০৪:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এম. মসিউর রহমান মিলন:

আপাতত তেহরানের বিজয় স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইসরাইলিরা

  • প্রকাশিত ০৬:২৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • ১২ বার দেখা হয়েছে

ইরান-ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা পাল্টা হামলায় আপাতত তেহরানের বিজয় হয়েছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল সহ তেহরানের মুখপত্র। স্বয়ং পেন্টাগনের একটা গোয়েন্দা রিপোর্টও এমনটি মতামত দিয়েছে বলে গণমাধ্যমের সূত্রগুলো বলছে। তাছাড়াও তেহরান দাবি করছে সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমানবিক স্থাপনার কোন ক্ষতি করতে পারেনি। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্য হয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এসব ঘটনায় ইরানের জনগণ তেহরানের রাস্তায় বিরাট গনসমাবেশ সহ বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে। এদিকে ইসরাইলের জনগণ যুদ্ধ বিরতির আনন্দে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে। তেলআবিবের রাস্তা-বিপনী বিতান, অফিস পাড়া সহ সর্বত্রই নাগরিকদের কর্মক্ষেত্রে উল্লোসিত বিচরণ করতে দেখা গেছে।
সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরেল ধরাসায়ী হয়ে এবার তারা নিরস্ত্র গাজাবাসীর উপর হামলা চালাচ্ছে। ইসরাইলী হামলায় ত্রান প্রত্যাশী গাজাবাসী গত ২ দিন অনবরত আহত হয়ে আসছে। গাজাবাসীর আহাজারীতে উপত্যকার আকাশ ভারী হয়ে আসলেও মন গলেনি ইসরেলের। গত কয়েকদিনের হামলায় বহু বাড়ি-ঘর ধ্বংস সহ ব্যাপক প্রাণহানী ঘটেছে। ত্রানসহ চিকিৎসা সেবা প্রার্থী গাজাবাসী অনবরত হামলার শিকার হয়ে আসছে। এদের মধ্যে নারী-শিশুর সংখ্যা আশংকাজনক। এ ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং নিজেই এবার ইরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের প্রশংসা করলেন। তার সাথে তিনি ইরানের রণনীতিরও প্রশংসা করলেন। তাছাড়া ইসরেলের উপর সাম্প্রতিক ইরানের পারমানবিক হামলায় ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১.৪৩ বিলিয়ন ডলার বলে জানা গেছে। এসব হামলার শেষের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাতারস্থ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান একদফা হামলা চালানোর পরপরই পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। এতে কাতারের নাগরিকরা সহ অভিবাসীরা ভয়াবহ ভাবে আতংকিত হয়। এই আতংকে কাতারের কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে যোগাযোগ করলেই ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। আর ট্রাম্পের যুদ্ধ কৌশলে অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন আসে। সেই হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন গোপন কুটনীতিতে মেতেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অতি গোপনে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র দেশগুলোর মাধ্যমে ইরানের সাথে কুটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান তার দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির কার্যক্রম বদ্ধ রাখুক। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। তবে এ সহায়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সরাসরি দেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে ইরানকে এ সহায়তা দেবে। কিন্তু তেহরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন চুক্তি গ্রাহ্য করছে না। এতে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ধামামা ফের বেজে উঠলো বলে। এসব ঘটনায় ইসরাইলের সাধারণ মানুষ প্রাণভয়ে পাশের দেশগুলোতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা পাশের দেশে স্থায়ী বসবাসের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে পাশের দেশ সাইপ্রাসে ইসরাইলিরা হু হু করে ঢুকছে। এতে পাশের রাষ্ট্রগুলো বিব্রত হচ্ছে। এদিকে পাকিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়া, সৌদিআরব সহ বহু মুসলিম দেশের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে।
ইতিমধ্যে ইসরাইল গাজা, লেবানন সর্বত্রই ত্রান প্রত্যাশী ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। এতে বিব্রত জাতিসংঘ সহ মানবিক সংস্থাগুলো। এদিকে পরিস্থিতি আরো বেগতিক হলে ইরান হরমুজ প্রনালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এসব সামগ্রীক বিবেচনায় আপাতত তেহরানকে তুরুপের তাস বলে ধরে নেয়া যায়।

Tag :
জনপ্রিয়

আপাতত তেহরানের বিজয় স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইসরাইলিরা

এম. মসিউর রহমান মিলন:

আপাতত তেহরানের বিজয় স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইসরাইলিরা

প্রকাশিত ০৬:২৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা পাল্টা হামলায় আপাতত তেহরানের বিজয় হয়েছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল সহ তেহরানের মুখপত্র। স্বয়ং পেন্টাগনের একটা গোয়েন্দা রিপোর্টও এমনটি মতামত দিয়েছে বলে গণমাধ্যমের সূত্রগুলো বলছে। তাছাড়াও তেহরান দাবি করছে সর্বশেষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমানবিক স্থাপনার কোন ক্ষতি করতে পারেনি। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্য হয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে। এসব ঘটনায় ইরানের জনগণ তেহরানের রাস্তায় বিরাট গনসমাবেশ সহ বিজয় উল্লাস করতে দেখা গেছে। এদিকে ইসরাইলের জনগণ যুদ্ধ বিরতির আনন্দে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে। তেলআবিবের রাস্তা-বিপনী বিতান, অফিস পাড়া সহ সর্বত্রই নাগরিকদের কর্মক্ষেত্রে উল্লোসিত বিচরণ করতে দেখা গেছে।
সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরেল ধরাসায়ী হয়ে এবার তারা নিরস্ত্র গাজাবাসীর উপর হামলা চালাচ্ছে। ইসরাইলী হামলায় ত্রান প্রত্যাশী গাজাবাসী গত ২ দিন অনবরত আহত হয়ে আসছে। গাজাবাসীর আহাজারীতে উপত্যকার আকাশ ভারী হয়ে আসলেও মন গলেনি ইসরেলের। গত কয়েকদিনের হামলায় বহু বাড়ি-ঘর ধ্বংস সহ ব্যাপক প্রাণহানী ঘটেছে। ত্রানসহ চিকিৎসা সেবা প্রার্থী গাজাবাসী অনবরত হামলার শিকার হয়ে আসছে। এদের মধ্যে নারী-শিশুর সংখ্যা আশংকাজনক। এ ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং নিজেই এবার ইরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের প্রশংসা করলেন। তার সাথে তিনি ইরানের রণনীতিরও প্রশংসা করলেন। তাছাড়া ইসরেলের উপর সাম্প্রতিক ইরানের পারমানবিক হামলায় ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১.৪৩ বিলিয়ন ডলার বলে জানা গেছে। এসব হামলার শেষের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাতারস্থ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরান একদফা হামলা চালানোর পরপরই পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। এতে কাতারের নাগরিকরা সহ অভিবাসীরা ভয়াবহ ভাবে আতংকিত হয়। এই আতংকে কাতারের কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে যোগাযোগ করলেই ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। আর ট্রাম্পের যুদ্ধ কৌশলে অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন আসে। সেই হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন গোপন কুটনীতিতে মেতেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অতি গোপনে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্র দেশগুলোর মাধ্যমে ইরানের সাথে কুটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান তার দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির কার্যক্রম বদ্ধ রাখুক। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। তবে এ সহায়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে সরাসরি দেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ বাণিজ্যিক সুবিধা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে ইরানকে এ সহায়তা দেবে। কিন্তু তেহরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন চুক্তি গ্রাহ্য করছে না। এতে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে ধামামা ফের বেজে উঠলো বলে। এসব ঘটনায় ইসরাইলের সাধারণ মানুষ প্রাণভয়ে পাশের দেশগুলোতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা পাশের দেশে স্থায়ী বসবাসের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে পাশের দেশ সাইপ্রাসে ইসরাইলিরা হু হু করে ঢুকছে। এতে পাশের রাষ্ট্রগুলো বিব্রত হচ্ছে। এদিকে পাকিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়া, সৌদিআরব সহ বহু মুসলিম দেশের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে।
ইতিমধ্যে ইসরাইল গাজা, লেবানন সর্বত্রই ত্রান প্রত্যাশী ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। এতে বিব্রত জাতিসংঘ সহ মানবিক সংস্থাগুলো। এদিকে পরিস্থিতি আরো বেগতিক হলে ইরান হরমুজ প্রনালী বন্ধ করে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এসব সামগ্রীক বিবেচনায় আপাতত তেহরানকে তুরুপের তাস বলে ধরে নেয়া যায়।