০১:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রাজু আলীম :

ট্রাম্পশুল্ক : ড. ইউনূস সরকারের বাণিজ্যিক সাফল্য ও সম্ভাবনা

  • প্রকাশিত ০৩:২৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ৮ বার দেখা হয়েছে

ট্যারিফ! আলোচিত সমালোচিত এই শব্দটি যেন বাংলাদেশের অর্থনীতির ভাগ্য নির্ধারণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিন মাস আগেও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত ছিল ৩৫ শতাংশ ট্যারিফ। তাই জনমনে ভয় কাজ করছিল ব্যবসা অন্য দেশে চলে যাওয়ার। নতুন করে মার্কিন ট্যারিফ নির্ধারিত হয়েছে ২০ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ট্যারিফ আমাদের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। মার্কিন ট্যারিফ নীতির ফলে প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে বায়ার হান্টিং শুরু হতো। এতে একটা শঙ্কা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এখন এই শঙ্কা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে গেল।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য। তিনি শুক্রবার এক অভিনন্দন বার্তায় বলেন, ‘শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা পূর্বে আরোপিত হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও সেটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।’

তিনি উল্লেখ করেন, আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এ চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে। এই অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না, বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।

শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বাণিজ্য উপদেষ্টা তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব।যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এটিকে তাদের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করছে। অর্থনীতিবিদদেরও অনেকে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আগের দুই দফা আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন চুক্তি’ করার অভিযোগ উঠেছিল। সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা অবশ্য সমঝোতার স্বার্থে আলোচনার অনেক বিষয় গোপন রাখার কথা বলেছিলেন।
তবে শুল্ক কমার বিষয়টি গার্মেন্টস শিল্পসহ ব্যবসায়ীদের জন্য স্বস্তির বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন।

কারণ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া সব পণ্যের ওপর আগে থেকেই গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এর সঙ্গে পাল্টা ৩৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে বড় অংকের অর্থ্যাৎ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক গুনতে হতো বাংলাদেশকে।

সেখানে এখন পুরাতন ১৫ শতাংশ এবং নতুন ২০ শতাংশ মিলিয়ে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা হতাশ করেছেন সমালোচকদের।

যদি সহজ ভাবে বলতেই হয় তবে বাংলাদেশের জন্যে আমেরিকা থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর ইমপোর্ট বাড়ালেই ২০% ট্যারিফ পাওয়া পসিবল ছিল। শেষ মেষ তাই হয়েছে। গার্মেন্টস রপ্তানি করতে পারে এমন প্রায় সব দেশের কাছাকাছি বাংলাদেশের ট্যারিফ ধার্য হয়েছে। এইটা একটা বিশাল বড় রিলিফ।

তবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কটাক্ষ করতে চাইছেন; তাদের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বিগত সরকার অর্থাৎ আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনা ভারতের কাছে কিস্তিতে দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করার সময়কালে তারা যেন ঘুমে ছিলেন। গত ১৬ বছরে ভারতের সাথে হওয়া গোপন কিছু চুক্তি রয়েছে, যেগুলো কেবল হাসিনা এবং ভারত জানতো। কোন চুক্তির বিস্তারিত চুক্তি করার আগে দেশের মানুষ জানতো না। এই চুক্তি গুলো দেশের মানুষের প্রতি তীব্র অন্যায়।

ইন্ডিয়ার পণ্য যাতে সহজে বিনা মাসুল বা শুল্কে থাইল্যান্ডে যেতে পারে এইজন্য তড়িঘড়ি করে একটি চুক্তি করেছিল বিগত সরকার। অর্থাৎ বাংলাদেশের উপর দিয়ে, বাংলাদেশের রাস্তা দিয়ে, ভারতীয় পণ্য যাবে থাইল্যান্ডে। এই চুক্তির অধীনে যেন ভারতের কানাকড়িও খরচ না হয়, এবং ভবিষ্যতে এই চুক্তি যেন কোনমতেই বাতিল না হতে পারে, সেগুলি নিশ্চিত করতে রাজধানী ঢাকায় এসেছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

যদিও বলা হয়েছিল যে, নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে এসেছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনা নিজেই এক সময় বলেছিলেন “ভারতকে যা দিয়েছি, আজীবন মনে রাখবে।” তার করা প্রতিটি চুক্তি ছিলো ভারতের ইন্টারেস্টে। ভারতের নাগরিকেরা এই দেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করে গেছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, শেখ হাসিনা ভারতের কাছে তাবত দেশবিরোধী দাসখত চুক্তির বিনিময়ে সবসময়ই খালি হাতে ফিরতো। কখনো এয়ারপোর্টে নেচে আসতো, কখনও নরেন্দ্র মোদির সাথে হিন্দি ভাষায় খুনসুটি করতো। বাংলাদেশ কিচ্ছু পেতো না। পেতো কেবল সীমান্তে অন্যায় হত্যাকাণ্ড।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে চীন থেকে সরাসরি পণ্য আনা হতো না। ভারত ঘুরে আনতে হতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর সরাসরি চীন থেকে পণ্য আনে বাংলাদেশ।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমাদের সমুদ্র পর্যন্ত স্বাধীন রাখেননি। তার পলায়নের সাথে সাথে স্থলের সাথে সাথে আমাদের সমুদ্র জলরাশিও স্বাধীন হলো। এখন এই জলপথে দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের জাহাজ, ছুটবে দেশ থেকে দেশান্তরে।

কোন দেশ কী বললো, আমাদের আর সেইটা গুনতে হবে না। আমাদের পণ্য আমরা বিক্রি করবো। আমাদের যেখান থেকে দরকার সেখান থেকে কিনবো। আমাদের ব্যবসা এখন আসমানে পাখা মেলবে। আর যেই জাতির সমুদ্র যত বেশি স্বাধীন, সেই জাতির উন্নতি যে তত দ্রুত হয়, এইটা কি আর নতুন করে বলে দিতে হবে?

তাই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর আস্থা রাখতে ইচ্ছা পোষণ করি। পরবর্তী সিদ্ধান্তের ভার সময়ের ওপর ছেড়ে দেয়াই সমীচিন।

Tag :
জনপ্রিয়

মাদক নিরাময় কেন্দ্র ‘বীকন’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নাজরাতান নাঈম রাতুল বাঁচতে চায়

রাজু আলীম :

ট্রাম্পশুল্ক : ড. ইউনূস সরকারের বাণিজ্যিক সাফল্য ও সম্ভাবনা

প্রকাশিত ০৩:২৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

ট্যারিফ! আলোচিত সমালোচিত এই শব্দটি যেন বাংলাদেশের অর্থনীতির ভাগ্য নির্ধারণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিন মাস আগেও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত ছিল ৩৫ শতাংশ ট্যারিফ। তাই জনমনে ভয় কাজ করছিল ব্যবসা অন্য দেশে চলে যাওয়ার। নতুন করে মার্কিন ট্যারিফ নির্ধারিত হয়েছে ২০ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ট্যারিফ আমাদের চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। মার্কিন ট্যারিফ নীতির ফলে প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে বায়ার হান্টিং শুরু হতো। এতে একটা শঙ্কা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এখন এই শঙ্কা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে গেল।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিকে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য। তিনি শুক্রবার এক অভিনন্দন বার্তায় বলেন, ‘শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা পূর্বে আরোপিত হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও সেটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।’

তিনি উল্লেখ করেন, আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এ চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে। এই অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না, বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।

শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। বাণিজ্য উপদেষ্টা তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব।যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এটিকে তাদের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করছে। অর্থনীতিবিদদেরও অনেকে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আগের দুই দফা আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন চুক্তি’ করার অভিযোগ উঠেছিল। সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা অবশ্য সমঝোতার স্বার্থে আলোচনার অনেক বিষয় গোপন রাখার কথা বলেছিলেন।
তবে শুল্ক কমার বিষয়টি গার্মেন্টস শিল্পসহ ব্যবসায়ীদের জন্য স্বস্তির বলে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন।

কারণ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া সব পণ্যের ওপর আগে থেকেই গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এর সঙ্গে পাল্টা ৩৫ শতাংশ শুল্ক যোগ হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে বড় অংকের অর্থ্যাৎ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক গুনতে হতো বাংলাদেশকে।

সেখানে এখন পুরাতন ১৫ শতাংশ এবং নতুন ২০ শতাংশ মিলিয়ে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে মোট ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা হতাশ করেছেন সমালোচকদের।

যদি সহজ ভাবে বলতেই হয় তবে বাংলাদেশের জন্যে আমেরিকা থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর ইমপোর্ট বাড়ালেই ২০% ট্যারিফ পাওয়া পসিবল ছিল। শেষ মেষ তাই হয়েছে। গার্মেন্টস রপ্তানি করতে পারে এমন প্রায় সব দেশের কাছাকাছি বাংলাদেশের ট্যারিফ ধার্য হয়েছে। এইটা একটা বিশাল বড় রিলিফ।

তবে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কটাক্ষ করতে চাইছেন; তাদের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বিগত সরকার অর্থাৎ আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনা ভারতের কাছে কিস্তিতে দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করার সময়কালে তারা যেন ঘুমে ছিলেন। গত ১৬ বছরে ভারতের সাথে হওয়া গোপন কিছু চুক্তি রয়েছে, যেগুলো কেবল হাসিনা এবং ভারত জানতো। কোন চুক্তির বিস্তারিত চুক্তি করার আগে দেশের মানুষ জানতো না। এই চুক্তি গুলো দেশের মানুষের প্রতি তীব্র অন্যায়।

ইন্ডিয়ার পণ্য যাতে সহজে বিনা মাসুল বা শুল্কে থাইল্যান্ডে যেতে পারে এইজন্য তড়িঘড়ি করে একটি চুক্তি করেছিল বিগত সরকার। অর্থাৎ বাংলাদেশের উপর দিয়ে, বাংলাদেশের রাস্তা দিয়ে, ভারতীয় পণ্য যাবে থাইল্যান্ডে। এই চুক্তির অধীনে যেন ভারতের কানাকড়িও খরচ না হয়, এবং ভবিষ্যতে এই চুক্তি যেন কোনমতেই বাতিল না হতে পারে, সেগুলি নিশ্চিত করতে রাজধানী ঢাকায় এসেছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

যদিও বলা হয়েছিল যে, নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে এসেছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনা নিজেই এক সময় বলেছিলেন “ভারতকে যা দিয়েছি, আজীবন মনে রাখবে।” তার করা প্রতিটি চুক্তি ছিলো ভারতের ইন্টারেস্টে। ভারতের নাগরিকেরা এই দেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করে গেছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, শেখ হাসিনা ভারতের কাছে তাবত দেশবিরোধী দাসখত চুক্তির বিনিময়ে সবসময়ই খালি হাতে ফিরতো। কখনো এয়ারপোর্টে নেচে আসতো, কখনও নরেন্দ্র মোদির সাথে হিন্দি ভাষায় খুনসুটি করতো। বাংলাদেশ কিচ্ছু পেতো না। পেতো কেবল সীমান্তে অন্যায় হত্যাকাণ্ড।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে চীন থেকে সরাসরি পণ্য আনা হতো না। ভারত ঘুরে আনতে হতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর সরাসরি চীন থেকে পণ্য আনে বাংলাদেশ।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমাদের সমুদ্র পর্যন্ত স্বাধীন রাখেননি। তার পলায়নের সাথে সাথে স্থলের সাথে সাথে আমাদের সমুদ্র জলরাশিও স্বাধীন হলো। এখন এই জলপথে দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের জাহাজ, ছুটবে দেশ থেকে দেশান্তরে।

কোন দেশ কী বললো, আমাদের আর সেইটা গুনতে হবে না। আমাদের পণ্য আমরা বিক্রি করবো। আমাদের যেখান থেকে দরকার সেখান থেকে কিনবো। আমাদের ব্যবসা এখন আসমানে পাখা মেলবে। আর যেই জাতির সমুদ্র যত বেশি স্বাধীন, সেই জাতির উন্নতি যে তত দ্রুত হয়, এইটা কি আর নতুন করে বলে দিতে হবে?

তাই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর আস্থা রাখতে ইচ্ছা পোষণ করি। পরবর্তী সিদ্ধান্তের ভার সময়ের ওপর ছেড়ে দেয়াই সমীচিন।