০৯:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
(দিনাজপুর) পার্বতীপুর প্রতিনিধি :

কয়লার মূল্য কমিয়ে খনিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন

  • প্রকাশিত ০৩:২০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • ৮৪ বার দেখা হয়েছে

২৪ জুলাই ২০২৫ ইং দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অযৌক্তিকভাবে কয়লার মূল্য কমিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের খনি শ্রমিক ঐক্য।
বক্তারা বলেন- আমরা সবাই জানি যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দেশের একমাত্র খনি যা আমাদের এলাকাবাসীর জন্য গর্বের। কয়লা খনির জন্য আশেপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ জমি, বাড়ী-ঘর, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির, কবরস্থান হারিয়েছে। আমাদের পৈত্রিক কৃষি-জমি, বাড়ী-ভিটা, কবরস্থান ইত্যাদি ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই প্রতিষ্ঠান। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত অত্র অঞ্চলের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান যখন লসের মধ্যে পড়ে রয়েছে তখন আমাদের গর্বের প্রতীক বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শুরু হতে লাভজনক প্রতিষ্ঠান মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অতীতে কয়লা খনির কয়লা, বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ স্থানীয় ইট ভাটার জন্য সরবরাহ করা হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনেই ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা জায়গা-জমি, হারিয়ে আমাদের লোকজন কয়লা খনির জন্য লেবার-শ্রমিক, পিয়ন, মালী, কাজের বুয়া, দুধ-বিক্রেতা, মুদি-দোকান, ডাস্ট-কয়লা সংগ্রহ ও বিক্রয় ইত্যাদি পেশার নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছি। অর্থাৎ বর্তমানে আমরা জায়গা-জমি হারিয়ে কৃষি ভিত্তিক জীবিকা পরিহার করে খনি নির্ভর জীবিকার মাধ্যমে দিনানিপাত করছি। আমাদের পূর্ব পুরুষের জমি-ভিটা-বাড়ীর উপর প্রতিষ্ঠিত বিধায় এই খনি আমাদের জীবিকার উৎস, এই খনি আমাদের ভালোবাসা, এই খনি আমাদের আবেগ ও অহংকার।
সেই আবেগ থেকেই উল্লেখ করতে চাই, ইতিপূর্বে তেল গ্যাস রক্ষাকমিটির আন্দোলনের কারনে ফুলবাড়ী কয়লা খনি বন্ধ করা হয়। তারপর তেল গ্যাস রক্ষা কমিটির আন্দোলনের ফলে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ভুমিকা রাখতে না পারলেও এলাকাবাসী ও খনি শ্রমিক ভাইদের বলিস্ট প্রতিবাদের কারনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ধ্বাংশের হাত হতে রক্ষা পেয়েছিল।
সম্প্রতি উদ্বেগের সাথে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিচালনা পর্ষদ কয়লার একমাত্র ক্রেতা পিডিবির কর্মকর্তাগণের নিয়ন্ত্রনে পরিচালিত হচ্ছে। আবার পিডিবি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির একমাত্র কয়লার গ্রাহক। ফলে পিডিবির স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে অযৌক্তিক ভাবে প্রতি টন কয়লার মূল্য ১৭৬ ডলার হতে হ্রাস করে করে ১০৪ ডলার নির্ধারন করা হলে কয়লা খনিটি নিশ্চিতভাবেই লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিনত হবে। ফলে খনিটি আর টিকে থাকতে পারবে না বলেই নিম্নোক্ত বিষয়ে প্রতিবাদ-
১। অযৌক্তিক ভাবে কয়লার দাম কমিয়ে খনি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ হোক।
২। পিডিবিতে ১০৪ ডলারের পরিবর্তে লোকাল মার্কেটে দেশীয় কয়লার মূল্য ২০০ ডলার বেশী দামে বিক্রয় সম্ভব। তাই বড়পুকুরিয়ার
কয়লা লোকাল মার্কেটে বিক্রয় করা হোক।
৩। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির বোর্ড বিদ্যুতের লোক দিয়ে চালানো যাবে না।
৪। খনি আমাদের রুটি-রুজি, তাই কয়লার দাম নির্ধারনে আমাদের ও মতামত নিতে হবে।
৫। নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিটি আদমজী পাট কলের মতো পরিনত হবে না।
৬। এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসায় সিএসআর ফান্ড হতে সহযোগীতা বাড়াতে হবে।
৭। খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের রেশন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে হবে।
সর্বপরি উপরোক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনায় নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্বের মতো করে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে ধ্বংসের হাত হতে রক্ষা করা হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের নিহত ও আহতদের স্মরণে প্রার্থনা

(দিনাজপুর) পার্বতীপুর প্রতিনিধি :

কয়লার মূল্য কমিয়ে খনিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন

প্রকাশিত ০৩:২০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

২৪ জুলাই ২০২৫ ইং দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অযৌক্তিকভাবে কয়লার মূল্য কমিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের খনি শ্রমিক ঐক্য।
বক্তারা বলেন- আমরা সবাই জানি যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দেশের একমাত্র খনি যা আমাদের এলাকাবাসীর জন্য গর্বের। কয়লা খনির জন্য আশেপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ জমি, বাড়ী-ঘর, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির, কবরস্থান হারিয়েছে। আমাদের পৈত্রিক কৃষি-জমি, বাড়ী-ভিটা, কবরস্থান ইত্যাদি ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই প্রতিষ্ঠান। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত অত্র অঞ্চলের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান যখন লসের মধ্যে পড়ে রয়েছে তখন আমাদের গর্বের প্রতীক বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শুরু হতে লাভজনক প্রতিষ্ঠান মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অতীতে কয়লা খনির কয়লা, বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ স্থানীয় ইট ভাটার জন্য সরবরাহ করা হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনেই ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা জায়গা-জমি, হারিয়ে আমাদের লোকজন কয়লা খনির জন্য লেবার-শ্রমিক, পিয়ন, মালী, কাজের বুয়া, দুধ-বিক্রেতা, মুদি-দোকান, ডাস্ট-কয়লা সংগ্রহ ও বিক্রয় ইত্যাদি পেশার নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছি। অর্থাৎ বর্তমানে আমরা জায়গা-জমি হারিয়ে কৃষি ভিত্তিক জীবিকা পরিহার করে খনি নির্ভর জীবিকার মাধ্যমে দিনানিপাত করছি। আমাদের পূর্ব পুরুষের জমি-ভিটা-বাড়ীর উপর প্রতিষ্ঠিত বিধায় এই খনি আমাদের জীবিকার উৎস, এই খনি আমাদের ভালোবাসা, এই খনি আমাদের আবেগ ও অহংকার।
সেই আবেগ থেকেই উল্লেখ করতে চাই, ইতিপূর্বে তেল গ্যাস রক্ষাকমিটির আন্দোলনের কারনে ফুলবাড়ী কয়লা খনি বন্ধ করা হয়। তারপর তেল গ্যাস রক্ষা কমিটির আন্দোলনের ফলে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ভুমিকা রাখতে না পারলেও এলাকাবাসী ও খনি শ্রমিক ভাইদের বলিস্ট প্রতিবাদের কারনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ধ্বাংশের হাত হতে রক্ষা পেয়েছিল।
সম্প্রতি উদ্বেগের সাথে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিচালনা পর্ষদ কয়লার একমাত্র ক্রেতা পিডিবির কর্মকর্তাগণের নিয়ন্ত্রনে পরিচালিত হচ্ছে। আবার পিডিবি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির একমাত্র কয়লার গ্রাহক। ফলে পিডিবির স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে অযৌক্তিক ভাবে প্রতি টন কয়লার মূল্য ১৭৬ ডলার হতে হ্রাস করে করে ১০৪ ডলার নির্ধারন করা হলে কয়লা খনিটি নিশ্চিতভাবেই লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিনত হবে। ফলে খনিটি আর টিকে থাকতে পারবে না বলেই নিম্নোক্ত বিষয়ে প্রতিবাদ-
১। অযৌক্তিক ভাবে কয়লার দাম কমিয়ে খনি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ হোক।
২। পিডিবিতে ১০৪ ডলারের পরিবর্তে লোকাল মার্কেটে দেশীয় কয়লার মূল্য ২০০ ডলার বেশী দামে বিক্রয় সম্ভব। তাই বড়পুকুরিয়ার
কয়লা লোকাল মার্কেটে বিক্রয় করা হোক।
৩। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির বোর্ড বিদ্যুতের লোক দিয়ে চালানো যাবে না।
৪। খনি আমাদের রুটি-রুজি, তাই কয়লার দাম নির্ধারনে আমাদের ও মতামত নিতে হবে।
৫। নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিটি আদমজী পাট কলের মতো পরিনত হবে না।
৬। এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসায় সিএসআর ফান্ড হতে সহযোগীতা বাড়াতে হবে।
৭। খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের রেশন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে হবে।
সর্বপরি উপরোক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনায় নেওয়া না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্বের মতো করে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে ধ্বংসের হাত হতে রক্ষা করা হবে।