বনানীতে অর্থনৈতিক করিডর ও দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তায় ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) আলোচনা সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পশ্চাৎ ভূমি বা হিন্টারল্যান্ড হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ওই অঞ্চলের পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হতে পারে। এমনকি সেখান থেকে কাঁচামাল এনে বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন করে ও রপ্তানি করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের মূল্যবান সম্পদ। ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বাঁশ বেতসহ অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। সেগুলো আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রূপান্তরের সুযোগ করে দিতে পারি। সবচেয়ে ভালো হয় সেই কাঁচামালগুলো চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করা গেলে। তাতে দুই দেশের জন্যই ভালো হবে। তবে এ জন্য অনুকূল ভূরাজনৈতিক পরিবেশ আগে তৈরি করতে হবে বলে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেটি করা গেলে এ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান অন্যত্র সুবিধাজনক জায়গায় হতে পারে। এ জন্যই আমরা চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে পরিকল্পনা করেছি ও প্রকল্প নিয়েছি।

রাজনীতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। রাজনৈতিক সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে, দায়বদ্ধতাও অনেক, আবার বিরোধী দলের বিরোধীতাও থাকতে পারে। কারণ এ দেশের অধিকাংশ মানুষ নিজ দলকে ফেরেস্তার দল এবং বিরোধী দলকে শয়তানের দল মনে করে। এ সংস্কৃতি থেকে আমাদের বাহির না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।