১০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মোহাম্মদ আকবর হোসেন ভূঁইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

আলোর যুগে অন্ধকারে আছে রাঙ্গামাটির ৪০ হাজার মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০ টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার

  • প্রকাশিত ১২:২৫:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৪ বার দেখা হয়েছে

ডিজিটাল যুগেও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুতের আওতায় আসেনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম এই ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করছে। নেই কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

এই ইউনিয়নে প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২১টি। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যুগের সাথে তাল মেলাতে পারছে না এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাইলেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। নাগরিক সেবা অনলাইনের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। যাতে প্রত্যেক নাগরিক খুব সহজেই ঘরে বসে সেবা পায়। কিন্তু এই ইউনিয়নের মানুষ এসব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

জানা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন এই ফারুয়া ইউনিয়ন। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এখাসে বসবাস করছে। এখানে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম কৃষি কাজ। দিনে এনে দিনে খাওয়া এস্ক মানুষকে দেখলে মনে হওয়ার কোন অবকাশ নেই যে এরা বাংলাদেশের মানুষ। একে তো দূর্গম আর পশ্চাৎপদ এলাকা, অন্যদিকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ নেই। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কৃষক তার ফসলি জমির যেকোন সমস্যায় কৃষি বিশেষজ্ঞ কিংবা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা পরামর্শ পান না। সেক্ষেত্রে তাকে বিলাইছড়ি উপজেলা সদরে আসতে হয়।

বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা এখন পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। অথচ কাল্পনিক মনে হলেও বাস্তব যে, এই ইউনিয়নটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ নেই। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সারা দেশে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছে। এখানকার শিশুরা ছিল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত। দূর্গম পাহাড়ী এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইন শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারে না।

চলমান পাতা- ০২

পাতা নং- ০২

স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী, তাদের সন্তান যেন অত্যন্ত জরুরী নেটওয়ার্কের এই সুবিধাটি পায়। এছাড়া কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও নেই মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা। সারা বাংলাদেশের মানুষ যেখানে ঘরে বসে ডিজিটাল সুবিধা পাচ্ছে সেখানে এসব এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণ এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন শতভাগ করার জন্য সরকার থেকে নির্দেশ আসে; কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে আমরা এই জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সঠিকভাবে করতে পারছি না। প্রতিবন্ধী ভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এদের ভাতা ঠিকমতো পায় না। তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নটি অতি দূর্গম হওয়ায় অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে উন্নয়নে পিছিয়ে আছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সহজে যোগাযোগ করা যায় না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে ফারুয়া ইউনিয়নের সেবাদানের লক্ষ্যে সরকার যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন করে দেয় সেজন্য ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে জোড় দাবী জানাচ্ছি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, দূর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌছে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। পাহাড়ী শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০টি স্কুলে স্টার লিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। এ উদ্যোগ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এক বিপ্লব হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

বিএনপি প্রতিষ্ঠা না হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতনা-নকলায় বিএনপি নেতা ইলিয়াস

মোহাম্মদ আকবর হোসেন ভূঁইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

আলোর যুগে অন্ধকারে আছে রাঙ্গামাটির ৪০ হাজার মানুষ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০ টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার

প্রকাশিত ১২:২৫:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডিজিটাল যুগেও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুতের আওতায় আসেনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার দূর্গম ফারুয়া ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম এই ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করছে। নেই কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

এই ইউনিয়নে প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২১টি। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যুগের সাথে তাল মেলাতে পারছে না এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাইলেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। নাগরিক সেবা অনলাইনের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। যাতে প্রত্যেক নাগরিক খুব সহজেই ঘরে বসে সেবা পায়। কিন্তু এই ইউনিয়নের মানুষ এসব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

জানা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন এই ফারুয়া ইউনিয়ন। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এখাসে বসবাস করছে। এখানে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম কৃষি কাজ। দিনে এনে দিনে খাওয়া এস্ক মানুষকে দেখলে মনে হওয়ার কোন অবকাশ নেই যে এরা বাংলাদেশের মানুষ। একে তো দূর্গম আর পশ্চাৎপদ এলাকা, অন্যদিকে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ নেই। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কৃষক তার ফসলি জমির যেকোন সমস্যায় কৃষি বিশেষজ্ঞ কিংবা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা পরামর্শ পান না। সেক্ষেত্রে তাকে বিলাইছড়ি উপজেলা সদরে আসতে হয়।

বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা এখন পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। অথচ কাল্পনিক মনে হলেও বাস্তব যে, এই ইউনিয়নটিতে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ নেই। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সারা দেশে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করছে। এখানকার শিশুরা ছিল নেটওয়ার্ক থেকে বঞ্চিত। দূর্গম পাহাড়ী এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইন শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাসে অংশ নিতে পারে না।

চলমান পাতা- ০২

পাতা নং- ০২

স্থানীয় অভিভাবকদের দাবী, তাদের সন্তান যেন অত্যন্ত জরুরী নেটওয়ার্কের এই সুবিধাটি পায়। এছাড়া কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও নেই মোবাইল নেটওয়ার্কের সুবিধা। সারা বাংলাদেশের মানুষ যেখানে ঘরে বসে ডিজিটাল সুবিধা পাচ্ছে সেখানে এসব এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণ এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন শতভাগ করার জন্য সরকার থেকে নির্দেশ আসে; কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ না থাকার কারণে আমরা এই জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সঠিকভাবে করতে পারছি না। প্রতিবন্ধী ভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এদের ভাতা ঠিকমতো পায় না। তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নটি অতি দূর্গম হওয়ায় অন্যান্য ইউনিয়ন থেকে উন্নয়নে পিছিয়ে আছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সহজে যোগাযোগ করা যায় না। একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে ফারুয়া ইউনিয়নের সেবাদানের লক্ষ্যে সরকার যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন করে দেয় সেজন্য ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে জোড় দাবী জানাচ্ছি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, দূর্গম এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পৌছে দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। পাহাড়ী শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০০টি স্কুলে স্টার লিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। এ উদ্যোগ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এক বিপ্লব হবে।