০৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সাবিনা সোমা:

আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এর সঙ্গে ফিলিস্তিনের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়

  • প্রকাশিত ০৬:১৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৩ বার দেখা হয়েছে

৭ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকাল ১১:৩০ মিনিটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বসুন্ধরার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের মান্যবর অ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মি. এ্যাম্বাসেডর শুরুতেই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তাঁর পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

মতবিনিময় সভায় আমীরে জামায়াত ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মত ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এ সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে ইনশাআল্লাহ। অতীতে বহু বার ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বোমা বর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গাজার ২ হাজার ৭০০ পরিবারের কেউ বেঁচে নেই; সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইসরাইলি বোমাবর্ষণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার আট শত কোটি ডলারে। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’

তিনি আরও বলেন, মানবতার দুশমন ইসরাইল গাজায় খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ইসরাইল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে গাজা থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছে। গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরাইলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি। গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এ ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি-সহ শান্তিকামী বিশ্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

আমীরে জামায়াত আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দল-মত-নির্বিশেষে সকল মানুষের সমর্থন রয়েছে। ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের দোয়া, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সমর্থন রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই ফিলিস্তিন একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্বের বুকে দাঁড়াক। কারণ এই জায়গাটা হচ্ছে অসংখ্য নবী-পয়গাম্বরদের স্মৃতি-বিজড়িত স্থান। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস এই মাটিতেই রয়েছে। ফিলিস্তিনের বঞ্চিত, ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের প্রতি আন্তরিক ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। ফিলিস্তিনে যারা নিহত হয়েছেন আল্লাহ তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন এবং আহতদের মহান রব সুস্থতার নিয়ামাত দান করুন।”

এসময় ফিলিস্তিনের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা উপত্যকার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অর্থবহ ভালবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমি ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে আমি ফিলিস্তিনের এ্যাম্বাসেডর হিসেবে আশা প্রকাশ করছি যে, ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অর্থবহ সমর্থন, সাহায্য, সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”

আমীরে জামায়াতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের আমীর জনাব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।

Tag :
জনপ্রিয়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অবৈধ জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদকদ্রব্য ব্যবসা বেড়েই চলেছে, প্রশাসন নিরব!

সাবিনা সোমা:

আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এর সঙ্গে ফিলিস্তিনের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়

প্রকাশিত ০৬:১৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৭ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকাল ১১:৩০ মিনিটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে তাঁর বসুন্ধরার কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের মান্যবর অ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান এক সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মি. এ্যাম্বাসেডর শুরুতেই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তাঁর পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।

মতবিনিময় সভায় আমীরে জামায়াত ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মত ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান এবং এ সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে ইনশাআল্লাহ। অতীতে বহু বার ফিলিস্তিনের মজলুম মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি বোমা বর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। টিআরটি ওয়ার্ল্ড-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গাজার ২ হাজার ৭০০ পরিবারের কেউ বেঁচে নেই; সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইসরাইলি বোমাবর্ষণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার আট শত কোটি ডলারে। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’

তিনি আরও বলেন, মানবতার দুশমন ইসরাইল গাজায় খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ইসরাইল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেই লক্ষ্যে গাজা থেকে জোরপূর্বক প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছে। গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরাইলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ, যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি। গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এ ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি-সহ শান্তিকামী বিশ্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

আমীরে জামায়াত আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দল-মত-নির্বিশেষে সকল মানুষের সমর্থন রয়েছে। ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের দোয়া, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সমর্থন রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই ফিলিস্তিন একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে বিশ্বের বুকে দাঁড়াক। কারণ এই জায়গাটা হচ্ছে অসংখ্য নবী-পয়গাম্বরদের স্মৃতি-বিজড়িত স্থান। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাস এই মাটিতেই রয়েছে। ফিলিস্তিনের বঞ্চিত, ক্ষতিগ্রস্ত ভাই-বোনদের প্রতি আন্তরিক ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। ফিলিস্তিনে যারা নিহত হয়েছেন আল্লাহ তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন এবং আহতদের মহান রব সুস্থতার নিয়ামাত দান করুন।”

এসময় ফিলিস্তিনের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর মি. ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা উপত্যকার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের অর্থবহ ভালবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমি ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সেই সঙ্গে আমি ফিলিস্তিনের এ্যাম্বাসেডর হিসেবে আশা প্রকাশ করছি যে, ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশ বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অর্থবহ সমর্থন, সাহায্য, সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”

আমীরে জামায়াতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের আমীর জনাব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।