মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রাম বাঁশখালী প্রতিনিধি
বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের পূর্ব পালেগ্রাম এলাকায় আজগর আলী, আবদুল কাদের, রুবেল, আবদুল মুবিন, মো. ফারুক ও ফোরকানের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু বাহিনী তৈরি করে এলাকার নিরীহ মানুষের দলিল ও খতিয়ানভুক্ত জায়গা জবরদখল এবং সরকারি পাহাড়-বনভূমি দখল করে আসছিল। উল্লেখিত আসামিরা ৫ আগস্টের পর আমান উল্লাহর ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ এয়াছিনের মালিকানাধীন জায়গায় ফলজ গাছ কেটে লুটপাট চালায়। এসময় তারা এয়াছিনের জায়গা দখল করার উদ্দেশ্যে কয়েকবার বাগানে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে গাছ কেটে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এসময় তারা পার্শ্ববর্তী সরকারি কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে দেয়। এসব ঘটনায় মামলা হলে কিছু দিন পরিস্থিতি শান্ত থাকলে আসামিরা জামিনে এসে আবারো মারমুখী হয়ে উঠে। তারা কাঁটাতারের ঘেরা ও পিলার দিয়ে চলাচল পথ বন্ধ করে জায়গা জবর দখল করে দেন। এরপর এই মামলার আসামিরা জামিনে এসেই কাঁটাতারের ঘেরা ও পিলার দিয়ে চলাচল পথ বন্ধ করে জবর দখল করা জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। সেখানে কাঁটাতারের ঘেরা অপসারণ করে জনগণের চলাচল পথ উম্মুক্ত করা হয়েছে। এর আগে সরকারী জায়গা ও চলাচল পথসহ কাঁটাতারের ঘেরা দিয়ে জায়গা জবর দখল নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ ও পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দীর্ঘ দিনের বিরোধ মিমাংসা হওয়ায় এলাকাবাসী প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আলহাজ্ব আমান উল্লাহ জানান, স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী, ইয়াবা কারবারী, অস্ত্রধারী লোক আমার পৈত্রিক জায়গা, বাগান এমনকি সরকারি জায়গা ও কবরস্থানও জবর দখল করে নেন। বিষয়টি নিয়ে মামলা করি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকেও প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করা হয়। তিনি জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ করেছে। একই সাথে জনগনের চলাচল পথ উম্মুক্ত করা হয়েছে। এতে স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: জসিম উদ্দিন জানান, পালেগ্রামের ওই জায়গায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। জনগণের চলাচল পথ উম্মুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার বাইরেও সেখানে আরো ১৩ একরের মত সরকারি খাস জায়গা আছে। সরকারি সম্পত্তি ও জনগণের সম্পদ রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আশা করি এর ফলে দীর্ঘ দিনের বিরোধ নিরসন হবে।
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, কালীপুর পালেগ্রাম এলাকার ওই ঘটনা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের উপস্থিতিতে সমাধান করা হয়েছে।