ঢাকা ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা এবং খুলনায় একজন সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাব গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলুল কবীর বলেন,
“সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক হামলা এবং খুলনায় সাংবাদিক ওয়াহিদুজ্জামান বুলুর নির্মম হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক ঘটনা। এটি শুধু একজন সাংবাদিকের প্রতি নয়, দেশের গণমাধ্যম ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে দেওয়া ভয়ঙ্কর আঘাত।
সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে তথ্যের সুষ্ঠু পরিবেশন নিশ্চিত করে। তাই সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু এই হামলা-হত্যার ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের সাংবাদিকরা এখন বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত এসব ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্বও সরকারের। মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা রক্ষায় অবহেলা অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশের গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিপর্যস্ত হবে। আমি দেশপ্রেমিক সবাইকে একযোগে কাজ করে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”
গত এক সপ্তাহে সংঘটিত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘটনার মধ্যে রয়েছে:
৩১ আগস্ট, খুলনায় স্থানীয় সাংবাদিক ওয়াহিদুজ্জামান বুলুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
২৭ আগস্ট, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হন বাংলা ভিশনের কেফায়েত শাকিল, দ্য নিউ নেশনের নোমান মোশাররফ ও সৈয়দ শিমুল পারভেজ, সপ্তমী মণ্ডল ঋতু এবং খোলা বাজারের রোজিনা বেগম।
২৯ আগস্ট, কাকরাইলে গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচির সময় সংঘর্ষে আহত হন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নাইমুর রহমান দুর্জয়।
৩০ আগস্ট, মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের পেছনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ডিবিসির রেদওয়ানুল হক এবং দৈনিক কাবেলার এ জেড ভূঁইয়া আনাস।
আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাব বলেছে, এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তার না করলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আরও সংকটাপন্ন হবে। সংগঠনটি আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ। সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা চলতে থাকলে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।