১০:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আড়তজুড়ে আম-লিচুর ঘ্রাণ, সরগরম বাদামতলি বাজার

  • প্রকাশিত ০৫:৪২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • ৯ বার দেখা হয়েছে

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : রাজধানীর পুরান ঢাকার বাদামতলি ফলের আড়তজুড়ে শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ফল আম ও লিচু। আসতে শুরু করেছে হিমসাগর, গোপালভোগ ও গোবিন্দ আমের সঙ্গে যশোর ও মাগুরার লিচু। এতে সরগরম হয়ে উঠছে দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বড় এই ফলের পাইকারি বাজারটি। প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি ফল এসে জমা হচ্ছে আড়তের নানা গুদামে। মৌসুমের শুরু হলেও ইতোমধ্যে জমে উঠেছে বেচাবিক্রি। দরদাম চলছে জোরেশোরে। ক্রেতার আনাগোনাও চোখে পড়ার মত।

মধুমাস বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠকে ঘিরেই মূলত ফলের রাজত্ব শুরু হয় বাদামতলিতে। তবে এখন শুধু আম-লিচু নয়, বাজারে দেখা মিলছে গ্রীষ্মের আরও অনেক ফলের। সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের আনারস, রাজশাহীর বাঙ্গি এবং চুয়াডাঙ্গার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে আড়তগুলোতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে সরবরাহ আরও বাড়বে, তখন ক্রেতার চাহিদাও থাকবে তুঙ্গে। তবে, মৌসুমি আমের সরবরাহ বাড়তে থাকায় বাজারে আগের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে হিমসাগর ও গোপালভোগ জাতের আম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা কম। অন্যদিকে, খুচরা বাজারে লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় একশ’ হিসেবে। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দামও সাধারণ ক্রেতার নাগালে চলে আসবে।

আম বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজের জিয়াউর হাসান বলেন, ‘এখনো আমাদের বাজার পুরোপুরি জমে উঠেনি। দুই সপ্তাহ পর ফলের সরবরাহ আরও বাড়বে। আমরা সাধারণত পাইকারি বিক্রি করি। এখান থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় ফল সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে আমাদের আমগুলো সাতক্ষীরা থেকে আসছে।

মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজের খুচরা বিক্রেতা রফিক মিয়া জানান, ‘আমাদের লিচুগুলো যশোর ও মাগুরা থেকে আসছে। সরবরাহ বাড়লে দামও সহনীয় হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি পুরো মৌসুম শুরুর।’

আরেক পাইকার তুহিন ব্রাদার্স এর জসিম হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘আমরা আম নিয়ে আসি যশোর থেকে। বর্তমানে তিন জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আগে পাইকারি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন কিছুটা কমেছে। আশা করছি সামনে সরবরাহ বাড়লে বিক্রিও বাড়বে।’

পুরান ঢাকার বাসিন্দা ক্রেতা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাদামতলি থেকে আম-লিচু কিনতে এসেছি। দাম একটু বেশি হলেও আশা করি কিছুদিনের মধ্যে কমবে। বাজারে এখনো ফলের সরবরাহ কম।’

আরেক ক্রেতা রুকুনুজ্জামান জানান, প্রতিবছর এ সময়টায় বাদামতলি আসি। এবার দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি। আশা করছি সামনে কম দামে ভালো ফল পাবো।’

যত দিন যাচ্ছে, বাদামতলিতে মৌসুমী ফলের সরবরাহ বাড়ছে। আড়তে আড়তে নানা জাতের আম-লিচুর পসরা। প্রতিনিয়তই ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে। দীর্ঘ হচ্ছে বাজারের বাইরে অপেক্ষমান ফল ভর্তি পরিবহনের সারিও। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই আশা করছেন, শিগগিরই ফল মিলবে আরও কম দামে।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর

Tag :
জনপ্রিয়

চরফ্যাশনের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হুমায়ুন কবির রাজন-আমানসহ শত শত পরিবারকে পথে বসিয়েছে

আড়তজুড়ে আম-লিচুর ঘ্রাণ, সরগরম বাদামতলি বাজার

প্রকাশিত ০৫:৪২:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

স্বদেশ বিচিত্রা প্রতিবেদক : রাজধানীর পুরান ঢাকার বাদামতলি ফলের আড়তজুড়ে শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ফল আম ও লিচু। আসতে শুরু করেছে হিমসাগর, গোপালভোগ ও গোবিন্দ আমের সঙ্গে যশোর ও মাগুরার লিচু। এতে সরগরম হয়ে উঠছে দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বড় এই ফলের পাইকারি বাজারটি। প্রতিদিন ট্রাক ও পিকআপ ভর্তি ফল এসে জমা হচ্ছে আড়তের নানা গুদামে। মৌসুমের শুরু হলেও ইতোমধ্যে জমে উঠেছে বেচাবিক্রি। দরদাম চলছে জোরেশোরে। ক্রেতার আনাগোনাও চোখে পড়ার মত।

মধুমাস বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠকে ঘিরেই মূলত ফলের রাজত্ব শুরু হয় বাদামতলিতে। তবে এখন শুধু আম-লিচু নয়, বাজারে দেখা মিলছে গ্রীষ্মের আরও অনেক ফলের। সরেজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের আনারস, রাজশাহীর বাঙ্গি এবং চুয়াডাঙ্গার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে আড়তগুলোতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে সরবরাহ আরও বাড়বে, তখন ক্রেতার চাহিদাও থাকবে তুঙ্গে। তবে, মৌসুমি আমের সরবরাহ বাড়তে থাকায় বাজারে আগের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে হিমসাগর ও গোপালভোগ জাতের আম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ টাকা কম। অন্যদিকে, খুচরা বাজারে লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় একশ’ হিসেবে। ব্যবসায়ীরা আরও জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দামও সাধারণ ক্রেতার নাগালে চলে আসবে।

আম বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজের জিয়াউর হাসান বলেন, ‘এখনো আমাদের বাজার পুরোপুরি জমে উঠেনি। দুই সপ্তাহ পর ফলের সরবরাহ আরও বাড়বে। আমরা সাধারণত পাইকারি বিক্রি করি। এখান থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় ফল সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে আমাদের আমগুলো সাতক্ষীরা থেকে আসছে।

মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজের খুচরা বিক্রেতা রফিক মিয়া জানান, ‘আমাদের লিচুগুলো যশোর ও মাগুরা থেকে আসছে। সরবরাহ বাড়লে দামও সহনীয় হবে। আমরা অপেক্ষায় আছি পুরো মৌসুম শুরুর।’

আরেক পাইকার তুহিন ব্রাদার্স এর জসিম হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘আমরা আম নিয়ে আসি যশোর থেকে। বর্তমানে তিন জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আগে পাইকারি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করলেও এখন কিছুটা কমেছে। আশা করছি সামনে সরবরাহ বাড়লে বিক্রিও বাড়বে।’

পুরান ঢাকার বাসিন্দা ক্রেতা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাদামতলি থেকে আম-লিচু কিনতে এসেছি। দাম একটু বেশি হলেও আশা করি কিছুদিনের মধ্যে কমবে। বাজারে এখনো ফলের সরবরাহ কম।’

আরেক ক্রেতা রুকুনুজ্জামান জানান, প্রতিবছর এ সময়টায় বাদামতলি আসি। এবার দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি। আশা করছি সামনে কম দামে ভালো ফল পাবো।’

যত দিন যাচ্ছে, বাদামতলিতে মৌসুমী ফলের সরবরাহ বাড়ছে। আড়তে আড়তে নানা জাতের আম-লিচুর পসরা। প্রতিনিয়তই ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে। দীর্ঘ হচ্ছে বাজারের বাইরে অপেক্ষমান ফল ভর্তি পরিবহনের সারিও। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই আশা করছেন, শিগগিরই ফল মিলবে আরও কম দামে।
স্বদেশ বিচিত্রা/এআর