সমতলের আদিবাসীরা নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত । ভূমি দখলদাররা আদিবাসীদের জোরর্পূবক জমি -জমা বসতভিটা দখল করছে। মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই । শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমশিন না থাকায় তারা ভূমি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে । পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন রাষ্ট্র অঙ্গীকার করলেও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি । তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে আদিবাসীদের অধিকার স্বীকৃতি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী ৯ আগস্ট আর্ন্তজাতিক আদিবাসী দিবস। জাতিসংঘের আদিবাসী সংক্রান্ত কার্য সম্পাদনকারী একটি দলের প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৮২ সাল থেকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হচ্ছে।এ দিবসটি শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার দিবস নয়। দিবসটি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠর দিবস । আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সামাজিক অঙ্গীকার, রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি ছাড়া সম্ভব নয়। ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য হলো “আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ গঠনে বুদ্ধিমাত্তার স্বার্থক প্রয়োগ”।
বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শহীদ আলফ্রেড সরনের বোন রেবেকা সরনে, আদিবাসী নেতা শ্রীকান্ত মাহাতো এবং উপদেষ্টাবৃন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, আদিবাসীরা আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছিদ্য অংশ। তাদের ইতিহাস, জ্ঞান ও পবিবেশগত জ্ঞান, উদ্ভাবনী শক্তি, নেতৃত্বগুণ, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ জ্ঞানের ধারাকে ভবিষ্যতে ধারালো করে তুলতে পারে কিন্তু সঙ্গে থাকতে হবে সেই জনগোষ্ঠীর অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ, সুরক্ষা ও সম্মান। দেশের প্রায় ৫০ লক্ষ আদিবাসী জনগোষ্ঠী সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করেন। তাদের রয়েছে ৪৪টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী ও ৩৪টি বিভিন্ন ভাষাসহ নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আচার ব্যবহার, পোশাক পবিচ্ছদ ও ধর্মীয় বিশ্বাস। আদিবাসীদের সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সাঁওতাল বিদ্রোহি, টংক, তেভাগা, মহান মুক্তযিুদ্ধ, ২৪’র গণঅভ্যূত্থানে আদিবাসীরা বীরত্বর্পূণ ভূমিকা রেখেছে কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় ক্রমাগত বণ্টন বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।বৈষম্য কমিয়ে আদিবাসীদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে বাংলাদশে আদিবাসী ইউনিয়ন আদিবাসীদের অধকিার প্রতিষ্ঠায় দাবিসমূহ উত্থাপন করছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সংবিধানের ৬(২) ধারা বাতিল করে, আদিবাসীদের অধিকাররের স্বীকৃতি দিয়ে পুর্নলিখন করা। বাংলাদেশ সরকারকে আইএলও ১৬৯ সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করা। আদিবাসীদের ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি কৃষ্টি ঐতহ্যি রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমশিন গঠন এবং পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দবিস উপলক্ষে আদিবাসী ইউনিয়ন ঢাকাসহ দেশব্যাপী সভা, সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদান, অধিকার সম্বলিত পোস্টার এবং লিফলেট বিতরণ এবং ১৫ দফা দাবি আদায়ের সংগ্রাম জোরদার করার মাধ্যমে আদিবাসী দিবস পালন করবে।
(খবর সংবাদ বজ্ঞিপ্তি’র)