১২:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রাম বাঁশখালী প্রতিনিধি

বাঁশখালীতে এস আলমের জেটিঘাটে জেলেদের নৌকা ভিড়তে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

  • প্রকাশিত ০২:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গন্ডামারা পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এস এস পাওয়ার প্লান্টের পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জেলেদের কর্মব্যস্ততার প্রাণকেন্দ্র। এ ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজারেরও বেশি জেলে নৌকা ও সাম্পান নিয়ে গভীর সাগরে মাছ আহরণে গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। 
কিন্তু সম্প্রতি এস আলম গ্রুপের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে এ জেটিঘাটে জেলেদের জীবিকা নির্বাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাহাজের ধাক্কায় বসানো জাল ছিঁড়ে যাওয়া, রাতের আঁধারে সাম্পানের ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটার মতো ঘটনা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও করেছেন স্থানীয় জেলেরা।
বক্তারা বলেন, জেটিঘাট থেকে মাছ ধরতে প্রতিদিন ২০–৩০ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফেরার সময় প্রকল্পের লোকজন মাছ দাবি করে, না দিলে নৌকা ভিড়তে দেওয়া হয় না। এতে তাদের জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়ছে। এ ছাড়া ইলিশ মৌসুমে চার মাসব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভরসা এই ঘাট। কিন্তু নানা বাধার কারণে এখন এ অঞ্চলের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
জেলেরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংসের পথে। তাই অবিলম্বে নৌকা ও সাম্পান নিরাপদে জেটিতে ভেড়ানোর নিশ্চয়তা এবং স্থানীয়দের জন্য এস আলম গ্রুপে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।
অন্যদিকে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম একটি প্রকল্প। জেটিঘাটটি মূলত প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে এবং এলাকা প্রকল্পের নিজস্ব জমি। স্থানীয় কিছু জেলের বোট ও জাল বসানোর কারণে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ঘাটে ভিড়তে ব্যাহত হয়। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে এবং নিয়মিত জাহাজ আসা-যাওয়া করছে। অনেক সময় জাহাজে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও ঘটছে। এসব কারণে বোট ভিড়ানো বা জাল বসানো প্রকল্পের কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত জেটিতে নৌকা ভিড়ানো বা জাল বসানো আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গন্ডামারা এস এস পাওয়ার প্লান্টের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘জেটিঘাট এলাকাটি প্রকল্পের নিজস্ব জায়গা। বর্তমানে ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান। জেলেদের নৌকা ভিড়তে দিলে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজে বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া অনেক সময় জাহাজে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও ঘটে। প্রকল্পের নিরাপত্তা ও কার্যক্রমের স্বার্থে ওই জেটিতে জাল বসানো বা নৌকা ভিড়তে দেওয়া সম্ভব নয়।’
এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় জেলে তারেক, আতা উল্লাহ, হামিদুর রহমান, ইউপি সদস্য মো. জহির, মো. আমিন, শফিকুর রহমান, রবি, নেজাম, কলিম উল্লাহ, মোজাফ্ফর, নাছুসহ অর্ধশতাধিক জেলে।

Tag :
জনপ্রিয়

লক্ষ টাকার চেকটা

মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রাম বাঁশখালী প্রতিনিধি

বাঁশখালীতে এস আলমের জেটিঘাটে জেলেদের নৌকা ভিড়তে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

প্রকাশিত ০২:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গন্ডামারা পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এস এস পাওয়ার প্লান্টের পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জেলেদের কর্মব্যস্ততার প্রাণকেন্দ্র। এ ঘাট থেকে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজারেরও বেশি জেলে নৌকা ও সাম্পান নিয়ে গভীর সাগরে মাছ আহরণে গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। 
কিন্তু সম্প্রতি এস আলম গ্রুপের কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়ানোকে কেন্দ্র করে এ জেটিঘাটে জেলেদের জীবিকা নির্বাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাহাজের ধাক্কায় বসানো জাল ছিঁড়ে যাওয়া, রাতের আঁধারে সাম্পানের ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটার মতো ঘটনা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও করেছেন স্থানীয় জেলেরা।
বক্তারা বলেন, জেটিঘাট থেকে মাছ ধরতে প্রতিদিন ২০–৩০ কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফেরার সময় প্রকল্পের লোকজন মাছ দাবি করে, না দিলে নৌকা ভিড়তে দেওয়া হয় না। এতে তাদের জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়ছে। এ ছাড়া ইলিশ মৌসুমে চার মাসব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভরসা এই ঘাট। কিন্তু নানা বাধার কারণে এখন এ অঞ্চলের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
জেলেরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংসের পথে। তাই অবিলম্বে নৌকা ও সাম্পান নিরাপদে জেটিতে ভেড়ানোর নিশ্চয়তা এবং স্থানীয়দের জন্য এস আলম গ্রুপে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তারা।
অন্যদিকে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট সূত্রে জানা গেছে, এটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম একটি প্রকল্প। জেটিঘাটটি মূলত প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে এবং এলাকা প্রকল্পের নিজস্ব জমি। স্থানীয় কিছু জেলের বোট ও জাল বসানোর কারণে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ঘাটে ভিড়তে ব্যাহত হয়। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে এবং নিয়মিত জাহাজ আসা-যাওয়া করছে। অনেক সময় জাহাজে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও ঘটছে। এসব কারণে বোট ভিড়ানো বা জাল বসানো প্রকল্পের কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত জেটিতে নৌকা ভিড়ানো বা জাল বসানো আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গন্ডামারা এস এস পাওয়ার প্লান্টের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘জেটিঘাট এলাকাটি প্রকল্পের নিজস্ব জায়গা। বর্তমানে ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান। জেলেদের নৌকা ভিড়তে দিলে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজে বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া অনেক সময় জাহাজে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও ঘটে। প্রকল্পের নিরাপত্তা ও কার্যক্রমের স্বার্থে ওই জেটিতে জাল বসানো বা নৌকা ভিড়তে দেওয়া সম্ভব নয়।’
এ সময় মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় জেলে তারেক, আতা উল্লাহ, হামিদুর রহমান, ইউপি সদস্য মো. জহির, মো. আমিন, শফিকুর রহমান, রবি, নেজাম, কলিম উল্লাহ, মোজাফ্ফর, নাছুসহ অর্ধশতাধিক জেলে।