০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, মরদেহ মর্গে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে মেয়ে

  • প্রকাশিত ০৬:২৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ৮ বার দেখা হয়েছে

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থী মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে এবং মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম হোসেন (৪৫)। তিনি তালাইমারী এলাকার আজাদ হোসেনের ছেলে। আকরাম হোসেন পেশায় বাসচালক এবং জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, আকরাম হোসেনের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে কয়েক যুবক উত্ত্যক্ত করছিলেন। এ নিয়ে তিনি প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে পেয়ে ইট দিয়ে আঘাত করে বখাটেরা। এতে আকরাম গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হাসান ইমাম অন্তর বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে মো. নান্টু (২৮), মৃত রতন মিয়ার ছেলে মো. বিশাল (২৮), মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে খোকন মিয়া (২৮), মো. শাহীনের ছেলে তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০)।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বাবার মরদেহ মর্গে রেখে নগরীর নগরীর শিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী। তিনি নগরীর অগ্রণী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী।

অগ্রণী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী রোকেয়ায় (ছদ্মনাম) উত্যক্ত করছিল কিছু বখাটে। এর প্রতিবাদ করায় তার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কঠোর বিচার চাই।’

নিহতের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী শুধু মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়েই খুন হলেন। ওই বখাটেরা আমার মেয়েকেও শান্তিতে থাকতে দেয়নি। মেয়েটা বাবার মরদেহ রেখে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে গেল। এর বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি চাই।

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, তালাইমারি শহিদ মিনারের পাশে বখাটেদের হামলায় গুরুতর আহত হন আকরাম হোসেন। পরে তিনি রামেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। হামলা ও হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর

Tag :
জনপ্রিয়

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা, মরদেহ মর্গে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে মেয়ে

প্রকাশিত ০৬:২৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থী মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে এবং মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম হোসেন (৪৫)। তিনি তালাইমারী এলাকার আজাদ হোসেনের ছেলে। আকরাম হোসেন পেশায় বাসচালক এবং জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, আকরাম হোসেনের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে কয়েক যুবক উত্ত্যক্ত করছিলেন। এ নিয়ে তিনি প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তার বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে পেয়ে ইট দিয়ে আঘাত করে বখাটেরা। এতে আকরাম গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হাসান ইমাম অন্তর বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে মো. নান্টু (২৮), মৃত রতন মিয়ার ছেলে মো. বিশাল (২৮), মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে খোকন মিয়া (২৮), মো. শাহীনের ছেলে তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০)।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বাবার মরদেহ মর্গে রেখে নগরীর নগরীর শিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী। তিনি নগরীর অগ্রণী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী।

অগ্রণী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী রোকেয়ায় (ছদ্মনাম) উত্যক্ত করছিল কিছু বখাটে। এর প্রতিবাদ করায় তার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কঠোর বিচার চাই।’

নিহতের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী শুধু মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়েই খুন হলেন। ওই বখাটেরা আমার মেয়েকেও শান্তিতে থাকতে দেয়নি। মেয়েটা বাবার মরদেহ রেখে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে গেল। এর বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি চাই।

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, তালাইমারি শহিদ মিনারের পাশে বখাটেদের হামলায় গুরুতর আহত হন আকরাম হোসেন। পরে তিনি রামেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। হামলা ও হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর