০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এম.এইচ আকাশ মাহমুদ মোল্লা :

বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুর্নীতিতে শিক্ষার্থীরা চরম বিপদে

  • প্রকাশিত ০৬:৪৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • ১২১৩ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ১৭৬টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও, এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ চরম দুর্নীতি ও অনিয়মে নিমজ্জিত, যার ফলে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগে ঘুষ-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং রাজনৈতিক সুপারিশের প্রভাব স্পষ্ট, পাশাপাশি টেন্ডারবাজি, অবকাঠামো নির্মাণে অর্থ আত্মসাৎ, হোস্টেল দখলবাজি, এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি, ‘হিডেন চার্জ’ নামে আর্থিক শোষণ, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই কোর্স পরিচালনা, এবং শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট আটকে রাখার মতো গুরুতর অনিয়ম নিয়মিতই ঘটছে। মালিকপক্ষ ও ট্রাস্টি বোর্ডের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষক নিয়োগে বৈষম্য, প্রশাসনিক স্বচ্ছতার অভাব এবং শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক কারিকুলাম ভিত্তিক কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার অনুমোদন ছাড়াই বিদেশি ডিগ্রির নাম করে টাকা নিচ্ছে, অথচ তাদের সনদ দেশে-বিদেশে স্বীকৃত নয়। এসব দুর্নীতির ফলে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি শেষ করেও সার্টিফিকেট না পেয়ে চাকরির সুযোগ হারাচ্ছেন, উচ্চশিক্ষার আবেদন বাতিল হচ্ছে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন, এবং পরিবারগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন তদন্তে দেখা গেছে যে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় ৭০% এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৮৫% এর বেশি দুর্নীতির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরদারি খুবই সীমিত, এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে একটি স্বাধীন শিক্ষা কমিশন গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত অডিট চালু, দুর্নীতির দায়ে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের শাস্তি, শিক্ষার্থীদের জন্য অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধানের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা জরুরি। না হলে শিক্ষাক্ষেত্রে এই অরাজকতা ও দুর্নীতি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে চরম সংকটে ফেলবে, যা রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে। শিক্ষা যেখানে জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে এই দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক।

Tag :
জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে লুমিনাস ওয়ার্ল্ড লিঃ পক্ষ থেকে টেকসই কৃষি-কৃষক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

এম.এইচ আকাশ মাহমুদ মোল্লা :

বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুর্নীতিতে শিক্ষার্থীরা চরম বিপদে

প্রকাশিত ০৬:৪৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ১৭৬টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও, এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজ চরম দুর্নীতি ও অনিয়মে নিমজ্জিত, যার ফলে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়োগে ঘুষ-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং রাজনৈতিক সুপারিশের প্রভাব স্পষ্ট, পাশাপাশি টেন্ডারবাজি, অবকাঠামো নির্মাণে অর্থ আত্মসাৎ, হোস্টেল দখলবাজি, এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি, ‘হিডেন চার্জ’ নামে আর্থিক শোষণ, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই কোর্স পরিচালনা, এবং শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট আটকে রাখার মতো গুরুতর অনিয়ম নিয়মিতই ঘটছে। মালিকপক্ষ ও ট্রাস্টি বোর্ডের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষক নিয়োগে বৈষম্য, প্রশাসনিক স্বচ্ছতার অভাব এবং শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক কারিকুলাম ভিত্তিক কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার অনুমোদন ছাড়াই বিদেশি ডিগ্রির নাম করে টাকা নিচ্ছে, অথচ তাদের সনদ দেশে-বিদেশে স্বীকৃত নয়। এসব দুর্নীতির ফলে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি শেষ করেও সার্টিফিকেট না পেয়ে চাকরির সুযোগ হারাচ্ছেন, উচ্চশিক্ষার আবেদন বাতিল হচ্ছে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন, এবং পরিবারগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন তদন্তে দেখা গেছে যে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় ৭০% এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৮৫% এর বেশি দুর্নীতির সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে জড়িত। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরদারি খুবই সীমিত, এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে একটি স্বাধীন শিক্ষা কমিশন গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত অডিট চালু, দুর্নীতির দায়ে প্রশাসনিক ব্যক্তিদের শাস্তি, শিক্ষার্থীদের জন্য অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধানের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা জরুরি। না হলে শিক্ষাক্ষেত্রে এই অরাজকতা ও দুর্নীতি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে চরম সংকটে ফেলবে, যা রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে। শিক্ষা যেখানে জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে এই দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক।