০১:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এল জি ই ডি যেনো ক্যাপ্টেনহারা জাহাজ, পনেরো দিন অফিসে আসে না প্রধান প্রকৌশলী

  • প্রকাশিত ০৪:০৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৮৪ বার দেখা হয়েছে

স্বদেশ বিচিত্রা রিপোর্ট: গত ১৩ আগস্ট থেকে এল জি ই ডি ভবনে আসেন না সংস্থাটির প্রধান মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া। আজ ১৬ দিন অতিবাহিত হল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া অফিস করেননা। তুমুল সমালোচনা চলছে এলজিইডি ভবনে।

এলজিইডি বাংলাদেশর সর্ব বৃহত একটি উন্নয়ন সংস্থা। ওয়ান ম্যান শো এই সংস্থাটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আধুনিক শহর সর্বত্রই রয়েছে এর কার্যক্রম।আরবান,নগর ও পানিসম্পদ এই তিন সেক্টরে উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করে এই সংস্থা। প্রায় দেড়শ প্রকল্পের সম্মিলিত কার্যক্রমের মাধ্যমে চলে এলজিইডি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ আরো কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি।

দেশের ৬৪ জেলা, সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভার এসব উন্নয়ন কাজের টেন্ডার আহ্বান ,কাজ বাস্তবায়ন ঠিকাদার নিয়োগ, উন্নয়ন কাজ দেখভাল এতদসংক্রান্ত সকল ফাইল অনুমোদন দেন প্রধান প্রকৌশলী। প্রতিদিন শত শত টেন্ডার অনুমোদন, কর্মকর্তা কর্মচারীর বদলি, বিভিন্ন মিটিং সিদ্ধান্ত সকল ধরনের ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীর স্বাক্ষর অবধারিত। অথচ তিনি কোন নোটিশ ছাড়াই ১৬ দিন অফিস করছেন না। এই প্রতিবেদক কথা বলেন নূন্যতম বিশজন প্রকল্প পরিচালকের সাথে তারা সকলেই উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর অনুমোদন ছাড়া কোন ফাইল ছাড়া যায় না জেলা থেকে শত শত ফাইল অনুমোদনের জন্য এসেছে কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী অফিস না করায় আমরা ফাইল ছাড়তে পারছিনা। স্থবির হয়ে পড়েছে এলজিইডি। অনেকে বলেন আমরা কখনো দেখিনি বিনা নোটিশে প্রধান প্রকৌশলী ১৬ দিন অনুপস্থিত।

এলজিইডির প্রধান ভবনের পাঁচতলায় প্রধান প্রকৌশলীর অফিস, সহকারী প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার এবং ওই ফ্লোরে রয়েছে প্রশাসনীক শাখা। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন), নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রসাশন), সহকারী প্রকৌশলী (প্রসাশন) ও প্রসাশনিক শাখার সকল উচ্চমান সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর ও অন্যান্য কর্মচারীরা বসেন এই ফ্লোরে। গত দুই দিন ওই ফ্লোরে যেয়ে কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিক উচ্চমান সহকারীকে প্রধান প্রকৌশলী কোথায় জানতে চাইলে তারা বলেন,স্যার মন্ত্রণালয়ে। এই প্রতিবেদক গতকাল ৩১ আগস্ট বিকেলে এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার নিকট এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মন্ত্রণালয়ে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ১০/১২ দিন তিনি এই মন্ত্রনালয়ে আসেন না। উপদেষ্টার পি এস ও বলেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে গত ১০/১২ দিন দেখিনা। তিনি আরও বলেন শুনেছি প্রধান প্রকৌশলী অফিসেও যান না। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায় আব্দুর রশীদ মিয়া সকাল ১০টায় অফিসার্স ক্লাবে যান সেখানেই খাওয়া দাওয়া ও বিশ্রাম নেন সেখানে থাকেন গভীর রাত পর্যন্ত। সেখানেই উপদেষ্টা ও সচিবের সাথে দেখা হয় কথা হয়।

আজ রাত ১২ টায় মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়ার চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ শেষ হচ্ছে।সূত্র আরো জানায় দুই বছর চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের জন্য জোর তদবির করছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব রাজি না হওয়ায় রশীদ মিয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চাকরি দুই বছর এক্সটেনশনের চেষ্টা করছেন। এই খবর প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত রশীদ মিয়ার হাটকোরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কেউ বলছেন ফাইল প্রধান উপদেষ্টার টেবিলে যে কোনো সময় স্বাক্ষর হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন প্রধান উপদেষ্টা এক বছর এক্সটেনশন দিয়ে ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। সবই ধোঁয়াশা।

মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া প্রায় আট মাস প্রধান প্রকৌশলী( চ:দা:) দায়িত্ব পালন করেছেন। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী প্রথম গ্রেডের পদ হলেও তিনি এখনো তৃতীয় গ্রেড ভুক্ত। ইতোমধ্যেই তিনি তিন জনকে টপকিয়ে প্রধান প্রকৌশলী হয়েছেন। আবার এক বছর এক্সটেনশন হলে আরো তিনজন বঞ্চিত হবেন।

Tag :
জনপ্রিয়

“তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবার বিরুদ্ধে মামলা: বাদীর হলফনামা সত্ত্বেও গ্রেফতার ও রিমান্ড নিয়ে ‎আইনি বিতর্ক”

এল জি ই ডি যেনো ক্যাপ্টেনহারা জাহাজ, পনেরো দিন অফিসে আসে না প্রধান প্রকৌশলী

প্রকাশিত ০৪:০৭:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

স্বদেশ বিচিত্রা রিপোর্ট: গত ১৩ আগস্ট থেকে এল জি ই ডি ভবনে আসেন না সংস্থাটির প্রধান মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া। আজ ১৬ দিন অতিবাহিত হল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া অফিস করেননা। তুমুল সমালোচনা চলছে এলজিইডি ভবনে।

এলজিইডি বাংলাদেশর সর্ব বৃহত একটি উন্নয়ন সংস্থা। ওয়ান ম্যান শো এই সংস্থাটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আধুনিক শহর সর্বত্রই রয়েছে এর কার্যক্রম।আরবান,নগর ও পানিসম্পদ এই তিন সেক্টরে উন্নয়ন কাজ পরিচালনা করে এই সংস্থা। প্রায় দেড়শ প্রকল্পের সম্মিলিত কার্যক্রমের মাধ্যমে চলে এলজিইডি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ আরো কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি।

দেশের ৬৪ জেলা, সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভার এসব উন্নয়ন কাজের টেন্ডার আহ্বান ,কাজ বাস্তবায়ন ঠিকাদার নিয়োগ, উন্নয়ন কাজ দেখভাল এতদসংক্রান্ত সকল ফাইল অনুমোদন দেন প্রধান প্রকৌশলী। প্রতিদিন শত শত টেন্ডার অনুমোদন, কর্মকর্তা কর্মচারীর বদলি, বিভিন্ন মিটিং সিদ্ধান্ত সকল ধরনের ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীর স্বাক্ষর অবধারিত। অথচ তিনি কোন নোটিশ ছাড়াই ১৬ দিন অফিস করছেন না। এই প্রতিবেদক কথা বলেন নূন্যতম বিশজন প্রকল্প পরিচালকের সাথে তারা সকলেই উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর অনুমোদন ছাড়া কোন ফাইল ছাড়া যায় না জেলা থেকে শত শত ফাইল অনুমোদনের জন্য এসেছে কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী অফিস না করায় আমরা ফাইল ছাড়তে পারছিনা। স্থবির হয়ে পড়েছে এলজিইডি। অনেকে বলেন আমরা কখনো দেখিনি বিনা নোটিশে প্রধান প্রকৌশলী ১৬ দিন অনুপস্থিত।

এলজিইডির প্রধান ভবনের পাঁচতলায় প্রধান প্রকৌশলীর অফিস, সহকারী প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার এবং ওই ফ্লোরে রয়েছে প্রশাসনীক শাখা। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন), নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রসাশন), সহকারী প্রকৌশলী (প্রসাশন) ও প্রসাশনিক শাখার সকল উচ্চমান সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর ও অন্যান্য কর্মচারীরা বসেন এই ফ্লোরে। গত দুই দিন ওই ফ্লোরে যেয়ে কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। একাধিক উচ্চমান সহকারীকে প্রধান প্রকৌশলী কোথায় জানতে চাইলে তারা বলেন,স্যার মন্ত্রণালয়ে। এই প্রতিবেদক গতকাল ৩১ আগস্ট বিকেলে এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার নিকট এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মন্ত্রণালয়ে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ১০/১২ দিন তিনি এই মন্ত্রনালয়ে আসেন না। উপদেষ্টার পি এস ও বলেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে গত ১০/১২ দিন দেখিনা। তিনি আরও বলেন শুনেছি প্রধান প্রকৌশলী অফিসেও যান না। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায় আব্দুর রশীদ মিয়া সকাল ১০টায় অফিসার্স ক্লাবে যান সেখানেই খাওয়া দাওয়া ও বিশ্রাম নেন সেখানে থাকেন গভীর রাত পর্যন্ত। সেখানেই উপদেষ্টা ও সচিবের সাথে দেখা হয় কথা হয়।

আজ রাত ১২ টায় মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়ার চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ শেষ হচ্ছে।সূত্র আরো জানায় দুই বছর চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের জন্য জোর তদবির করছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব রাজি না হওয়ায় রশীদ মিয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চাকরি দুই বছর এক্সটেনশনের চেষ্টা করছেন। এই খবর প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত রশীদ মিয়ার হাটকোরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কেউ বলছেন ফাইল প্রধান উপদেষ্টার টেবিলে যে কোনো সময় স্বাক্ষর হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন প্রধান উপদেষ্টা এক বছর এক্সটেনশন দিয়ে ফাইল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। সবই ধোঁয়াশা।

মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া প্রায় আট মাস প্রধান প্রকৌশলী( চ:দা:) দায়িত্ব পালন করেছেন। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী প্রথম গ্রেডের পদ হলেও তিনি এখনো তৃতীয় গ্রেড ভুক্ত। ইতোমধ্যেই তিনি তিন জনকে টপকিয়ে প্রধান প্রকৌশলী হয়েছেন। আবার এক বছর এক্সটেনশন হলে আরো তিনজন বঞ্চিত হবেন।