০২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রাজু আলীম :

প্রাইম ব্যাংক পিএলসি এগিয়ে চলার ৩০ বছর

  • প্রকাশিত ০৬:০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৪০ বার দেখা হয়েছে

বিশ্বাস, উদ্ভাবন ও অগ্রগতির ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। গ্রাহকদের আরো ভালো সেবা দেয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রাইম ব্যাংক। গত কয়েক দশক ধরে টেকসই, ব্যাংকিং সেবার সহজলভ্যতা এবং গ্রাহককেন্দ্রিক উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাইম ব্যাংক একটি ভবিষ্যতমুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা থেকে শুরু করে সবুজ অর্থায়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি প্রাইম ব্যাংক দেশ, দেশের মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে আসছে।
আগামী উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে প্রাইম ব্যাংক। বর্তমানে ১১ লাখ গ্রাহককে প্রয়োজনীয় আর্থিক সেবা প্রদান করে আসছে তারা। সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে কনজিউমার, করপোরেট, এসএমই ও ইসলামিক ব্যাংক।
এই ব্যাংক বাংলাদেশের কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর অধীনে নিবন্ধিত বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ১০ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ১০০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে ১৯৯৫ সালের ১৭ এপ্রিল ব্যাংকটি ব্যবসা আরম্ভ করে। ব্যাংকটি দেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে নিবন্ধিত এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত।
প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এর সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ও নীতি-নির্ধারণের ক্ষমতা ১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদের ওপর ন্যস্ত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী। প্রায় ২৯০০ কর্মকর্তা-কর্মচারির সহায়তায় ব্যাংকটির দৈনন্দিন ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক কার্যাবলি পরিচালিত হয়- এর মধ্যে ২৩ শতাংশই নারী।

শহর ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেবা নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে ব্যাংকের রয়েছে ১৪৭টিরও বেশি শাখা। দেশজুড়ে ১৪০ টি লোকেশনে ১৫৮টি এটিএম বুথ এবং আছে ১৫২টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট। ৫৯৬ ফরেন করেসপন্ডেন্ট- ৪৬ দেশে ৩০৫ ব্যাংক । বর্তমানে প্রাইম ব্যাংকের মোট আমানত ৩,৫৮,৮৬৮ মিলিয়ন টাকা, ঋণ এবং অগ্রীম ৩,৪৩, ৪৫৮ মিলিয়ন টাকা, মোট সম্পদের পরিমাণ ৫, ৪৮,১১৮ মিলিয়ন টাকা, শেয়ার প্রতি নীট সম্পদের মূল্য ৩৪.২৭ মিলিয়ন টাকা, শেয়ার প্রতি আয় ৬.৫৮ মিলিয়ন টাকা, মূলধনের বিপরীতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের হার ১৭.৩৭ শতাংশ এবং কর পরবর্তী মুনাফা ৭,৪৭৬ মিলিয়ন টাকা।
আমানত গ্রহণ, নগদ উত্তোলন, কর্পোরেট গ্রাহক সেবা, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় অর্থায়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদান, প্রকল্প অর্থায়ন, ইজারা ও হায়ার পারচেজ অর্থায়ন, রিটেইল ব্যাংকিং, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু প্রভৃতি ব্যাংকিং ব্যবসায়ের সাথে প্রাইম ব্যাংক সংশ্লিষ্ট। সিঙ্গাপুরে অবস্থিত সাবসিডিয়ারি শাখার মাধ্যমে অনাবাসীদের বিদেশি মুদ্রায় সম্পদ ও দায় ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পর্কিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়। ইসলামি পদ্ধতিতে সুদমুক্ত আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইসলামি শাখা খুলে সম্পূর্ণরূপে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম ও লেনদেন পরিচালনা করে আসছে। এ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখাগুলি তার আমানতকারীদের অন্য ইসলামি ব্যাংকগুলির তুলনায় বেশি মুনাফা প্রদান করছে। ২০০৮ সালের আগস্টে ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং সেবাগুলিকে হাসানাহ নামে ব্রান্ডিং করা হয়। এর অন্তর্ভুক্ত সেবাগুলি হলো হাসানাহ সিফা, হাসানাহ আসবাব, হাসানাহ বুরাক, হাসানাহ মনজিল, হাসানাহ মুসাফির ইত্যাদি। ইসলামিক ব্যাংকিং এর ৩০ বছরে হাসানাহ ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে ৫০+ বিলিয়িন ডিপোজিট পোর্টফলিও এবং ৩৫+ বিলিয়ন ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফলিও এই ব্যাংকের। মাইপ্রাইমে ২ লাখ গ্রাহকের মাধ্যমে বার্ষিক লেনদেনের সংখ্যা ৬+ মিলিয়ন।
ব্যাংকটির সঞ্চয় প্রকল্প সমুহের মধ্যে কিস্তিভিত্তিক সঞ্চয় প্রকল্প, মাসিক মুনাফাভিত্তিক আমানত স্কিম, বিশেষ আমানত স্কিম, শিক্ষা সঞ্চয় প্রকল্প, ৩০ দিন মেয়াদি আমানত প্রকল্প, প্রাইম ব্যাংক মানি স্কিম, প্রাইম ব্যাংক বীমাকৃত আমানত স্কিম এবং মাল্টি কারেন্সি বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব, প্রাইম মিলিয়নিয়ার স্কীম, ডাবল বেনিফিট স্কিম, লাখপতি স্কিম, হাউস বিল্ডিং ডিপোজিট স্কিম উল্লেখযোগ্য। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ১৯৯৯ সালে মাস্টার কার্ড ঋণ এবং ২০০০ সালে অন লাইন ব্যাংকিং চালু করেছে। ব্যাংকটি মার্চেন্ট ও বিনিয়োগ ব্যাংক হিসেবেও কাজ করছে এবং এ জন্য প্রধান কার্যালয়ে একটি বিভাগ চালু করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায় ও লেনদেন দ্রুত নিষ্পত্তিসহ আন্তর্জাতিক বাজারে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয়ে রয়টার মেশিন স্থাপন করেছে এবং স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইলেকট্রনিক যোগাযোগ সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণ করে এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাংকটির ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্থ ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রে মোট ২৫০টি ব্যাংকের সাথে এর করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্ক আছে।
দেশের অনগ্রসর জনগণের সাহায্যার্থে বিভিন্ন জনসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২০০২ সালে প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। প্রতিবছর সামাজিক উন্নয়ন ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড- যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, বিপন্ন মানুষের পুনর্বাসনে অবদান রাখার লক্ষ্যে লভ্যাংশের একটি অংশ প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনে প্রদান করে থাকে।
প্রাইম ব্যাংকের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা আজম জে চৌধুরী বাংলাদেশের একজন বরেণ্য শিল্পপতি এবং উদ্যোক্তা। তিনি ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও স্বত্বাধিকারী। একই সঙ্গে তিনি কনসলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ও প্রাক্তন জেমস ফিনলে লিমিটেড চেয়ারম্যান। তিনি এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি ওমেরা পেট্রোলিয়াম, ওমেরা সিলিন্ডার ও ওমেরা ফুয়েল লিমিটেডেরও পরিচালক। আজম জে চৌধুরী বাংলাদেশ এনার্জি কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক। তিনি ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে বরেণ্য এই ব্যক্তিত্ব কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের অডিট ও ফাইনান্স কমিটির চেয়ারম্যান।
এছাড়াও তিনি গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার ব্যবসায়িক এবং সামাজিক সুখ্যাতির কারণে হাঙ্গেরিয় সরকার তাকে বাংলাদেশে অনারারি কনসাল অব হাঙ্গেরি নিযুক্ত করেছে। আজম জে চৌধুরী দক্ষ গলফার হিসেবেও অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন।
১৯৯৫ সালে আজম জে চৌধুরীসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী একত্র হয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তারা উৎপাদনশীল খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি, এসএমই খাতে অর্থায়নের জন্য এই ব্যাংক গড়ে তোলেন। সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এখন ঋণের ৭০ শতাংশ রয়েছে করপোরেট খাতে। এর মধ্যে সিংহভাগ উৎপাদনশীলখাতের ঋণ আর ৬-৭ শতাংশ শুধু ট্রেডিং খাতে। দেশের প্রায় সব বড় করপোরেটকে অর্থায়ন করেছে তারা। বাকি ঋণ গেছে এসএমই ও কৃষি খাতে। এভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গী হয়ে উঠেছে প্রাইম ব্যাংক। শুরু থেকেই এ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দর্শন ছিল টেকসই ব্যাংকিং করা। এখন পর্যন্ত সে পথেই আছে প্রাইম ব্যাংক। টেকসই বলতে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে, পরিবেশবান্ধব কারখানা রয়েছে এবং দূষণ করছে না এমন প্রতিষ্ঠান- যাদের এ ব্যাংক অর্থায়ন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিবেশবান্ধব খাতে ৫ শতাংশ অর্থায়ন করতে বলেছে। অথচ এই খাতে প্রাইম ব্যাংকের অর্থায়নের হার ১৯ শতাংশ। এভাবে টেকসই খাতে ২০ শতাংশের জায়গায় ৩৭ শতাংশ অর্থায়ন করেছে তারা। আগে দেখা হতো শিশুশ্রম হচ্ছে কি না, এখন দেখা হয় কারখানাগুলো পরিবেশদূষণ করছে কি না। এ ছাড়া প্রযুক্তিতে ভালো বিনিয়োগ করেছে ব্যাংকটি। এসবের ফল পাচ্ছে সবাই। এই ব্যাংকের আয়ের তুলনায় খরচের অনুপাত ৪২ শতাংশ। পাশাপাশি ব্যাংককে আরও দক্ষভাবে পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য ডিজিটাল ও রোবোটিকসের ব্যবহার বাড়ানোর হয়েছে, যাতে করে খরচ আরও কমে।
পোশাক খাতের কর্মীদের জন্য মাঝেমধ্যে ছোট ঋণের প্রয়োজন হয়। প্রাইমই প্রথম ব্যাংক, যারা অ্যাপের মাধ্যমে পোশাক কর্মীদের জন্য তাৎক্ষণিক ঋণের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া করপোরেট ও খুচরা গ্রাহকদের জন্যও রয়েছে পৃথক অ্যাপ। এসব অ্যাপে মাসে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। এখন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন, আইএফএসি এর পরামর্শে ডিজিটাল ব্যাংক সেবা চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের বর্তমান সেবাগুলো ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হবে। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে কয়েক মিনিটে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাইম ব্যাংকে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তানজিল চৌধুরী। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংকের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভক্ষণ উপলক্ষ্যে আমি পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছো। এই মা্ইলফলক শুধু আমাদের যাত্রা শুরুর বর্ষপূর্তি উদযাপন নয় বরং এটি গত তিন দশক ধরে আমাদের প্রতি আপনাদের অটুট আস্থা, বিশ্বাস এবং ধারাবাহিক অংশীদারিত্বের প্রতিফলন। ১৯৯৫ সালে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল খুবই সাধারণ কিন্তু উচ্চাভিলাষী। বিশেষ করে নির্ভরযোগ্য, মানুষের জন্যে কল্যাণময় এবং সম্পুর্ণ নিয়ম নীতি অনুসরণ করে এমন একটি ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমগ্র জাতির কল্যাণে অর্থবহ অবদান রাখতে পারে। আমরা এমন একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলাম যেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে সহায়তা করা হবে, ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে শক্তিশালী করা হবে এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অংশীদার হিসেবে অবদান রাখবে। আমাদের উপর আস্থা রাখায় আপনাদের ধন্যবাদ, আপনাদের আস্থার কারণেই আজ আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে এবং সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। গত ৩০ বছর ধরে স্বচ্ছতা, ব্যাংকিং ব্যবস্থার নৈতিকতা অনুসরণ এবং নতুন নতুন সেবা উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতির প্রতি আমরা অটল থেকেছি। আমরা সব সময় গ্রাহকদের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসছি এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছি। আমরা গ্রাহকদের যেসব সেবা দিচ্ছি সেগুলো শুধু দক্ষ এবং নিরাপদই নয় বরং জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নও। ব্যক্তিগত ব্যাংকিং, এসএমই সহায়তা বা কর্পোরেট অর্থায়ন- যেটিই হোক না কেন, আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সহজলভ্য দায়িত্বশীল এবং ফলপ্রসু করে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।
তবে আমাদের যাত্রা এখানেই শেষ নয়। আমরা এখন একটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি- যেখানে প্রযুক্তিই মূল চালিকা শক্তি, বৈশ্বিক প্রবণতা এবং গ্রাহকদের পরিবর্তিত চাহিদা আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক এই রূপান্তরকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের সেবাসমূহ ডিজিটাল করছি, বিশেষ করে মোবাইল কেন্দ্রিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা- নির্ভর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই অর্থায়নের মতো উদ্বাবনী সল্যুশন চালু করছি।
চেয়ারম্যান হিসেবে, আমি প্রাইম ব্যাংকের দীর্ঘদিনের সাফল্য এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে গর্ববোধ করি। আর্থিক পরিবর্তন, বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং অন্যান্য পরিবর্তনগুলো আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছি। আপনাদের সহযোগিতা ও আস্থা ছাড়া এসবের কিছুই সম্ভব হতো না, যা আমাদের আরো ভাল করার এবং নিরন্তর উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।
বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মূলত একটি লক্ষ্যকে কেন্দ্র কের আমরা প্রতিটি সিদ্ধান্ত এবং নতুন সেবা চালু করে থাকি। লক্ষ্যটি হলো- ব্যাংকিং ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যা মানুষের ক্ষমতায়ন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রবৃদ্ধি তখনই অর্থবহ হবে, যখন তা কমিউনিটির উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করবে এবং আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে । এই বিশ্বাসই আগামী ৩০ বছর ও তার পরবর্তী সময়ে আমাদের কৌশল, কার্যক্রম এবং স্বপ্নকে পথ দেখাবে।
আমাদের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস এবং দীর্ঘ যাত্রায় অংশীদার হওয়ায় আবারও আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই ৩০ বছর পূর্তিকে মাইলফলক ধরে আরও উন্নত সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আপনারা শুধু গ্রাহক নন, আপনারাই প্রাইম ব্যাংকের মুল শক্তি ।’
অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেয়া এক বার্তায় প্রাইম ব্যাংকের সিইও হাসান ও. রশিদ বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংক সব সময়ই একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে গেছে। আমরা আমাদের অর্জন উদযাপন করছি এবং নতুন উদ্দীপনা নিয়ে গ্রাহকদের উন্নত সেবা, একসঙ্গে পথচলার অঙ্গীকার এবং স্থায়ী প্রভাব রাখার প্রত্যয়ে ভবিষ্যতকে আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত। দেশের মানুষের সেবায় প্রাইম ব্যাংকের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে ব্যাংক ও কর্মীদের পক্ষ থেকে আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। এই অসাধারণ মাইলফলকের সমান অংশীদার আমাদের সম্মানীত গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারাও। আমাদের প্রতি আপনাদের আস্থা, বিশ্বাস ও মতামত ব্যাংকের বিকাশে অবদান রেখেছে, আমাদের পরিবর্তনে অবদান রেখেছে এবং প্রতিটি সেক্টরে ব্যাংকের এগিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছে।
সততা, নতুন নতুন উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে সর্বোচ্চ মানের সেবা দেয়ার প্রতিশ্রতি নিয়ে তিন দশক আগে যাত্রা শুরু করে প্রাইম ব্যাংক শুধুমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয় বরং অগ্রগতির অনুঘটক হিসেবে সেবা প্রদান করাই আমাদের লক্ষ্য। ব্যক্তি পর্যায়ে আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা কিংবা উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা বা বড় বড় জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন- প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা গণ-মানুষের ব্যাংক হয়ে উঠতে নিরলস কাজ করে চলেছি।
আমাদের অগ্রযাত্রায় মূল উদ্দেশ্যে ছিল- নিয়ম নীতি অনুসরণ করে নৈতিক এবং ভবিষ্যতমুখী ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করা। ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে নিয়ম নীতি অনুসরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা শুধু আর্থিক সেবা দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সম্পর্ক উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আর এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে মূলত বিশ্বাস, স্বচ্ছতা এবং গ্রাহকের প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে।
দেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা ডিজিটাল উদ্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকিং সেবাকে গ্রাহকের হাতের নাগালে পৌছে দিচ্ছি, সবার ভবিষ্যত উন্নয়নে আমরা টেকসই প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করছি এবং আমাদের স্টেকহোল্ডারদের চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ কর্মদক্ষতার মানদন্ড উন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম, এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক এবং এসএমই ভিত্তিক সেবাগুলো মূলত গ্রাহকদের আরও উন্নত, দ্রুত এবং দকক্ষভাবে সেবা দেয়ার স্বচ্ছ উদ্দেশ্যে চালু হয়েছে।
আগামীর সফলতা কামনায়, ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে আমরা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে আরো বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ, জনগণ এবং তাদের ভবিষ্যত গড়তেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রাইম ব্যাংক । এই যাত্রা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে চালিকা শক্তি হয়ে উঠতে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ, তরুণ ও নারীদের ক্ষমতায়ণ, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং টেকসই, দায়িত্বশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
আমাদের এই দীর্ঘযাত্রার অংশ হওয়া ও আমাদের ওপর আস্থা রাখায় গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি- বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয় দেশে ভবিষ্যত ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাফল্যের সাথে আরও ৩০ বছর এক সাথে পথ পাড়ি দিবো আমরা।

Tag :
জনপ্রিয়

সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতায় ড. ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচন কালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের

রাজু আলীম :

প্রাইম ব্যাংক পিএলসি এগিয়ে চলার ৩০ বছর

প্রকাশিত ০৬:০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

বিশ্বাস, উদ্ভাবন ও অগ্রগতির ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। গ্রাহকদের আরো ভালো সেবা দেয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রাইম ব্যাংক। গত কয়েক দশক ধরে টেকসই, ব্যাংকিং সেবার সহজলভ্যতা এবং গ্রাহককেন্দ্রিক উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রাইম ব্যাংক একটি ভবিষ্যতমুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা থেকে শুরু করে সবুজ অর্থায়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি প্রাইম ব্যাংক দেশ, দেশের মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করে আসছে।
আগামী উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে প্রাইম ব্যাংক। বর্তমানে ১১ লাখ গ্রাহককে প্রয়োজনীয় আর্থিক সেবা প্রদান করে আসছে তারা। সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে কনজিউমার, করপোরেট, এসএমই ও ইসলামিক ব্যাংক।
এই ব্যাংক বাংলাদেশের কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর অধীনে নিবন্ধিত বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক। প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যের ১০ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত ১০০ মিলিয়ন টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে ১৯৯৫ সালের ১৭ এপ্রিল ব্যাংকটি ব্যবসা আরম্ভ করে। ব্যাংকটি দেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে নিবন্ধিত এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত।
প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড এর সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ও নীতি-নির্ধারণের ক্ষমতা ১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদের ওপর ন্যস্ত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী। প্রায় ২৯০০ কর্মকর্তা-কর্মচারির সহায়তায় ব্যাংকটির দৈনন্দিন ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক কার্যাবলি পরিচালিত হয়- এর মধ্যে ২৩ শতাংশই নারী।

শহর ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেবা নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে ব্যাংকের রয়েছে ১৪৭টিরও বেশি শাখা। দেশজুড়ে ১৪০ টি লোকেশনে ১৫৮টি এটিএম বুথ এবং আছে ১৫২টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট। ৫৯৬ ফরেন করেসপন্ডেন্ট- ৪৬ দেশে ৩০৫ ব্যাংক । বর্তমানে প্রাইম ব্যাংকের মোট আমানত ৩,৫৮,৮৬৮ মিলিয়ন টাকা, ঋণ এবং অগ্রীম ৩,৪৩, ৪৫৮ মিলিয়ন টাকা, মোট সম্পদের পরিমাণ ৫, ৪৮,১১৮ মিলিয়ন টাকা, শেয়ার প্রতি নীট সম্পদের মূল্য ৩৪.২৭ মিলিয়ন টাকা, শেয়ার প্রতি আয় ৬.৫৮ মিলিয়ন টাকা, মূলধনের বিপরীতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের হার ১৭.৩৭ শতাংশ এবং কর পরবর্তী মুনাফা ৭,৪৭৬ মিলিয়ন টাকা।
আমানত গ্রহণ, নগদ উত্তোলন, কর্পোরেট গ্রাহক সেবা, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় অর্থায়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদান, প্রকল্প অর্থায়ন, ইজারা ও হায়ার পারচেজ অর্থায়ন, রিটেইল ব্যাংকিং, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু প্রভৃতি ব্যাংকিং ব্যবসায়ের সাথে প্রাইম ব্যাংক সংশ্লিষ্ট। সিঙ্গাপুরে অবস্থিত সাবসিডিয়ারি শাখার মাধ্যমে অনাবাসীদের বিদেশি মুদ্রায় সম্পদ ও দায় ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পর্কিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়। ইসলামি পদ্ধতিতে সুদমুক্ত আর্থিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইসলামি শাখা খুলে সম্পূর্ণরূপে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম ও লেনদেন পরিচালনা করে আসছে। এ ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখাগুলি তার আমানতকারীদের অন্য ইসলামি ব্যাংকগুলির তুলনায় বেশি মুনাফা প্রদান করছে। ২০০৮ সালের আগস্টে ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং সেবাগুলিকে হাসানাহ নামে ব্রান্ডিং করা হয়। এর অন্তর্ভুক্ত সেবাগুলি হলো হাসানাহ সিফা, হাসানাহ আসবাব, হাসানাহ বুরাক, হাসানাহ মনজিল, হাসানাহ মুসাফির ইত্যাদি। ইসলামিক ব্যাংকিং এর ৩০ বছরে হাসানাহ ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে ৫০+ বিলিয়িন ডিপোজিট পোর্টফলিও এবং ৩৫+ বিলিয়ন ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফলিও এই ব্যাংকের। মাইপ্রাইমে ২ লাখ গ্রাহকের মাধ্যমে বার্ষিক লেনদেনের সংখ্যা ৬+ মিলিয়ন।
ব্যাংকটির সঞ্চয় প্রকল্প সমুহের মধ্যে কিস্তিভিত্তিক সঞ্চয় প্রকল্প, মাসিক মুনাফাভিত্তিক আমানত স্কিম, বিশেষ আমানত স্কিম, শিক্ষা সঞ্চয় প্রকল্প, ৩০ দিন মেয়াদি আমানত প্রকল্প, প্রাইম ব্যাংক মানি স্কিম, প্রাইম ব্যাংক বীমাকৃত আমানত স্কিম এবং মাল্টি কারেন্সি বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব, প্রাইম মিলিয়নিয়ার স্কীম, ডাবল বেনিফিট স্কিম, লাখপতি স্কিম, হাউস বিল্ডিং ডিপোজিট স্কিম উল্লেখযোগ্য। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ১৯৯৯ সালে মাস্টার কার্ড ঋণ এবং ২০০০ সালে অন লাইন ব্যাংকিং চালু করেছে। ব্যাংকটি মার্চেন্ট ও বিনিয়োগ ব্যাংক হিসেবেও কাজ করছে এবং এ জন্য প্রধান কার্যালয়ে একটি বিভাগ চালু করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায় ও লেনদেন দ্রুত নিষ্পত্তিসহ আন্তর্জাতিক বাজারে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রাইম ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয়ে রয়টার মেশিন স্থাপন করেছে এবং স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইলেকট্রনিক যোগাযোগ সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণ করে এর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাংকটির ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্থ ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রে মোট ২৫০টি ব্যাংকের সাথে এর করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্ক আছে।
দেশের অনগ্রসর জনগণের সাহায্যার্থে বিভিন্ন জনসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২০০২ সালে প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। প্রতিবছর সামাজিক উন্নয়ন ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড- যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, বিপন্ন মানুষের পুনর্বাসনে অবদান রাখার লক্ষ্যে লভ্যাংশের একটি অংশ প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনে প্রদান করে থাকে।
প্রাইম ব্যাংকের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা আজম জে চৌধুরী বাংলাদেশের একজন বরেণ্য শিল্পপতি এবং উদ্যোক্তা। তিনি ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও স্বত্বাধিকারী। একই সঙ্গে তিনি কনসলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ও প্রাক্তন জেমস ফিনলে লিমিটেড চেয়ারম্যান। তিনি এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি ওমেরা পেট্রোলিয়াম, ওমেরা সিলিন্ডার ও ওমেরা ফুয়েল লিমিটেডেরও পরিচালক। আজম জে চৌধুরী বাংলাদেশ এনার্জি কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক। তিনি ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে বরেণ্য এই ব্যক্তিত্ব কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের অডিট ও ফাইনান্স কমিটির চেয়ারম্যান।
এছাড়াও তিনি গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার ব্যবসায়িক এবং সামাজিক সুখ্যাতির কারণে হাঙ্গেরিয় সরকার তাকে বাংলাদেশে অনারারি কনসাল অব হাঙ্গেরি নিযুক্ত করেছে। আজম জে চৌধুরী দক্ষ গলফার হিসেবেও অনেক সাফল্য অর্জন করেছেন।
১৯৯৫ সালে আজম জে চৌধুরীসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী একত্র হয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তারা উৎপাদনশীল খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি, এসএমই খাতে অর্থায়নের জন্য এই ব্যাংক গড়ে তোলেন। সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এখন ঋণের ৭০ শতাংশ রয়েছে করপোরেট খাতে। এর মধ্যে সিংহভাগ উৎপাদনশীলখাতের ঋণ আর ৬-৭ শতাংশ শুধু ট্রেডিং খাতে। দেশের প্রায় সব বড় করপোরেটকে অর্থায়ন করেছে তারা। বাকি ঋণ গেছে এসএমই ও কৃষি খাতে। এভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গী হয়ে উঠেছে প্রাইম ব্যাংক। শুরু থেকেই এ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দর্শন ছিল টেকসই ব্যাংকিং করা। এখন পর্যন্ত সে পথেই আছে প্রাইম ব্যাংক। টেকসই বলতে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে, পরিবেশবান্ধব কারখানা রয়েছে এবং দূষণ করছে না এমন প্রতিষ্ঠান- যাদের এ ব্যাংক অর্থায়ন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিবেশবান্ধব খাতে ৫ শতাংশ অর্থায়ন করতে বলেছে। অথচ এই খাতে প্রাইম ব্যাংকের অর্থায়নের হার ১৯ শতাংশ। এভাবে টেকসই খাতে ২০ শতাংশের জায়গায় ৩৭ শতাংশ অর্থায়ন করেছে তারা। আগে দেখা হতো শিশুশ্রম হচ্ছে কি না, এখন দেখা হয় কারখানাগুলো পরিবেশদূষণ করছে কি না। এ ছাড়া প্রযুক্তিতে ভালো বিনিয়োগ করেছে ব্যাংকটি। এসবের ফল পাচ্ছে সবাই। এই ব্যাংকের আয়ের তুলনায় খরচের অনুপাত ৪২ শতাংশ। পাশাপাশি ব্যাংককে আরও দক্ষভাবে পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য ডিজিটাল ও রোবোটিকসের ব্যবহার বাড়ানোর হয়েছে, যাতে করে খরচ আরও কমে।
পোশাক খাতের কর্মীদের জন্য মাঝেমধ্যে ছোট ঋণের প্রয়োজন হয়। প্রাইমই প্রথম ব্যাংক, যারা অ্যাপের মাধ্যমে পোশাক কর্মীদের জন্য তাৎক্ষণিক ঋণের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া করপোরেট ও খুচরা গ্রাহকদের জন্যও রয়েছে পৃথক অ্যাপ। এসব অ্যাপে মাসে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। এখন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন, আইএফএসি এর পরামর্শে ডিজিটাল ব্যাংক সেবা চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের বর্তমান সেবাগুলো ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হবে। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে কয়েক মিনিটে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাইম ব্যাংকে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তানজিল চৌধুরী। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংকের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভক্ষণ উপলক্ষ্যে আমি পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছো। এই মা্ইলফলক শুধু আমাদের যাত্রা শুরুর বর্ষপূর্তি উদযাপন নয় বরং এটি গত তিন দশক ধরে আমাদের প্রতি আপনাদের অটুট আস্থা, বিশ্বাস এবং ধারাবাহিক অংশীদারিত্বের প্রতিফলন। ১৯৯৫ সালে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল খুবই সাধারণ কিন্তু উচ্চাভিলাষী। বিশেষ করে নির্ভরযোগ্য, মানুষের জন্যে কল্যাণময় এবং সম্পুর্ণ নিয়ম নীতি অনুসরণ করে এমন একটি ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমগ্র জাতির কল্যাণে অর্থবহ অবদান রাখতে পারে। আমরা এমন একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলাম যেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে সহায়তা করা হবে, ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে শক্তিশালী করা হবে এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অংশীদার হিসেবে অবদান রাখবে। আমাদের উপর আস্থা রাখায় আপনাদের ধন্যবাদ, আপনাদের আস্থার কারণেই আজ আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে এবং সাফল্যের পথে এগিয়ে চলেছে। গত ৩০ বছর ধরে স্বচ্ছতা, ব্যাংকিং ব্যবস্থার নৈতিকতা অনুসরণ এবং নতুন নতুন সেবা উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতির প্রতি আমরা অটল থেকেছি। আমরা সব সময় গ্রাহকদের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসছি এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছি। আমরা গ্রাহকদের যেসব সেবা দিচ্ছি সেগুলো শুধু দক্ষ এবং নিরাপদই নয় বরং জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নও। ব্যক্তিগত ব্যাংকিং, এসএমই সহায়তা বা কর্পোরেট অর্থায়ন- যেটিই হোক না কেন, আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সহজলভ্য দায়িত্বশীল এবং ফলপ্রসু করে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।
তবে আমাদের যাত্রা এখানেই শেষ নয়। আমরা এখন একটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি- যেখানে প্রযুক্তিই মূল চালিকা শক্তি, বৈশ্বিক প্রবণতা এবং গ্রাহকদের পরিবর্তিত চাহিদা আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক এই রূপান্তরকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের সেবাসমূহ ডিজিটাল করছি, বিশেষ করে মোবাইল কেন্দ্রিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা- নির্ভর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই অর্থায়নের মতো উদ্বাবনী সল্যুশন চালু করছি।
চেয়ারম্যান হিসেবে, আমি প্রাইম ব্যাংকের দীর্ঘদিনের সাফল্য এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে গর্ববোধ করি। আর্থিক পরিবর্তন, বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং অন্যান্য পরিবর্তনগুলো আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছি। আপনাদের সহযোগিতা ও আস্থা ছাড়া এসবের কিছুই সম্ভব হতো না, যা আমাদের আরো ভাল করার এবং নিরন্তর উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে।
বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মূলত একটি লক্ষ্যকে কেন্দ্র কের আমরা প্রতিটি সিদ্ধান্ত এবং নতুন সেবা চালু করে থাকি। লক্ষ্যটি হলো- ব্যাংকিং ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যা মানুষের ক্ষমতায়ন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রবৃদ্ধি তখনই অর্থবহ হবে, যখন তা কমিউনিটির উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহিত করবে এবং আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখবে । এই বিশ্বাসই আগামী ৩০ বছর ও তার পরবর্তী সময়ে আমাদের কৌশল, কার্যক্রম এবং স্বপ্নকে পথ দেখাবে।
আমাদের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস এবং দীর্ঘ যাত্রায় অংশীদার হওয়ায় আবারও আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই ৩০ বছর পূর্তিকে মাইলফলক ধরে আরও উন্নত সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আপনারা শুধু গ্রাহক নন, আপনারাই প্রাইম ব্যাংকের মুল শক্তি ।’
অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেয়া এক বার্তায় প্রাইম ব্যাংকের সিইও হাসান ও. রশিদ বলেন, ‘প্রাইম ব্যাংক সব সময়ই একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে গেছে। আমরা আমাদের অর্জন উদযাপন করছি এবং নতুন উদ্দীপনা নিয়ে গ্রাহকদের উন্নত সেবা, একসঙ্গে পথচলার অঙ্গীকার এবং স্থায়ী প্রভাব রাখার প্রত্যয়ে ভবিষ্যতকে আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত। দেশের মানুষের সেবায় প্রাইম ব্যাংকের ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে ব্যাংক ও কর্মীদের পক্ষ থেকে আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। এই অসাধারণ মাইলফলকের সমান অংশীদার আমাদের সম্মানীত গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারাও। আমাদের প্রতি আপনাদের আস্থা, বিশ্বাস ও মতামত ব্যাংকের বিকাশে অবদান রেখেছে, আমাদের পরিবর্তনে অবদান রেখেছে এবং প্রতিটি সেক্টরে ব্যাংকের এগিয়ে যেতে সাহস যুগিয়েছে।
সততা, নতুন নতুন উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে সর্বোচ্চ মানের সেবা দেয়ার প্রতিশ্রতি নিয়ে তিন দশক আগে যাত্রা শুরু করে প্রাইম ব্যাংক শুধুমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয় বরং অগ্রগতির অনুঘটক হিসেবে সেবা প্রদান করাই আমাদের লক্ষ্য। ব্যক্তি পর্যায়ে আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা কিংবা উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা বা বড় বড় জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন- প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা গণ-মানুষের ব্যাংক হয়ে উঠতে নিরলস কাজ করে চলেছি।
আমাদের অগ্রযাত্রায় মূল উদ্দেশ্যে ছিল- নিয়ম নীতি অনুসরণ করে নৈতিক এবং ভবিষ্যতমুখী ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্বারোপ করা। ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে নিয়ম নীতি অনুসরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা শুধু আর্থিক সেবা দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সম্পর্ক উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আর এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে মূলত বিশ্বাস, স্বচ্ছতা এবং গ্রাহকের প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে।
দেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা ডিজিটাল উদ্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকিং সেবাকে গ্রাহকের হাতের নাগালে পৌছে দিচ্ছি, সবার ভবিষ্যত উন্নয়নে আমরা টেকসই প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করছি এবং আমাদের স্টেকহোল্ডারদের চাহিদা পূরণে অভ্যন্তরীণ কর্মদক্ষতার মানদন্ড উন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম, এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক এবং এসএমই ভিত্তিক সেবাগুলো মূলত গ্রাহকদের আরও উন্নত, দ্রুত এবং দকক্ষভাবে সেবা দেয়ার স্বচ্ছ উদ্দেশ্যে চালু হয়েছে।
আগামীর সফলতা কামনায়, ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে আমরা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে আরো বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ, জনগণ এবং তাদের ভবিষ্যত গড়তেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রাইম ব্যাংক । এই যাত্রা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে চালিকা শক্তি হয়ে উঠতে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করছি। ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ, তরুণ ও নারীদের ক্ষমতায়ণ, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং টেকসই, দায়িত্বশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
আমাদের এই দীর্ঘযাত্রার অংশ হওয়া ও আমাদের ওপর আস্থা রাখায় গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি- বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয় দেশে ভবিষ্যত ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাফল্যের সাথে আরও ৩০ বছর এক সাথে পথ পাড়ি দিবো আমরা।