ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস সরকার পরিচালিত আগামী নির্বাচন নিয়ে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে নানা সমীকরন চলছে।দলগুলোর বেশির ভাগই জোট চায় না।তারা একক ভাবে নির্বাচন করতে চায়।তাদের মাঝে তেমন প্রস্তুতিও চলছে।বাংলাদেশে তিন ধারার রাজনীতি চলমান।বিএনপি,আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির মতো আরো কিছু দল মধ্যম পন্হা অবলম্বন করে।তারা ইসলামী প্রদ্ধতির বিরোধীতা করে না-আবার ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদকেও সমর্থন করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। কমিউনিস্ট পার্টি,ওয়ার্কার্স পার্টি,জাসদ, বাসদ,গনসংহতি আন্দোলন ও আরো কিছু দল সরাসরি ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে সমাজ গড়ার রাজনীতি করে। আর জামায়াতে ইসলামী,ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ফ্রন্ট,খেলাফত মজলিস,জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও আরো কিছু দল সরাসরি কুরআন-সূন্নাহ মোতাবেক রাষ্ট্র পরিচালনার অঙ্গীকার নিয়ে রাজনীতি করছে।একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি।ওই নির্বাচনে ৩৯ টি রাজনেতিক দল অংশ নেয়।তন্মধ্যে ১৩ টি ইসলামী দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২১৮ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।জাকের পার্টি ৮১ টি এবং মুসলিম লীগ ৪৭ টি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ২৫ টি, ইসলামী ঐক্যজোট ২৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। খেলাফত আন্দোলন ২৩ টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ১৮ টি, খেলাফত মজলিস ( একাংশ) ১২ টি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ( অপরাংশ) ৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। বাংলাদেশ মুসলিমলীগ ৪৭ টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ৮ টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ( বিএমএল) ১ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এছাড়া সরাসরি না হলেও ইসলামী দল ভুক্ত বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ১৭ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও জামায়াতে ইসলামীসহ ওই ইসলামী দলগুলো প্রার্থীতা দিবে,প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।সে লক্ষে সব দলই সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।দলগুলোর জেলা,উপজেলা ও সংসদীয় আসন এলাকায় ঘরোয়া সভা করা হচ্ছে।কোন কোন দল আগামী নির্বাচনে গতবারের চেয়ে আরো বেশি প্রার্থী করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ৫ অগাস্ট আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগ করেন।দেশ এরপর সেনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে ফিরে। দেশে এরপর নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে অন্তর্বতিকালীন সরকার গঠন হয়।সরকার প্রধান ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস গত দেড় মাসেও আগামী নির্বাচন নিয়ে সরাসরি কোন দিন,মাস উল্লেখ করে বক্তব্য দেন নি।সরকারের সহায়ক সংস্হা সেনা বহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান ২৪ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্হা রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন।জেনারেল ওয়াকার উজ জামান বলেন,যে কোন পরিস্হিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করা হবে।নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ন সমর্থন আছে।যাই হোক না কেন,তিনি যাতে তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন–আমি তার পাশে থাকবো।
আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে-সে জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে সরকারকে সমর্থন করা হবে।এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটানো উচিৎ। সেনা প্রধানের বক্তব্যের পর আওয়ামীলীগ সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছে।তারা নির্বাচনে অংশ নিবে না বয়কট করবে-তা নিয়েও কোন সিদ্ধান্ত দেবার আপাতত কেউ নেই।আবার নির্বাচনে অংশ নিলে তিনশ’ র মধ্যে একশ প্রার্থী দেয়া সম্ভব কি’ না সে বিষয়ে অনেক নেতার হতাশা প্রকাশ পাচ্ছে।অন্য দিকে বিএনপি একক এবং জোটগত ভাবে নির্বাচন করার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে।জাতীয় পার্টিও নিবাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে রয়েছে।বাম ঘরনার দলগুলোর মধ্যে জাসদ,ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি কিছুটা অনিশ্চিত দেখা যাচ্ছে।বাম ঘরনার পুরাতন ও নতুন নিবন্ধিত দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য মানষিক প্রস্তুতি নিয়েছে।আর ইসলামী দলগুলো আগের নির্বাচনের চেয়ে আগামী নির্বাচনে আরো বেশি প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করছে।জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা বলেছেন,ইসলামী দলগুলো জোট করার পক্ষে জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।নির্বাচন কবে হবে তা এখনো সরকারী পরিস্কার ধারনা পাওয়া যায়নি।ফলে জোটের জন্য এখনি তেমন সায় পাচ্ছে না।ইসলামী ফ্রন্টের এক নেতা বলেন,একটি নিবাচনে জাতীয় পার্টির সাথে জোট করেছিলাম।পরবর্তীতে সেই জোট টেকেনি।একক ভাবে নিবাচন করেছি এবং আগামীতেও একক ভাবে নিবাচন করবো।খেলাফত মজলিসের এক নেতা বলেন, মতবাদে মিল আছে এমন দল থাকলেও জোট করবো না।একক ভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো।