গাজীপুর জেলার ওপর দিয়ে যাওয়া ব্যস্ততম ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক এখন যেন এক ভয়ঙ্কর মৃত্যুকূপ। সড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হওয়া গভীর গর্ত ও অনিয়মতান্ত্রিক ইউটার্ন কাঠামো ইতোমধ্যে প্রাণ কেড়েছে অনেকের। যেকোনো সময় ঘটতে পারে আরও বড় দুর্ঘটনা—অথচ দেখার কেউ নেই।
সড়কের মাঝে যত্রতত্র গাছ রোপণ করা হয়েছে, যা ইউটার্ন নেওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন আড়াল করে ফেলে। ফলত, প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) মাঝে মাঝে গাছ ছাঁটাই করলেও বাস্তবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি একটুও কমেনি।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ছোট যানবাহনের চলাচলের জন্য কোনো পৃথক লেন না থাকা। ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক, এমনকি বাইসাইকেলও বাধ্য হয়ে মহাসড়কে উঠে পড়ছে। এতে করে তৈরি হচ্ছে চরম বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনার প্রবল ঝুঁকি।
জনগণের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও সড়ক ও জনপথের দায়িত্বশীলদের মধ্যে দৃশ্যত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরিফুল আলমের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
“এ যেন রাষ্ট্রীয় অযোগ্যতার প্রতীক” — শাহান সাহাবুদ্দিন এই প্রসঙ্গে কবি, লেখক ও সাংবাদিক শাহান সাহাবুদ্দিন বলেন:
“ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ করিডর, অথচ আজ তা রূপ নিয়েছে এক চলমান মৃত্যুফাঁদে। এটা শুধুই একটি সড়ক-ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় অযোগ্যতার এক প্রতীক। যখন জনগণ প্রতিদিন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে, তখন সওজের নির্বিকারতা যেন প্রশাসনিক নিষ্ঠুরতার প্রতিচ্ছবি।
আমরা চাই অবিলম্বে গর্ত মেরামত, ইউটার্ন ডিজাইন পুনর্বিন্যাস এবং ছোট যানবাহনের জন্য বিকল্প লেন নির্মাণ। নইলে এই সড়ক আরও কত জীবন কেড়ে নেবে, তা আমরা কেউ জানি না।”
আর কত জীবন চলে গেলে দায়িত্বশীলদের হুঁশ ফিরবে? সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দ্বায় কাদের উপর? প্রতিদিন জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হওয়া সাধারণ মানুষ মহাসড়কে যানবাহনে কতটা নিরাপদে চলাচল করে?