০২:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক:

অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষিকার পদত্যাগ দাবি

  • প্রকাশিত ০২:১১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • ৩৫ বার দেখা হয়েছে

মীরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের সংগীত শিক্ষিকা বিপাশা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ছবি নগ্ন করে কুরুচি মন্তব্য লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। একইসাথে, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, শিক্ষার পরিবেশ নষ্টসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগে ওই শিক্ষিকার পদত্যাদের দাবিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানাকে অবরোধ করে আন্দোলন করেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিপাশা ইয়াসমিনের পদত্যাগসহ চলমান সমস্যার সুষ্ট সমাধান চেয়ে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে, মিরপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিবেশ শান্ত করেন। তারা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই বিপাশা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে শিক্ষার্থীদের জানান।

এ বিষয়ে অভিভাবকরা জানান, চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক অসদুপায় ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, সংগীত শিক্ষিকা বিপাশা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে-বাহিরে বিশৃঙ্খলাসহ সহিংসতা সৃষ্টি করছেন। বিভিন্ন সময় তাদের সন্তানদের তার (বিপাশা) পক্ষে আন্দোলনসহ কাজ করার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। মেয়েদের ছবি অশ্লীল করে খারাপ ক্যাপশন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তারা বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং অবিভাবকদের সম্মান হুমকির মুখে ফেলছেন এই শিক্ষিকা। অনেকক্ষেত্রে, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নিপীড়নের ঘটনাও ঘটিয়েছেন তিনি। যার প্রমাণ থাকার পরও বিভিন্ন সময় আমরা এবং শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলেও কোন সুষ্ঠু সমাধান হচ্ছে না। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।

এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, ২৪ এর ৫ সেপ্টেম্বর বিপাশা ইয়াসমিন ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে সহিংসতা চালায়। প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে আক্রমণের চেষ্টা করেন। সেই সময় বিপাশার সহযোগী সাজেদা খাতুন এক অভিভাবককে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে বিপাশা মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে সেই অভিভাবককে বেধড়ক মারধর করেন। সেই অভিভাবক উকিল নোটিশ পাঠালে বিপাশা তাঁকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে।

শিক্ষকরা দাবি করেন, বিপাশা ইয়াসমিন অভিভাবকদের অজ্ঞাতসারে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে নিয়ে গিয়ে থানায় হাজির করেন এবং নিরীহ পুরুষ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করান। এর ফলে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিই নয়, নির্দোষ শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, বিপাশা জুলাই অভ্যুত্থানের আগে ছিল আওয়ামী লীগ নেতার ইলিয়াস মোল্লার কাছের বর্তমানে নিজেই বিএনপির নেত্রী বনে গেছেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীর জন্য বিপজ্জনক। যে সকল ছাত্রীরা তার কাছে নাচ-গান শেখে, তাদের কুপরামর্শ দিয়ে থাকেন। যারফলে চারিত্রিকভাবে বিপথগামী হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। একইসাথে, যারা তার কাছে নাচ-গান শিখতে রাজি হন না তাদেরকে নানা ভাবে ভীতি প্রদর্শন এবং হেনস্তার শিকার করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের বন্ধু ইংরেজি ভার্সনের ছাত্রী। তার ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীলভাবে ছড়িয়ে দিন বিপাশা ম্যাডাম। যারফলে, আমাদের ওই বন্ধু অনেকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। যে কাজ করছেন তিনি তার শাস্তি দাবি করি আমরা। একইসাথে, ওই বিপাশাকে আমরা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখতে চাইনা, যদি তিনি প্রতিষ্ঠানে ঢুকেন সেক্ষেত্রে ক্লাশ পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা।

প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানার বলেন, যে ক্রিয়া-কলাপ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রতিষ্ঠানের কমিটির জরুরি মিটিং আয়োজন করে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো্। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সচেতন রয়েছি আমরা। একইসাথে, বিষয়টি মিরপুরের বৈষম্যবিরুধী ছাত্র নেতারা অবগত রয়েছে তারাও আমাদের জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক সাহায্য করবে।

Tag :
জনপ্রিয়

রাজউকের মোবাইল কোর্টের সংবাদ সংগ্রহ করায় গনমাধ্যম কর্মীকে আঘাত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষিকার পদত্যাগ দাবি

প্রকাশিত ০২:১১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

মীরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের সংগীত শিক্ষিকা বিপাশা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের ছবি নগ্ন করে কুরুচি মন্তব্য লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে। একইসাথে, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, শিক্ষার পরিবেশ নষ্টসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগে ওই শিক্ষিকার পদত্যাদের দাবিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানাকে অবরোধ করে আন্দোলন করেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বিপাশা ইয়াসমিনের পদত্যাগসহ চলমান সমস্যার সুষ্ট সমাধান চেয়ে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে, মিরপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিবেশ শান্ত করেন। তারা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতির সঙ্গে কথা বলে দ্রুতই বিপাশা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে শিক্ষার্থীদের জানান।

এ বিষয়ে অভিভাবকরা জানান, চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক অসদুপায় ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, সংগীত শিক্ষিকা বিপাশা ইয়াসমিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে-বাহিরে বিশৃঙ্খলাসহ সহিংসতা সৃষ্টি করছেন। বিভিন্ন সময় তাদের সন্তানদের তার (বিপাশা) পক্ষে আন্দোলনসহ কাজ করার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। মেয়েদের ছবি অশ্লীল করে খারাপ ক্যাপশন ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তারা বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং অবিভাবকদের সম্মান হুমকির মুখে ফেলছেন এই শিক্ষিকা। অনেকক্ষেত্রে, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নিপীড়নের ঘটনাও ঘটিয়েছেন তিনি। যার প্রমাণ থাকার পরও বিভিন্ন সময় আমরা এবং শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলেও কোন সুষ্ঠু সমাধান হচ্ছে না। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক।

এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, ২৪ এর ৫ সেপ্টেম্বর বিপাশা ইয়াসমিন ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে সহিংসতা চালায়। প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে আক্রমণের চেষ্টা করেন। সেই সময় বিপাশার সহযোগী সাজেদা খাতুন এক অভিভাবককে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে বিপাশা মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে সেই অভিভাবককে বেধড়ক মারধর করেন। সেই অভিভাবক উকিল নোটিশ পাঠালে বিপাশা তাঁকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে।

শিক্ষকরা দাবি করেন, বিপাশা ইয়াসমিন অভিভাবকদের অজ্ঞাতসারে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে নিয়ে গিয়ে থানায় হাজির করেন এবং নিরীহ পুরুষ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করান। এর ফলে শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিই নয়, নির্দোষ শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, বিপাশা জুলাই অভ্যুত্থানের আগে ছিল আওয়ামী লীগ নেতার ইলিয়াস মোল্লার কাছের বর্তমানে নিজেই বিএনপির নেত্রী বনে গেছেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীর জন্য বিপজ্জনক। যে সকল ছাত্রীরা তার কাছে নাচ-গান শেখে, তাদের কুপরামর্শ দিয়ে থাকেন। যারফলে চারিত্রিকভাবে বিপথগামী হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। একইসাথে, যারা তার কাছে নাচ-গান শিখতে রাজি হন না তাদেরকে নানা ভাবে ভীতি প্রদর্শন এবং হেনস্তার শিকার করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের বন্ধু ইংরেজি ভার্সনের ছাত্রী। তার ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীলভাবে ছড়িয়ে দিন বিপাশা ম্যাডাম। যারফলে, আমাদের ওই বন্ধু অনেকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করে। যে কাজ করছেন তিনি তার শাস্তি দাবি করি আমরা। একইসাথে, ওই বিপাশাকে আমরা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখতে চাইনা, যদি তিনি প্রতিষ্ঠানে ঢুকেন সেক্ষেত্রে ক্লাশ পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা।

প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানার বলেন, যে ক্রিয়া-কলাপ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রতিষ্ঠানের কমিটির জরুরি মিটিং আয়োজন করে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো্। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সচেতন রয়েছি আমরা। একইসাথে, বিষয়টি মিরপুরের বৈষম্যবিরুধী ছাত্র নেতারা অবগত রয়েছে তারাও আমাদের জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক সাহায্য করবে।