জনতার অধিকার পার্টির জরুরি সংবাদ সম্মেলন পার্টির চেয়ারম্যানের অভিযোগ তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
রাষ্ট্রীয় একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানির লিমিটেডে (ইডিসিএল) ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের আছড় কাটেনি। খোদ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ভাগ্নে-ভাতিজার দাপটে তাদের অবস্থান আরো সংহত হয়েছে। চলছে সমানতালে লুটপাট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র এ অভিযোগ করে জানায়, জুলাই বিপ্লবের পর রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ইডিসিএল-এ শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনা হয়। গত বছরের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় মো. সামাদ মৃধাকে। ইডিসিএল-এর ১৫৮ তম বোর্ড সভায় এ নিয়োগ অনুমোদন দেয়া হয়। সামাদ মৃধার আদি নিবাস ফরিদপুরের সদরপুর আটরশি এলাকায়। তবে নতুন এমডি যোগ দেয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিতে লুটপাট বন্ধের পরিবর্তে সেটিকে আরো জমজমাট করে তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট চাঙ্গা হয়ে পুরনো অপকর্ম জমিয়ে তুলেছেন।
অভিযোগ মতে, নতুন এমডি শুরুতেই প্রতিষ্ঠানটিতে আত্মীয়করণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস) হিসেবে নিয়োগ দেন ভাতিজা নাজমুল হুদাকে। যিনি আওয়ামী লীগ নেতা নিক্সন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী এবং ব্যবসায়ী অংশীদার হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি মেশিন অপারেটর হিসেবে কর্মরত ভাগ্নে শওকত মামার দাপটে বলীয়ান হয়ে ওঠেন। জানা গেছে, এমডির ভাতিজা-ভাগ্নে এখন প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেছেন। বদলি-পদোন্নতি, টেন্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্যসহ সব কাজই তাদের ইশারায় পরিচালিত হচ্ছে। তাদের খুশী করেই ফ্যাসিস্ট আমলের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা শুদু বহাল তবিয়তে নয়, আরো প্রভাবশালী হয়ে ওঠেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন, জিএম এডমিন (এইচআরএম) মনিরুল ইসলাম, জিএম ফাইনান্স আনসার উল্লাহ, গোপালগঞ্জের প্রকল্প পরিচালক হাসান ইমাম, বগুড়া প্লান্টের জিএম (চলতি দায়িত্ব) মো. হেলাল উদ্দিন ইডিসিএল প্রমুখ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্নীতিবাজ এবং ফ্যাসিস্ট আমলের সুবিধাভোগীদের বহাল রেখে এমডি প্রতিষ্ঠানটিতে ছাটাই প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এতে অনেক নিরীহ ও সৎ কর্মচারী বিপাকে পড়েছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতির ফিরিস্তি দিয়ে তারা আরো বলেন, বিগত আওয়ামী শাসনামলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাহাদুর ব্যাপারী ‘আর কে ট্রেডার্স’ ও ‘মার্কস কর্পোরেশন’-এর মাধ্যমে হরিলুট চালিয়েছিলেন। ওই সময়ে ‘মার্কস কর্পোরেশন’ উচ্চমূল্যে অর্থাৎ ১২ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার কেজি দরে প্যারাসিটামল বিপি সরবরাহ করেছিল। সিন্ডিকেট ভাঙ্গার পর সেই প্যারাসিটামল বিপি সরবরাহ মিলেছে ২ দশমিক ৮০ থেকে ৩ দশমিক ১০ মার্কিন ডলারে। বিষয়টি জানাজানি হবার পরও ‘মার্কস কর্পোরেশন’-এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং নতুন করে দু’নম্বরী করে একই প্রতিষ্ঠানকে আরেকটি বড় ধরনের সরবরাহ কাজ দেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ওষুধ তৈরির উপাদান নিকোটিনামাইড বিপি ছয় মেট্রিক টন আমদানির জন্য নতুন একটি দরপত্র আহবান করা হয়েছিল পূর্বে এ আইটেমটি ছাত্রলীগ নেতা বাহাদুর ব্যাপারীর ‘আর কে ট্রেডার্স’ উচ্চমূল্যে একচেটিয়া সরবরাহ করেছে। নতুন দরপত্র প্রক্রিয়ায় সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে ‘বেষ্ট ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান বিবেচিত হয়। কিন্তু নানা কূটকৌশলে সর্বনি¤œ দরদাতাকে না দিয়ে কাজটি দেয়া হয়েছে বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতার ‘আর কে ট্রেডার্স’ কে। একইভাবে ২৫ মেট্রিক টন বেনজায়েল বেনজেট সরবরাহের জন্য ‘বেষ্ট ইন্টারন্যাশনাল’ কে অর্ডার দেয়ার পরও সেটি বাতিল করা হয়। এ কার্যাদেশও পেয়েছে সেই ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠান চতুর্থ দরদাতা ‘মার্কস কর্পোরেশন’। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এসব অপকর্ম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। এর সঙ্গে ডাইরেক্টর ইনচার্জ আবদুল হালিম, জিএম (উৎপাদন) নজরুল ইসলাম ও জিএম (হিসাব বিভাগ) আনছার আহম্মেদ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এ পর্যন্ত ৫৬০ জনের চাকরি যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৫০ জন নোয়াখালী এবং বগুড়ার কর্মজীবী মানুষ। জিএম মনি ও বর্তমান এমডির সামাদ মিডার ভাতিজা নাজমুল হুদা তিনি অভিযোগ করেছেন। নোয়াখালী এবং বগুড়ার লোকেরা যদি এখানে কাজ করে সুযোগ পায়। তাহলে একসময় উত্তরবঙ্গের গোপালগঞ্জের লোক গুলো গণহারে ছাটাই করা হবে। তাই আমরা যতদিন আছি মনির ভাই দ্রুততার সহিত বিভিন্ন কৌশলে। বগুড়া এবং নোয়াখালী লোকদের ছাটাই করতে হবে। এবং গোপনে আট দশ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগ প্রদান করেছেন। প্রতিষ্ঠানদের সাথে বিভিন্ন নারী কর্মীরা জিএম এবং এমডি। রোশনালে পড়ে বিভিন্ন ধরনের তদবির বাণিজ্য। প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন এবং তারা ওই নৈতিক কাজের সাথে তাদের কিছুটা সম্পর্ক আছে যার প্রমাণ অনেক শ্রমিকের কাছে রয়েছে। বিষয়গুলো তারা জানতে পেরে। বর্তমান এমডি সামাদ মিদার। বিষয়টি অবগত করে তাদেরকে গণহারে ছাটাই করা হয়েছে। বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য সচিব জনাব সাইদুর রহমানকে। লিখিত আকারে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার কাটিং সহ দেওয়া হয়েছে । বর্তমান স্বাস্থ্য সচিব সাইদুর রহমান। ইডিসিএল এ বিষয়ে খুবই সতর্ক রয়েছেন এবং তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর। খুবই গুরুত্ব সহকারে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। শ্রমিকেরা অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য সচিব মহোদয় বিষয়টি পরিপূর্ণ অবগত নয়। উনি অত্যন্ত আন্তরিক এবং ভালো মনের মানুষ প্রয়োজনে উনাকে আরো দুই বছরের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হোক। উনি সৎ মানুষ গরিব মানুষের কথা শুনেন। আশা করি উনি আমাদের চাকরির ক্ষেত্রে খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধান করবেন অত্যন্ত আন্তরিকভাবে। জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন স্বাস্থ্য সচিব কে বিষয়টি অবগত করেছি। এবং তিনি গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দায়িত্ব নিয়েছেন। উনি অত্যন্ত ভালো মনের একজন উদীয়মান মানুষ। আমি বিশ্বাস করি তিনি খুব দ্রুত সময়ে বিষয়টি সমাধান করে নিরীহ সাধারণ মানুষের কর্মস্থল ফিরিয়ে দিবেন। যে সকল লোকের চাকরি তুচ্ছ হয়েছেন। তাদেরকে কোন ধরনের অগ্রিম নোটিশ ছাড়া গণহারে ছাটাই করা। এটি আইন পরিপন্থী। এবং তারা বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা থেকে এসেছেন।। এরা ঢাকা শহরে বাসা বাড়ি নিয়ে বিভিন্ন কলোনি এবং বস্তিতে বসবাস করেন পরিবার-পরিজন ছেলেমেয়ে নিয়ে। হঠাৎ করে তাদের চাকরি যাওয়াতে বিভিন্ন ধরনের লেনদেন থেকে শুরু করে তারা আত্মিক সঙ্কটে।দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। এমনিতেই বর্তমানে কর্মসংস্থানের খুবই সংকট তার মধ্যে তারা চাকরি হারা। বিষয়টি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং সচিব মহোদয় প্রতিষ্ঠানের এমডি দায়িত্ব সহকারে তাদের কর্ম ফিরিয়ে দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া অভিযোগ করেন। যতদিন পর্যন্ত সঠিক এবং নেয় নীতি এসেন্সিয়াল ড্রাগসের প্রতিষ্ঠিত হবে না আমি আমার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। আমি রাজনীতি করি নিরীহ সাধারণ মানুষের জন্য তাদের পাশে আছি এবং কথা দিলাম থাকব আমরা সবাই সাক্ষাৎ করব।।।।
নিরপেক্ষ তদন্ত চালালে দুর্নীতির আরো ভয়াবহ ও চমকপ্রদ তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।
০১:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইডিসিএল-এ এমডির ভাগ্নে-ভাতিজার মদদে আওয়ামী সুবিধাভোগীরা তুঙ্গে
Tag :
জনপ্রিয়